লিটল ম্যাগাজিন ভাস্কর :আনন্দ বেদনার তেত্রিশ বছর 

গোবিন্দ ধর 

পর্ব:১
কাল মধ্যরাতে এসে উঠেছি সিলেট সার্কিট হাউজে। আজ সকালের ছবি। সুরমার তীরে এই সুদৃশ্য সার্কিট হাউজ। তার সমুখে বাগান, বাগানের সমুখে মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক ভাস্কর্য। আমি যেখানে আছি সে ভবনটির টানা বারান্দায় এসে দাঁড়ালে সুরমার উপরে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ক্বীন ব্রিজ চোখে পড়ে। লোহার তৈরি সেতুটির রঙ লাল আর সুরমার পানিকে দূর থেকে দেখায় সবুজ। লাল-সবুজের বাংলাদেশে সিলেট এক ভিন্ন ভূগোল। এখানে এসেছি কবি পুলিন রায় সম্পাদিত লিটল ম্যাগাজিন 'ভাস্কর'-এর ৩৩ বছর পূর্তি উৎসবে। আজই সে উৎসব!।

পর্ব:২
সকালে আজ ৩রা মার্চ ২০২৩ চা আড্ডা হলো।কবি নিবেদিতা আচার্য,সমান্তরাল সম্পাদক পার্থ  আচার্য,কামরুল হাসান,কবি ও কবিতা ক্যাম্পাস সম্পাদক অলোক বিশ্বাস। সুরমা নদীর পাড়ে বসে ক্বীন ব্রীজ সংযোগস্থলে সকালের চা আড্ডা। ফুরফুরে বসন্ত বাতাস আর নদীতে ডিঙি নৌকা চলাচলের দৃশ্যে মন আনন্দে চা আড্ডা হলো।

পর্ব:৩
লিটল ম্যাগাজিন ভাস্করের আনন্দ-গৌরবের তেত্রিশ বছর উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসব। অনুষ্ঠানে অনেকের সাথে আমাকেও সম্মানিত করা হয়।এই প্রাপ্তিতে আমি ঋদ্ধ ও গৌরবান্বিত।

কবি ও ভাস্কর লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদক পুলিন রায়

কবি ও ভাস্কর লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদক পুলিন রায় মহোদয়ের হাতে দক্ষিণারঞ্জন ধর স্মৃতি স্রোত সাহিত্য সম্মাননা :২০২৩ প্রদান করা হয়।তাঁর হাতে এই সম্মাননা প্রদান করতে কবি আসাদ মান্নান উপস্থিত থাকায় আমি আনন্দিত ও গৌরবান্বিত। সাথে ছিলেন ভীষণ আড্ডা প্রিয় কবি নিয়াজ উদ্দীন মহোদয়।

পর্ব:৪
(মাটিমাড়ানো মানুষ কবি ও ভাস্কর সম্পাদক 
পুলিন রায়) 

লিটল ম্যাগাজিনের জন্য জীবন উৎসর্গে রাখি।
মাটির নিকট ভূমিষ্ট থাকি।
আপনিও মাটিমানুষ।
মাটি ছেড়ে দিলে আমিও ফুড়ুৎ উড়ালসড়ক।
অথবা ক্নীনব্রীজের মতো দু'দিকেই বেঁকে যাই।

পর্ব:৫
ইতিহাস 

সিলটের প্রাচীন জৈন্তা রাজ্যের কিছু মুদ্রায় ছিলটি ভাষায় লিখা কিছু অক্ষর দেখা যাচ্ছে। এটি যে ছিলটি বর্ণমালায় লিখা তা নিশ্চিত হওয়া যায় শেষের দিকের ছিলটি (তাঁরা) যাকে ছিলটি ভাষায় লিখার সময় দাড়ি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আরো বেশী করে নিশ্চিত হওয়া যায় ছিলটি কিছু সংখ্যা দেখে। যেখানে ছিলটি সংখ্যায় লিখা আছে ১৫৬৯৬২
এতে প্রমাণ হয়ে যায় ছিলটি জাতির মাতৃভাষা কখনো বাংলা ভাষা ছিল না। ছিলটি প্রাচীণ কাল থেকে ছিলটি ভাষার চর্চা করছে। এতেই প্রমাণ হয়ে গেল সিলট রাজ্য কখনো বঙ্গের অংশ ছিল না।

