আমাদের কথা||স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ইতিহাস
[29/05, 22:00] GOBINDA DHAR: আমাদের কথা
----------------------
স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত
ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ইতিহাস :তেত্রিশ
গোবিন্দ ধর
স্রোত আয়োজিত আন্তর্জাতিক লিটল ম্যাগাজিন উৎসব-২০১৬ স্থান:আগরতলা প্রেস ক্লাব।তারিখ:১১/০৯/২০১৬।সময়:সকাল:১০টা।সে সময় এই উৎসব উদযাপনের নানা খুঁটিনাটি বিষয় স্রোত গড়ে উঠার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।সেগুলোর আলোকপাত করছি।অনুষ্ঠানকে আর্থিক সহযোগিতা করেছিলেন সাহিত্য একাডেমি।
আমন্ত্রিত অতিথি
------------------------
★ত্রিপুরা
মানিক সরকার, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী
ভানুলাল সাহা,তৎকালীন তথ্য সংস্কৃতি মন্ত্রী
★কবি সাহিত্যিক
রামেশ্বর ভট্টাচার্য
শ্যামল ভট্টাচার্য
দেবব্রত দেব
★বাংলাদেশ
কমলেশ দাশগুপ্ত
অসীম সাহা
প্রবীর পাল
পুলককান্তি ধর
★কলকাতা
সন্দীপ দত্ত
তন্নয় বীর
মধুমঙ্গল বিশ্বাস
অনিমেশ মণ্ডল
*আসাম
সৌমেন ভারতীয়া
একটি লিটল ম্যাগাজিনের জন্মকথা এবং
দেও আর মনুর সন্তান
------------------------------------------------------------
আমি সৌভাগ্যবাণ এই দেওমনু সঙ্গম স্থানেই আমার কুঠীর।আমাদের কবিতাঘর।স্রোত পরিবার।স্রোত সাহিত্য পত্র।স্রোত প্রকাশনা।আমাদের অহংকার করার মতো
উদ্দীপ্ত সংগ্রহশালা।রাজ্যে পল্টুদার
রমাপ্রসাদ গবেষনাগারের পরই বর্তমানে একমাত্র বেসরকারী উদ্দোগ।পান্নালাল রায় যার ব্যাখ্যা করেছেন "স্মৃতি বিস্মৃতির :ত্রিপুরাকোষ "গ্রন্থে।এছাড়াও সাংসদ জীতেন্দ্র চৌধুরী মহোদয়
সংগ্রহশালার ২৩তম প্রতিষ্টা দিবস উদ্ যাপন উপলক্ষে উপস্থিত থেকে আমাদেরে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করেছেন ।তাছাড়া কবি অপাংশু দেবনাথ থেকে বাদ যাননি রাজ্য বহিঃরাজ্যের কবি সাহিত্যিকরা।এ পর্যায়ে আজ হারাধন বৈরাগী র পা পড়েও ধন্য আমরা।
বনতট সম্পাদক:হারাধন বৈরাগী
-----------------------------------------------
দেওমনুর সঙ্গম স্থল হালাইমুড়ায় আজ এক উল্লেখযোগ্য দিন হিসেবে চিহ্নিত হবে সাহিত্যের
ইতিহাসের পাতায় ।প্রথম সংখ্যার প্রকাশ বিষয়ে ফাইন্যাল পর্ব সমাপন হলো।লেখা নির্বাচন সমাপন হলো।প্রকাশ হবে বনতট।আন্তর্জাতিক লিটল ম্যাগাজিন উৎসব ২০১৬ অনুষ্টান মঞ্চে।
হারাধন বৈরাগীর প্রত্যাশা
-------------------------------------
