কবি দিলওয়ার ও আমি||গোবিন্দ ধর
কবি দিলওয়ার ও আমি
গোবিন্দ ধর
কবি দিলয়ারের সাথে আমার করিমগঞ্জ দেখা ও এক রাত বসবাস হয়েছিল ১৯৯৮সাল নাগদ।তখন কবি ও একাবলি সম্পাদক দিলীপ বিশ্বাস,কবি ও শরিক সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরীর উদ্যোগে করিমগঞ্জ লিটল ম্যাগাজিন মেলা হয়েছিলো।তাতে স্রোত যোগ দিয়েছিলো।রাতে আড্ডায় দিলওয়ারের ছোট ছেলে ইবনে দিলওয়ার ও গোবিন্দ পাল আর সৌমিত্র দেব বাংলাদেশের ওরাও ছিলেন।সৌমিত্রের একটি কবিতা আছে,কবিতার শিরোনাম:
অনন্ত বৈঠক শেষে তোমার উত্তর
সৌমিত্র দেব
না।
পৃথিবীর সব থেকে ছোট কবিতা।মনে ধরেছিলো।সৌমিত্র একটি বইও ওর আমাকে দিয়েছিলো।মনে নেই নাম এখন।কবিতাগুলো হৃদয় ছুঁয়ে ছিলো।
সেদিন মেলায় অজপা চৌধুরী গান গেয়েছিলো।আজও কানে লেগে আছে।
ছোট একটি পানসি তরী।
বেলা বয়ে যায়,
ছোট্ট মোদের পানসি তরী
সঙ্গে কে কে যাবি আয়।
দোলে হার বকুল যুথী দিয়ে গাঁথা সে,
রেশমি পাল উড়ছে মধুর মধুর বাতাসে,
হেলছে তরী দুলছে তরী ভেসে যাচ্ছে দরিয়ায়।
যাচ্ছে সব নতুন প্রেমিক নতুন প্রেমে ভোর,
মুখে সব হাসির রেখা চোখে ঘুমের ঘোর।
বাঁশির ধ্বনি হাসির ধ্বনি উড়ছে ফোয়ারায়।
পশ্চিমে জ্বলছে আকাশ সাঁঝের দহনে,
পূর্বে ওই বুনছে চন্দ্র মধুর স্বপনে।
করছে নদী কুলুধ্ব্নি বলছে মৃদু মধুর বায়।
- দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
কী দরাজ গলা।গায়কী।সব মিলে আজও স্মৃতি কাতর হয়ে পড়ি।অজপা কবি বিশ্বজিৎদারর মেয়ে।
সেদিন রাতে কবি দিলওয়ার আমায় নিজ হাতে ডাইরী লিখে একটি কবিতা দেন স্রোতের জন্য।কবিতাটি স্রোতে ছাপা হয়।কবিতাটি ছিলো :
ভালোবাসা নামের অচিন পাখিটি।
ইবনে দিলওয়ার কয়েকটি বই দিয়েছিলো।তার মাঝে কবি দিলওয়ার -কে নিয়ে স্মারক গ্রন্থ একটি।
কবি দিলওয়ার সান্নিধ্য তা-ই।এক আলোকিত মানুষ।তাঁর সাথে বসলে আলোকিত হতে হয়।তিনি এমনি প্রদীপ।মনের অন্ধকার দূর করে জ্বালিয়ে দিতে পারেন বাতিঘর।এই অসহিষ্ণুতার সময়ে তিনি ছিলেন একজন সহিষ্ণুতার সেতুবন্ধন। তাঁর কাছে জাত পাত নয় মানুষের চেয়ে আর কিছুই মহীরুহ নয়।তিনি ভালোবাসার এক সাগর।করিমগঞ্জ সেই রাতে আমার এমন উপলব্ধি।
আজ এসব মনে পড়ে গেলো।
শুনেছি কবি দিলওয়ার নেই।
কবি গোবিন্দ পাল নেই।
ইবনে দিলওয়ারের বড় ভাইও মানসিক ভাবে সুস্থ নয়।
অজপাও এক সময় মানসিক ভাবে সুস্থ থাকলো না।
সবই ডিস অর্ডার।
তাহলে কবিতা কী কোন সাইকোলজিক্যাল ডিস অর্ডার?
১৭:০৭:২০১৮
0 Comments