পর্ব:৬
ক্বীনব্রীজের ইতিহাস

ক্বীনব্রীজ হলো বাংলাদেশের সিলেট শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সুরমা নদীর উপর স্থাপিত একটি লৌহ নির্মিত সেতু। এটি সিলেটের অন্যতম দর্শনীয় এবং ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে সবার কাছে পরিচিত। সুরমা নদীর ওপর নির্মিত এই স্থাপনাটি একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসাবেও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।[১] এই ব্রীজটিকে সিলেট শহরের "প্রবেশদ্বার" বলা হয়। ব্রীজটি ব্রিটিশ গভর্নর মাইকেল ক্বীন এর নামে নামকরণকৃত।

সিলেট শহরের কেন্দ্রস্থলে ক্বীন ব্রীজটি অবস্থিত। এর এক দিকে দক্ষিণ সুরমা ও অপর দিকে বন্দর বাজার। এই ব্রীজটি সিলেট শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সুরমা নদীর উপর অবস্থিত, এবং বাংলাদেশের রাজধানী, ঢাকা শহর থেকে ২৪৬ কিলোমিটার (১৫৩ মা) উত্তরপূর্ব দিকে অবস্থিত। সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে এই ব্রীজটি মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

পর্ব:৭
নামকরণ

গত শতকের তিরিশের দশকের দিকে আসাম প্রদেশের গভর্নর ছিলেন মাইকেল ক্বীন। তিনি সিলেট সফরে আসেন। তার স্মৃতিকে অম্লান করে রাখতেই এ ব্রীজটি নির্মাণ হয় এবং এই ব্রীজটির নামকরণ করা হয় গভর্নর মাইকেল ক্বীনের নামানুসারে, যিনি ১৯৩২ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত আসামের একজন ইংরেজ গভর্নর ছিলেন।

পর্ব:৮
তৈরির ইতিহাস

আসাম প্রদেশের গভর্নর মাইকেল ক্বীন সিলেট সফরে আসার জন্য সুরমা নদীতে ব্রীজ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কারণ তখন আসামের সাথে সিলেটের যোগাযোগের মাধ্যম ছিল ট্রেন। ফলে, রেলওয়ে বিভাগ ১৯৩৩ সালে সুরমা নদীর ওপর ব্রীজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এবং নির্মাণ শেষে ১৯৩৬ সালে ব্রীজটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়।
আব্দুল মজিদ কাপ্তান মিয়া,তৎকালীন আসাম সরকারের এক্সিকিউটিভ সদস্য রায় বাহাদুর প্রমোদ চন্দ্র দত্ত এবং শিক্ষামন্ত্রী আব্দুল হামিদ ব্রীজটি নির্মাণের ক্ষেত্রে অশেষ অবদান রাখেন।

পর্ব:৯
গঠন

ক্বীন ব্রীজ লোহা দিয়ে তৈরী। এর আকৃতি ধনুকের ছিলার মত বাঁকানো। এই ব্রীজটির দৈর্ঘ্য ১১৫০ ফুট এবং প্রস্থ ১৮ ফুট। ব্রীজ নির্মাণে তৎকালীন সময়ে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৫৬ লাখ টাকা।

পর্ব:১০
সংস্কার ও বর্তমান অবস্থা

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ডায়নামাইট দিয়ে ব্রীজের উত্তর পাশের একাংশ উড়িয়ে দেয়; যা স্বাধীনতার পর কাঠ ও বেইলী পার্টস দিয়ে মেরামত করা হয় ও হালকা যান চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হয়।
১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের সহযোগিতায় ব্রীজের বিধ্বস্ত অংশটি কংক্রীট দিয়ে পুনঃনির্মাণ করা হয়[৩] এবং তৎকালীন নৌ বাহিনীর প্রধান রিয়াল এডমিরাল এম এইচ খান সংস্কারকৃত ব্রীজটি উদ্বোধন করেন; ফলে পুনরায় এটি দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়।