আজ থেকে প্রায় ৩২৫ বছর আগে আসামের মহারাজ রূদ্রসিংহের দুই দূত কটকি রত্নকদলী ও অর্জুন দাশ আসাম থেকে খাসপুর হয়ে ত্রিপুরা মিজোরাম সিমান্ত ধরে তিপাইমুখ হয়ে দামছড়ার পথে উত্তর ত্রিপুরার কাঞ্চনপুরের লালজুরীর কোন এক স্হানে দেও নদীতে নেমে বাঁশের ভোরা করে মনুনদীর এই সঙ্গমের পথে মনুনদীর উজান বেয়ে লংতরাই আটারমুড়া বড়মুড়া বেয়ে উদয়পুর চলে যান।তিন মাস তাঁরা সেখানে থাকেন এবং প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার নিরিখে লেখেন ত্রিপুর দেশের কথা ত্রিপুরার ইতিহাসের প্রামান্য দলিল।তাই এই সঙ্গমে তাঁদের একটি স্মারক স্হাপিত হলে ইতিহাস কথা বলতো।
দেও ও মনুনদীর সঙ্গম, হালাইমুড়া,কুমারঘাট।ঊনকোটি ত্রিপুরা০৮/০৮/১৬
লিটল ম্যাগগুলো এখনো ত্রিপুরায় প্রকাশিত হয়
-------------------------------------------------------------------
ঝিনুক :বিমলেন্দ্র চক্রবর্তি
স্রোত:গোবিন্দ ধর
ভাষা সাহিত্য:কল্যাণব্রত চক্রবর্তী
উত্তরমেঘ :সম্পাদক মন্ডলীতে--নিধির রায়(C.E).রথীন্দ্র সিনহা,রূপন রায়,খোকন রায়,নৃপেশ আনন্দ দাস,নিখিল সরকার
পাথেয়:প্রথম সংখ্যাটি সম্পাদক ছিলেন বিশ্বজিৎ বন্দোপাধ্যায়,তারপর পনিবর্তন হয়েছে; ফোন:-9774384524-নাম্বারে পরিবর্তন জানা যাবে।
কবিতার খেয়া:সংগীতা দেওয়ানজী
মুখাবয়ব :দেবব্রত দেব
রূপান্তর :রাজীব মজুমদার
ফোটামাটি :খোকন সাহা
অশ্রুত:মৃণালকান্তি দেবনাথ
জলজ:সন্তোষ রায়
বজ্রকণ্ঠ:রাজেশচন্দ্র দেবনাথ
সময় সঙ্কেত :নবীন কিশোর রায়
শাব্দিক :সঞ্জীত বণিক
পূর্বমেঘ:রামেশ্বর ভট্টাচার্য
ক্ষুধার্থ সময় :সাত্বিক নন্দী
উন্মেষ :নির্মল দত্ত
কৃষ্টি:কবিতা ভট্টাচার্য
বিজয়া:সঞ্জীব দে
পাখিসব করে রব:পীযুষ কান্তি দাশ বিশ্বাস
নীলকন্ঠ :নিবারণ নাথ
বহ্নিশিখা :নিভা চৌধুরী
শব্দনীল:হৃষিকেশ নাথ
কুসুম :সুমিতা পাল ধর
কবিতাঘর:পদ্মশ্রী মজুমদার
অন্তঃকরণ:শুভেশ চৌধুরী
কুসুমিতা:সন্ধ্যা ভৌমিক
তৃনতট:পংকজ বণিক
অরণ্য :প্রিয়ঙ্কু চক্রবর্তী
প্রজন্ম চত্তর:জ্যোতির্ময় রায়
আকাশের ছাদ:সুমিতা ধর বসু ঠাকুর
অনার্য:রসরাজ নাথ
অন্যধারা:সুজিত দেব
মত্ত নীল ডানা :অরুপ দত্ত
ক্ষুধার্থ সময়:সাত্ত্বিক নন্দী
জলকনা :তাপস সাহা
উইন্ডোজ:খোকন সাহা
জলীয় সংবাদ:গোপেশ চক্রবর্তী
চিত্রপট:অপন দাস
জলকণা:তাপস সাহা
সৈকত:মানস পাল
একতারা:ধ্রুব চক্রবর্তী
চাঁদের পাহাড়:পার্থসারথী চক্রবর্তী
রসমালাই:অমলকান্তি চন্দ
অভিনয় ত্রিপুরা:লক্ষণকুমার ঘটক
অববাহিকা:পার্থসারথী চক্রবর্তী
ভগ্নাংশ:পম্পা দাস
ইপ্সা:প্রসেনজিৎ দাস
ত্রিপুরা কবিতা পত্র:তনুশ্রী সিংহ রায়
মনোলিপি:ধ্রুব চক্রবর্তী বাপী ভট্টাচার্য রাজীব মজুমদার অনুরাগ ভৌমিক
মোহনা:জয় কুমার দাস
ঊনকোটি:সন্ধ্যা দেবনাথ
ব্ল্যাকবোর্ড:সৌরভ চক্রবর্তী
মুক্তি:সমীর সিংহ রায়
অর্ধেক আকাশ:অপর্ণা নাথ
দীপ সাহিত্য:কৃষ্ণকুসুম পাল
শঙ্খচিল- প্রীতম ভট্টাচার্য
