চিন্তাবিশ্ব:২ || চৈতন্য ফকির
চিন্তাবিশ্ব:২
চৈতন্য ফকির
ফেইসবুক হলো বিউটিপার্লার।এখানে বিউটিরা সাজুগুজু করে প্রতি মুহূর্তে সেল্ফি পোস্টানো আর পটি দেওয়া চটি পরার নিয়ম কৌশল শেখানোর ওপেন ইউনিভার্সিটি। শেখার অনেক কিছু আছে। আবার মানসিক অবসাদজনিত পেশেন্টদের পাল্লায় পড়লে আপনিও আমিও আমরা সকলেই অসুস্থ হওয়ার সহজ পাঠের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হলো ফেসবুক।
সবুজ বাতিটি জ্বলছে অথচ তিনি ফেইসবুকে থাকেন না বলেন অকপটে।সবুজ বাতিটি লাভডুব লাভডুব করছে পরস্পরের পিয়ারের মানুষেরা ইনবক্সে রাত বিরতে ভিডিও চেটিং করছেন অথচ অকপটে মিথ্যা বলার ওপেন ইউনিভার্সিটি হলো ফেইসবুক।
আমাদের পরিবার পরকীয়ায় অবিশ্বাস মশারীর তল অব্দি নিয়ে এসছে ফেইসবুক নামক সামাজিক মাধ্যম। অথচ ড্রাগসের নেশার থেকে আরো শতগুণে বেশী নেশাতুর করছে এই মেধা মনন বিশ্বাস ও সততা কেড়ে নেওয়া ফেইসবুক নামক সামাজিক মাধ্যম।
ফেইসবুক আসার আগেও চিঠি চালাচালি হতো শোক সুখ প্রেম বিরহ আবেগ প্রকাশে।এখন পটি দেওয়া থেকে চটি পরার বিজ্ঞাপন প্রকাশের ওপেন ইউনিভার্সিটি হলো ফেইসবুক।
দুটো পরস্পর সুন্দর সম্পর্ক নষ্ট করারও সহজ পাঠ দিতে বদ্ধ পরিকর এই মাধ্যম।
অথচ বিজ্ঞান অভিশাপ নয় বিজ্ঞানের সুফলকে কাজে লাগিয়ে কেউ কেউ পজিটিভ মাইন্ডসেট নিয়ে অনেক কাজও করছেন।
ফেইসবুকে আমরা এই সময়ের দেওয়াল পত্রিকা বলতে পারি।এই মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক কবি লেখক শিল্পীরা সহজে পাঠক শ্রোতাদের নিকট পৌঁছাতে পারছেন।আবার অসৎ লোকের দ্বিচারতিরও খোলা পৃষ্ঠা হলো ফেইসবুক।
সহজে কাউকে পিঠ চাপড়ানো সহজ জায়গা হলো জুকারের ৫২ তাসের পর অবিশিষ্ট খেলার তাসটি হলো ফেইসবুক। আবার সত্যি সত্যি সহৎ ভাবনায়ও এই মাধ্যম কাজে লাগিয়ে কেউ কেউ কাজ করছেন।
নিজের বিজ্ঞাপন প্রকাশের ওপেন ইউনিভার্সিটি হলো ফেইসবুক। এই সময়ের দাবী হলো নিজেকে বিজ্ঞাপিত করা।কিন্তু অন্যকে সহজে খাটের নিচে ফেলে দেবারও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যাবে এই ফেইসবুক তা হয়তো জোকারও ভাবেননি।আকচার এসবও ঘটে।কারো কারো জীবনে সফলতা নিয়ে আসে ফেইসবুক। কারো কারো জীবন তচনচ করতেও ফেইসবুক এক সহজ জায়গা। সুতরাং আগামী কয়েক বছর পর হয়তো এফ বর্ণটির মতোই আমাদের মেরুদণ্ড দণ্ডহীন হয়ে গেলে আমরা আর অবাক হবো না তখন।আমাদের কাজের প্রেরণা আর থাকবে না।আমাদের মেধা বিলীন হয়ে গেলেও আর কেউ কারো জন্য সহানুভূতি প্রদর্শন করার থাকবো না।পরস্পর আমরা পরস্পরের নিকট নতজানু আর নয়।আমরা একজন আরেকজনকে লাভজনক খেলনা মনে করছি।আমি আমার জন্য অন্যকে যত আঘাতই করতে হয় করবো তাতে বিবেক আর সচল থাকবে না।অথচ আমরা আর অবাকও হবো না।
সময়ের ডহর থেকে উত্তরণের মন্ত্র আপাততঃ জানা নেই। অসুস্থ সময় থেকে পরিত্রাণ কী কেউ হয়তো জানিও না।
২১:০৪:২০২৩
সকাল:০৭:৪০মি
আগরতলা।
0 Comments