পর্ব:১১
ভাস্করের নেপথ্য কারিগর পুলিনজায়া রঞ্জুরানী রায়

শ্রীমতি রঞ্জুরানী রায় একজন গৃহিণী।একজন শিক্ষক। একজন মা।একজন মানুষ।মঞ্চে তখন আমিও।কথা বললেন ভাস্কর পরিবারের সাথে তাঁর একাত্মের কথা।মন্ত্রমুগ্ধের মতো তন্ময় হয়ে আমিও শুনলাম।
আমার সৌভাগ্য তিনি আমায় ঢাকাইয়া বরই খাওয়ান।দাদা পুলিন রায় মহোদয়কে আপনাকে না জানিয়ে।তিনি হয়তো বুঝে গেছিলেন আমিও নেপথ্যের কারিগর। বাজিগর হতে চাই না।চাই নেপথ্যে থেকে সাহিত্যে শ্রম দেবো।আমি শ্রমিক হতে চাই।আমার সাধনা সাহিত্য শ্রমিকের।সকল কাজকেই আমি মহৎ ও মহান হিসেবে নিই।বসে থেকে নয়।নেপথ্যে থেকে কাজকে প্রভাবিত করতে পারলে নিজে কৃতার্থ মনে করি।রঞ্জুরানী রায় একজন শিক্ষক। কিন্তু ভাস্করের প্রতি তাঁর দায় কতটুকু হলে স্বেচ্ছায় অবসর নিতে পারেন।কবি পুলিন সম্পাদক পুলিন ও ছেলে পিয়াসও কবি তাদের দেখবাল করে সুগৃহিনী তিনিও।
একটি ছোট কাগজের দায়বদ্ধতার নিকট ভাস্কর পরিবার একাত্ম হয়ে বাংলা সাহিত্যের গতিমুখ বদলে দেবেন প্রত্যাশা রাখি।

আজ তিনদিন স্নান নাওয়া খাওয়া নেই। আমি হাসপাতালে। তবুও রঞ্জুরানীর কথা হঠাৎ পুলিন রায় মহোদয়ের পোস্ট থেকে খুব মনে করিয়ে দিলো।তাই তাঁর ভালোবাসায় আমিও ঋদ্ধ হয়েছি একটু সময়েই কথাগুলো বলতেই এটুকু বললাম। তিনি আমাকে কুল উপহার দিলেন।সেই সময় এই উপহার বৈকালিক ঝিমুনি কাটিয়ে আমি লোকগবেষক সুমনকুমার দাশের সাথে সময় দিচ্ছিলাম।
সিলেট এলে দেখা হবে।বাংলাদেশের মাটিতে আমার অসংখ্য পিতৃপুরুষেরা বংশানুক্রমিকভাবে শায়িত।আমিও বাংলাদেশের রক্তমাংসে গড়া শ্রীহট্টীয় সন্তান। 