বাঁশিওয়ালা- রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ
ডানা- রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ
মাইলস্টোন -সুজিত চক্রবর্তী
কবিতা.com:সত্যজিৎ দত্ত
কিশোর জ্ঞানবীক্ষন:প্রীতম ভট্টাচার্য।
এটা এখনো নিয়মিত বের হচ্ছে তিন মাস অন্তর
আর অনিয়মিত
আড্ডা:
সোমবার:চারুকৃষ্ণ কর
ত্রিপুরা প্রবাহ:প্রলয়েন্দু চৌধুরী
ভাষা:বাসুদেব মালাকার
বুলি:নীলিমেষ পাল
মুক্তি:সঞ্জয় কুমার দাস
অক্টোপাস:মৈনাক মজুমদার
এছাড়া নাম না জানা লিটল ম্যাগাজিন গুলোর নাম এখানে মতামত সহকারে লিখে এই পোষ্ট সার্থক করে তুলতে সহযোগিতা করলে উপকৃত হবো।
আর যে সকল পত্রিকার সম্পাদকের নাম লিখতে পারিনি তাও দেবেন আশা করি।সাথে সকল পত্রিকার ঠিকানা দিয়েও সহযোগিতা করুন।
একটি দলিল হবে ত্রিপুরার লিটল ম্যাগাজিনের।আপনার সহযোগিতা খুবই কাজে লাগবে।
উদ্বোধক
-------------
সাহিত্য সমাজের দর্পন ...সাহিত্য এবং সাহিত্যিক তাদের জাত নেই , ধর্ম নেই , বর্ন নেই , সম্প্রদায় নেই .. আকাশের মত উন্মুক্ত .. সমুদ্রের জলের মত বাঁধন হারা ....
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার
সম্পাদকীয় আড্ডায় রামেশ্বর ভট্টাচার্য
-------------------------------------------------------
লিটল ম্যাগাজিন এ কি লেখা থাকা জরুরি, কিংবা কিভাবে এই ম্যাগকে মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে । বলছেন ত্রিপুরার বিশিষ্ট কবি এবং সম্পাদক রামেশ্বর ভট্টাচার্য পূর্বমেঘ ।
আমন্ত্রিত তরুণ কবিদের কবিতা পাঠ
----------------------------------------------------
অরিজিৎ দেব
অনিন্দিতা দেবনাথ
চিরশ্রী দেবনাথ
রিয়া দেবী
রীতা শিব
রাজু ভৌমিক
সঞ্জীব দে
রাজীব লোহানি
সাচিরাম মানিক
শুভজিৎ দেব
চন্দ্রিমা সরকার
হারাধন বৈরাগী
পায়েল দেব
উমা মজুমদার
সুপ্রিয়া দাস
সঞ্চিতা রাহা পাল
অপর্ণা নাথ
স্নিতা দেব সরকার
রতন আচার্য
নবীনকিশোর রায়
দীপান্বিতা সেনগুপ্ত
সন্ধ্যা ভৌমিক
স্বপন মজুমদার
বিদুৎ হোসেন
অভিককুমার দে
বিপুলকান্তি চক্রবর্তী
তরুণ কবিদের কবিতা পাঠের আসর
সঞ্চালনা করেন:সঙ্গিতা দেওয়ানজি।অনেকেই তখন সময়াভাবে কবিতা পাঠে অংশ নিতে পারেননি।
তরুণ কবির বক্তব্য
----------------------------
তমা বর্মণ
স্রোত পরিবারের ডাকে আমার স্বদেশে দু-এক দিনের জন্য ফেরার সুযোগ হয়েছিলো । এরজন্য স্রোত পরিবারকে আমি আমার হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা জানাই । আমার দেশের মানুষ যে কতোটা আতিথেয়তা প্রিয় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । বহুবছর বাইরে থাকার সুবাদে যেখানেই গেছি আমার ত্রিপুরাকে সহজ সরল মাটির মানুষের দেশ বলেই