পর্ব:১২
লিটল ম্যাগাজিন ‘ভাস্কর’-এর তেত্রিশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে নগরের জেলা পরিষদ মিলনায়তনে দিনব্যাপী এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কবি ও লেখক আসাদ মান্নান বলেন, ‘লিটল ম্যাগাজিন সাহিত্যের মূল ভিত্তি। বাংলা কবিতায় ছোট কাগজের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ভাস্কর সংস্কৃতমনা মানুষের রুচির কথা চিন্তা করে দীর্ঘ ৩৩ বছর ধরে সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। মানুষ হওয়ার সংগ্রাম, মানুষ হওয়ার অভিযাত্রায় খুব কম মানুষ থাকে, কিছু মানুষ আছে আলোর দিকে এগিয়ে যায়। সৃষ্টির লক্ষ্যে মানবতার দিকে লিটল ম্যাগাজিন করা খুবই কঠিন একটি ব্যাপার। কবিতার কোনো বৈপরীত্য নেই, কবিতা সার্বভৌম। ভাস্কর'র সম্পাদক পুলিন রায়ের দীর্ঘায়ু ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।’
সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ'র সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রশান্ত কুমার সাহা, কবি ও গবেষক প্রফেসর নৃপেন্দ্রলাল দাশ, কলকাতার 'সাংস্কৃতিক খবর'র সম্পাদক কবি কাজল চক্রবর্তী, কলকাতার 'কবিতাক্যাম্পাস'র সম্পাদক কবি অলোক বিশ্বাস, কলকাতার 'সমান্তরাল ভাবনা'র সম্পাদক কবি পার্থ আচার্য, ঢাকার 'লোক'র সম্পাদক কবি অনিকেত শামীম, ভারতের ত্রিপুরার 'স্রোত' সম্পাদক কবি গোবিন্দ ধর, চুয়াডাঙার কবি নজমুল হেলাল, কলকাতার বিশিষ্ট কবি নিবেদিতা আচার্য। 
সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রণবকান্তি দেবের সঞ্চালনায় শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন লিটল ম্যাগাজিন 'ভাস্কর'র সম্পাদক কবি পুলিন রায়। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব  শামসুল আলম সেলিম, মো. নিয়াজ উদ্দিন। 
দিনব্যাপী এই উৎসবে ছিল মোট ছয়টি পর্ব।  ‘ভাস্কর-এর  তেত্রিশ বছর: ছোটকাগজের সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা’ পর্বে সভাপতিত্ব করেন 'মোনাজেরা' সম্পাদক কবি ড. মোস্তাক আহমাদ দীন। মুখ্য আলোচক ছিলেন 'লোক' সম্পাদক কবি অনিকেত শামীম। 'ঘাস' সম্পাদক কবি নাজমুল হক নাজুর সঞ্চালনায় আলোচক ছিলেন কলকাতার কবিতাক্যাম্পাস'র সম্পাদক অলোক বিশ্বাস, কলকাতার 'সমান্তরাল ভাবনা'র সম্পাদক কবি পার্থ আচার্য, ত্রিপুরার 'স্রোত' সম্পাদক কবি গোবিন্দ ধর, 'অগ্নিশিখা' সম্পাদক কবি সুমন বনিক, 'বুনন' সম্পাদক কবি খালেদ-উদ-দীন, জয়পুরহাটের 'জট' সম্পাদক যতন দেবনাথ ও মৌলভীবাজারের 'কোরাস' সম্পাদক কবি মুজাহিদ আহমদ।
 'বাংলা কবিতায় লোকঐতিহ্য' পর্বে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট গীতিকবি শামসুল আলম সেলিম। মুখ্য আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট লোক গবেষক সুৃমনকুমার দাশ। আলোচক ছিলেন কলকাতার কবি কাজল চক্রবর্তী, ঢাকার কবি কামরুল হাসান, রাজশাহীর কবি মনজুর রহমান। ৪র্থ পর্বে ছিলো 'সাহিত্যের বিস্তীর্ণ আকাশ' আলোচনা। গল্পকার জামান মাহবুবের সভাপতিত্বে মুখ্য আলোচক ছিলেন ছড়াকার আব্দুল হামিদ মাহবুব। আলেচক ছিলেন রাজবাড়ীর কবি নেহাল আহমদ, ছড়াকার বিধুভূষণ ভট্টাচার্য, নাট্যব্যক্তিত্ব বাবুল আহমদ, গল্পকার মাধব রায়, কবি  জয়নাল আবেদীন শিবু।
৫ম পর্বে ছিলো 'স্বরচিত কবিতাপাঠ'। কবি প্রশান্ত কুমার সাহার সভাপতিত্বে মুখ্য আলোচক ছিলেন  প্রফেসর নৃপেন্দ্রলাল দাশ। কবি সঞ্জয় কুমার নাথের সঞ্চালনায় শতাধিক কবি কবিতা পাঠ করেন। অন্যান্যের মধ্যে কবিতাপাঠ করেন কবি আসাদ মান্নান, কবি আবুল ফতেহ ফাত্তাহ্, কবি কাজল চক্রবর্তী, কবি অলোক বিশ্বাস, কবি পার্থ আচার্য, কবি নজমুল হেলাল,  কবি নিবেদিতা আচার্য, কবি প্রশান্ত কুমার সাহা, মোহাম্মদ হোসাইন, নাজনীন সুলতানা, সাকিল মাসুদ, বীথি কুইন, অমিতা বর্দ্ধন, রসময় ভট্টাচার্য, সনজিৎ কান্তি দেব, অজিত রায় ভজন, রানাকুমার সিংহ, হরিপদ চন্দ, রওশন আরা বাঁশি, রাজেশ কান্তি দাশ, শহিদুল ইসলাম লিটন, মিহির মোহন, হিমাংশু রায় হিমেল, সন্তোষ রঞ্জন পাল, সামছুদ্দোহা ফজল সিদ্দিকী, সুপ্রিয় ব্যানার্জি শান্ত, সঞ্জয় রায়, জালাল জয়, মো: আলাউদ্দিন তালুকদার ৬ষ্ঠ পর্বে ছিলো সম্মাননা প্রদান। 
ভাস্কর সম্পাদক পুলিন রায়ের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য জনাব মুহিবুর রহমান মানিক, মাননীয় সংসদ সদস্য, সুনামগঞ্জ -৫। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি আসাদ মান্নান
কবি ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ্ 
কবি কাজল চক্রবর্তী, কলকাতা, ভারত
কবি অলোক বিশ্বাস, সম্পাদক কবিতা ক্যাম্পাস, কলকাতা, ভারত
কবি অর্ণব আশিক, ঢাকা।
কবি অনিকেত শামীম, সম্পাদক লোক, ঢাকা
কবি গোবিন্দ ধর, ত্রিপুরা, ভারত। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ভাস্কর -এর সম্পাদনা সহযোগী মো৷ নিয়াজ উদ্দীন। 
উৎসবের শুরুতে সকাল ১০টায় জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে এই আন্তর্জাতিক উৎসব উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এ উপলক্ষ্যে মো. নিয়াজ উদ্দীনের সম্পাদনায় 'সেই দীর্ঘ করতালি' নামের একটি উৎসবস্মারক প্রকাশিত হয়।