চিনিয়েছি । সত্যিই , এক হাঁড়ির থেকে কিংবা এক ঘরে ভাগাভাগি করে খাওয়া -থাকা - শোয়ার মতো মনপ্রান বিশ্বে আর কোথাও আছে কিনা আমার সন্দেহ আছে । ইতিহাস তার সাক্ষী । এমন একটি সার্বিক সফল অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে এবং সেই সহজাত সহজ আন্তরিক ব্যবহার যেভাবে প্রত্যেক গুণীজনদের কাছ থেকে পেয়েছি এখনও তাতে স্পষ্টতই বলা যায় , ঐতিহ্যবাহী ত্রিপুরা আর আমরা ত্রিপুরাবাসী কখনই নষ্ট হবার নয় ; ঝড়-ঝাপটা যতই আসুক ।
সহযোগিতা
-----------------
স্রোত
সাহিত্য পত্র
আয়োজিত
আন্তর্জাতিক লিটলম্যাগাজিন উৎসব ২০১৬
সমর সেন জন্ম জয়ন্তী উদযাপন কমিটি
স্বরণিকা
সম্পাদক
অপাংশু দেবনাথ।
সুরভী
সম্পাদক
আব্দুল আলিম।
অ আ ক খ
সম্পাদক
বিল্লাল হোসেন।
বিজয়া
সম্পাদক
সঞ্জীব দে।
অশ্রুত
সম্পাদক
মৃণাল কান্তি দেবনাথ।
এবং
জয়শ্রী প্রকাশন
স্বীকৃত
সম্পাদক
রতন আচার্য।
ত্রিপুরা লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনে আপনারা হর্সপাওয়ার।
আমরা আপনাদের যোদ্ধশক্তিকে সম্মান জানাই।
আপনারা প্রত্যেকেই
এই অনুষ্টানের সহ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনে ব্রতি হয়েছেন বলে
আপনাদের যোদ্ধশক্তিকে সম্মান জানাই।
কবির লড়াই
--------------------
অলক দাশগুপ্ত
“কবির লড়াই” আমাদের অনেকদিনের ঐতিহ্য । আমার মতো এলেবেলে কমিকস নিয়ে দিনরাত পড়ে থাকা সামান্য মানুষের উচিত নয় কবিতা বা কবিদের মতো গুরুতর বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করা কিন্তু আমার অন্যান্য না না বদ দোষের মধ্যে একটি হল কবি বা সাহিত্য সম্মেলনের মতো কিছুর একটা একটা নেমতন্ন জুটলেই হাজির হয়ে যাওয়া । যা হোক সেবার মেলাঘর আর কাঁকড়াবনের মাঝে আমাদের ব্যাঙ্কের ‘মোহনভোগ’ শাখায় গেছি ইন্সপেকশনের কাজে । গিয়ে সেই চমৎকার গ্রাম আর পুঁচকে ব্যাঙ্ক শাখার সৌন্দর্য দেখে তো আমি যাকে বলে মোহিত । তার উপর ব্যাঙ্কে ঢোকার মুখেই বাজারে দেখলাম এই গ্রামে ‘কবির লড়াই’এর আয়োজন হয়েছে সেই রাতেই । “কবির লড়াই” নিয়ে আমার ধারণা তেমন স্পষ্ট ছিল না (তখনো জাতিস্মর সিনেমা তৈরি হয়নি আর তার আদিরূপ অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি আমার দেখা হয়ে ওঠেনি), ভাবলাম এটা আসলে কবি সম্মেলন’ই হবে , গ্রামের পাবলিককে টানতে উদ্যোক্তারা ঐসব ‘লড়াই’ শব্দটা আমদানি করেছে কারণ যাত্রা পালায় অভ্যস্ত গ্রামের মানুষ যে পালায় লড়াইয়ের সিনগুলি খুব উপভোগ করেন সেটা আমার জানা । আমি তো মহা উৎসাহী হয়ে পড়লাম । রাজ্যের কবিদের প্রায় সব্বাই আমার ভারি আপন লোক, সবাই অমায়িক ভাল মানুষ । কে কে আসতে পারে সেটা না জানলে পেটের ভাত হজম