পর্ব:১৩
সম্মানিত হলেন গোবিন্দ ধর 

ভাস্কর-এর তেত্রিশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসবে ভারতের পাঁচ কবিকে ভাস্কর সম্মাননা প্রদান করা হয়। এরমধ্যে কলকাতার চারজন হলেন কবি কাজল চক্রবর্তী, কবি অলোক বিশ্বাস, কবি পার্থ আচার্য ও কবি নিবেদিতা আচার্য এবং অন্যজন ত্রিপুরার কবি ও স্রোত সম্পাদক গোবিন্দ ধর।

"চলো সৃষ্টির উপকূলে, ভেদবৃদ্ধি ভুলে"-এই শ্লোগানকে ধারণ করে অনুষ্ঠিত হল ভাস্কর লিটল ম্যাগাজিনের আনন্দ- গৌরবের তেত্রিশ বছর উদযাপন উপলক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসব। 
এই যেন দুই বাংলার কবিদের মিলনমেলা। ভৌগোলিক সীমানায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দুই-দেশ ভাগ করা সম্ভব হলেও, হৃদয়ের গ্রন্থিতে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া যায়-না। সেই সত্যটিই উদভাসিত হল; এই প্রাণের মিলনমেলায়। কলকাতা, ত্রিপুরা থেকে আগত কবি ও লিটলম্যাগ সম্পাদকগণ সেই মর্মমূলে ভালোবাসার জল সিঞ্চন করে গেলেন । বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কবিগণ  ছুটে এসেছিলেন এই মহতী উদযোগে। সারাদিন ব্যাপী এই সাহিত্য উৎসব আটটি পর্বে সাজানো। দ্বিতীয় পর্বে " ভাস্কর-এর তেত্রিশ বছর: ছোটোকাগজের সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা"।আলোচনায় অংশ নিয়ে আমিও  কিছুটা বলার চেষ্টা করি। কবি গবেষক ডক্টর মোস্তাক আহমাদ দীনের সভাপতিত্বে এই আলোচনার মুখ্য আলোচক ছিলেন কবি ও সম্পাদক অনিকেত শামীম। পঞ্চম পর্বে স্বরচিত কবিতাপাঠ করেন প্রায় অর্ধশত কবি। কবিতা পাঠ করেন কবি আসাদ মান্নান,কবি গবেষক ডক্টর  আবুল ফতেহ ফাত্তাহ,কবি কামরুল হাসান,  কবি সম্পাদক কাজল চক্রবর্তী, কবি সম্পাদক অলোক বিশ্বাস, কবি সম্পাদক পার্থ আচার্য ,কবি সম্পাদক  গোবিন্দ ধর, কবি নিবেদিতা আচার্য, কবি নাজমুল হেলাল,কবি পুলিন রায় প্রমুখ । এই পর্বে  আমিও একটি কবিতা পড়ি। সম্মাননা প্রদান পর্বে মাননীয় সাংসদ মুহিবুর রহমান মানিক উপস্থিত ছিলেন । সবশেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আগত সকলকে মুগ্ধ করে। একটি সফল সাহিত্য উৎসব আয়োজনের জন্য ভাস্কর সম্পাদক পুলিন রায়কে  নিশ্চয়ই অভিবাদন জানানো বেশি কিছু নয়! স্যালুট বন্ধুবর কবি পুলিন রায়।

0 Comments