হচ্ছে না । কবিদের সঙ্গে আড্ডা মারার আনন্দই আলাদা । আমি ব্যাঙ্কে ঢুকেই আগে ম্যানেজারবাবুর কাছে জানতে চাই কোন কোন কবি আসছেন ? নকুল রায়, দিলীপ দাস, সত্যব্রত চক্রবর্তী, কৃত্তিবাস চক্রবর্তী, বিমলেন্দ্র চক্রবর্তী, শুভেশ চৌধুরী, প্রবুদ্ধসুন্দর কর, আকবর আহমেদ আরও অনেক অনেক নাম এক নিশ্বাসে বলে গেলাম । আয়োজনের যা বহর তাতে মনে হচ্ছে ধর্মনগর থেকে পীযূষ রাউথ, সেলিম মুস্তাফা, তমাল শেখর দে, কৈলাসহর থেকে বিশ্বজিৎ দেব, সত্যজিৎ দত্ত, নির্মল দত্ত, পানিসাগর থেকে মিলনকান্তি দত্ত, কুমারঘাট থেকে গোবিন্দ ধর-পদ্মশ্রী মজুমদার আসতেই পারেন । সবচেয়ে কাছের শহর উদয়পুর থেকে যে অশোক দেব আর খোকন সাহা আসবেনই সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত । ম্যানেজারবাবু একেবারে মরমে মরে গিয়ে জানালেন কাজের চাপে তিনি ব্যাঙ্কের সার্কুলার আর রোজকার সংবাদপত্র ছাড়া অন্য কিছু পড়ার সময় পান না , এমনকি নাচ-গান-নাটক এসব অনুষ্ঠান দেখারও ফুরসৎ মেলে না । আমি রাতে কবি সম্মেলনে থাকতে চাই জেনে অবশ্য ঘাবড়ালেন না , গ্রাম-গঞ্জে আজও ব্যাঙ্ক ম্যানেজারদের খাতির আছে । এই শাখার কোন কর্মচারীই এই গ্রামে থাকেন না তারা উদয়পুর বা মেলাঘর থেকে রোজ অটোয় ঝুলে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেন । আমার আবদার মেটাতে পাঁচ মিনিটের বেশী সময় নিলেন না ম্যানেজারবাবু । কোথা থেকে এক বেজায় মোটা বেজায় কালো গলায় তুলসীর মালাপরা এক ভদ্রলোককে ডেকে আনলেন কিনা বিশাল ব্যবসায়ী । তিনি তো বিনয়ে গদ্গদ, আমাকে অতিথি হিসেবে পাওয়া নাকি তার বিরাট সৌভাগ্য ! বিকেলে সেই সৌভাগ্যবান নিজে এসকর্ট করে আমাকে তার চমৎকার গাছগাছালিভরা বাড়িতে নিয়ে গেলেন । বলে গেলেন আজ নাকি রাতের খাওয়ার পাট ন’টার আগেই চুকোতে হবে কারণ বাড়ির বউ ঝিরা কেউ তারপর আর পাকের ঘরে থাকবে না, কবির লড়াই দেখতে যাবে । ততক্ষণে এক বিশাল বাটিভর্তি মুড়ি মাখা আর এক প্লেট মিষ্টি চলে এসেছে সঙ্গে প্রচুর গরুর দুধ প্রচুর চিনি দেওয়া চা । আমি বলি,- ‘কবিরা কোথায় ?’ তিনি হেসে বলেন,- ‘এই আইসা পড়ব ?’ –‘কে কে আসবে জানেন ?’ আমার এই কোথায় একটু মনক্ষুণ্ণ হলেন তিনি, তিনিও যে এই স্মমেলনের একজন হর্তাকর্তা তা জানতাম না । -‘এক্কেবারে টপক্লাশ স্যার । ত্রিপুরার বেষ্ট দুই কবি - কবিরাজ নিত্যানন্দ দেবনাথ আর কবিসম্রাট বিশ্বনাথ অধিকারী আর তাদের দলবল ’। আমার এক গাল মাছি , আমি কস্মিনকালে নাম শুনিনি তায় আবার ত্রিপুরার বেষ্ট দুই কবি ! রাত আটটা বাজতেই ডিনারের তাড়া আসে । মাটির মেঝেতে চাটাইয়ের উপর বসে ঘন মুশুরি ডাল, বেসন দিয়ে ভাজা ঢ্যাঁড়স, ভদ্রলোকের নিজের পুকুরের মাছের ঝোল আর কাঁকড়ার ঝাল ঝাল তরকারী দিয়ে রাশি রাশি ভাত খেয়ে ফেললাম । আসরে গিয়ে কীর্তনিয়াদের মতো সাজগোজ করা দুই কবির গান সত্যি দারুণ উপভোগ করলাম । সত্যি কবির লড়াই এ ওকে ঠেস দিয়ে কাব্যি ছুঁড়ছে পরক্ষণে বিপক্ষও জুতসই জবাব দিচ্ছে । মাঝরাত অবধি চলল তবে দুজনের কেউই শালীনতার মাত্রা ছাড়নো তো দূরের কোথা পরস্পরকে যথেষ্ট সম্মান প্রদর্শন করছিলেন এমনকি লড়াই শেষও হল অমীমাংসিতভাবে । দুই কবি শেষে উঠে একে-অন্যকে বুকে চেপে ধরলেন । পাবলিক হেভি হাততালি দিল । রাতের আস্তানায় ফিরে আসতে আসতে আমার কেমন যেন বারবার মনে হচ্ছিল এই লড়াইটা আসলে WWF কুস্তির মতোই গট-আপ কেস নইলে মুখে মুখে এমন জবাব আসে কোত্থেকে ? সিওর প্রচুর রিহার্সাল দিয়ে এসেছে দুজনে মিলে ।
তারপর কতদিন কেটে গেছে কিন্তু আজও কোন কোন রাতে চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই বিশাল মাঠ , আলো, মানুষের জমায়েত আর দুই বেষ্ট কবির লড়াই , মনটা বড় ভালো হয়ে যায় ।কেবল ফেসবুকে যখন আধুনিক কবিদের লড়াই দেখি তখন মনটা কেমন বিষণ্ণ হয়ে পড়ে, মনে পড়ে সেই দুই গ্রাম্য কবির সেই আন্তরিক আলিঙ্গনের দৃশ্য ।
আন্তর্জাতিক লিটল ম্যাগাজিন মেলা:২০১৬ :বির্তক
--------------------------------------------------------
এক কমশিক্ষিত দাম্ভিক রুচিহীন লোক আমার পরিবার সম্বন্ধে মন্তব্য করে আমাকে অসম্মান করলেন । এতখানি দুর্মুখ কোনও কবি সাহিত্যিক হতে পারেন আমি বিশ্বাস করতে পারছি না । তাঁর সাথে পরিচয় হয়েছিলো বলে এই অসম্মান আমার সইতে হল । তবুও আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ।---শ্যামল বৈদ্য।
শ্যামল বৈদ্যদাদা আপনাকে চিনি ৷ আপনি আমাদের সম্পদ ৷ আপনার সাধনায় মগ্ন থাকুন ৷ ----অশোকানন্দ রায়বাধর্ন।
এমনটা করা ঠিক হয়নি ঐ লোকটার । ক্ষমা চাওয়া উচিত । -----মাধুরী দেবরায়।
দাড়ি থাকলেই যে রবীন্দ্রনাথ হওয়া যায় না এটি অনেকেই বুঝতে পারে না------শ্যামল বৈদ্য।
Just avoid, it. আমার মনে হয় উপেক্ষা এবং নীরবতার মতো বড়ো উত্তর আর নেই। চিরশ্রী দেবনাথ।
Sob somoy sojjo hoynA----নাজমা আক্তার।
শালা আমাকে ব্লক করে দিয়েছে।--------অমল কান্তি চন্দ।
আমাকে করবে বলেছিলেন আমি তার আগেই ব্লক করেছি।--শ্যামল বৈদ্য।
আপনি এই রাজ্যে একজন খ্যাতিমান সাহিত্যিক। আপনার রচনার জনপ্রিয়তায় কেউ ঈর্ষান্বিত হলে তাকে গুরুত্ব দেবেন না। -----প্রত্যুশ দেব।
কিছু লোক (কবি) আছেন যাঁরা রুচির বাইরে কথা বলেন, এঁরা দুর্মুখ কিনা জানিনা তবে তাঁদের চিন্তা চেতনা সর্বদা ব্যতিক্রমি। তোকে আঘাত করেছেন বলে বলে চিন্তা নেই, আরো শক্তি সঞ্চয় হল। আগামী দিন ওনি আবার পাশে এসে অনুতপ্ত হবেন এটা জোর দিয়ে বলছি। তুই ধন্যবাদ জানিয়ে ভালই করেছিস্, একজন সাহিত্যিকের উদার মানসিকতা প্রকাশ পেল। ওনার নাম জানতে চাইনে, ওনি কবি এটাই আশ্চর্যের। ভাল থাকিস্। অসম্মানটা আমার সাথে শেয়ার করিস্।---বিজিৎ গোস্বামী।
আমার মনে হয়,এই ঘটনা আপনার জীবনে চিন্তনে নতুন যুগ এনে দেবে।মানুষ চিনতে খুব বেশি ভুল হবে না আর।আশা করছি,এই চরিত্রটি খুব তাড়াতাড়িই পাবো কোনো গল্প, উপন্যাস কিংবা নাটকে।
আর অসম্মান কেউ কাউকে করে যে যে কারণে,তার অন্যতম হচ্ছে 'ঈর্ষা'। এই ঈর্ষা নারীর প্রধান গুণ হলেও,আদি যুগ থেকে কিছু অংশে পুরুষও এর ধারক।পাশের লোকটি থেকে আপনি যদি একটু উঁচুতে অবস্থান করেন,তবে অবশ্যই আপনাকে তার ঈর্ষার শিকার হতে হবে।হয়তো কখনো অসম্মানিতও হতে হবে। এই সূত্রে আমরা বুঝে নিয়েছি যে, আপনি (শ্রী শ্যামল বৈদ্য) ঐ লোকটির চেয়ে বেশ উঁচুতে অবস্থান করেন।-------সঞ্জয় দেবনাথ।
সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে সৎ পরামর্শ দেওয়ার জন্যে। বিশেষ করে Asokananda Raybardhan দা ও Pratyush Deb দা-র পরামর্শ মনে থাকবে। Sujan Chakrabortyবাবুর সমালোচনাও খোলা মনেই গ্রহণ করলাম। আসলে বারবার আমাদের স্বাভিমান আক্রান্ত হয় যখন তখন চুপ করে থাকা যায় না। ওই বাজে লোকটা বিচ্ছ্রি ভাষায় যাকে তাকে বকে যাচ্ছে। Najma Akther একজন বড়ো চিত্র শিল্পী এই mdm কে বলছে কাজের বোয়া। তাঁর আবার কিছু দোসরও আছে। মত্ত ষাঁড় যেমন যাকে তাকে গুঁতায়, এমনি এক উন্মাদের পাল্লায় পড়েছিলাম আমিও। বারবার নিরীহ সাপের গর্তে খোঁচালে সে যে পাল্টা দিতে জানে সেটা ওই মূর্খ লোকগুলি বুঝে না। যাই হোক এই বিষয় নিয়ে আমি আর কথা বলতে চাই না। আপনারাও আর কিছু মন্তব্য করবেন না, অনুরোধ।--------শ্যামল বৈদ্য।
কাল সারাদিন তো ব্লকড ছিলাম ৷সৌজন্য প্রদর্শন থেকে বঞ্চিত ছিলাম ৷ আপনার কলম এগিয়ে যাক কলুষ নাশ করতে করতে ৷----অশোকানন্দ রায়বর্ধন। ধন্যবাদ প্রত্যুষদা ও অশোকদা , আপনাদের ভালোবাসাই আমার পাথেয়।----শ্যামল বৈদ্য। Ardha kumva ra erokomtai hoy, nothing doing , either bear or ignore that. "Hathi chale Bazar, to kutta voke hazar". Bindas chalo vai.-----বিকাশরাই দেববর্মা।
স্যার, মাকাল নৈকট্য পরিহার করুন !! নিন্দুক থেকে সমালোচক ভালো ! স্যার সন্মান ক্ষুন্ন আপনার হয়নি কিন্তূ চরিত্র উন্মোচন হয়েছে।--প্রদীপ কুমার গোস্বামী।
ধন্যবাদ, শ্যামলদাদা। ৷'ে কইলে কথা ল'রাল' রা ৷ না কইলে কথা প্যাট ভরা' ৷কথা আর বাড়ালাম না ৷তবে খোঁচা দিলে ফোঁস করবই ৷----অশোকানন্দ রায়বর্ধন।
আমাকে দালাল বলেছে।Ami agartola niye bolechi bole tar jole jacche । ---নাজমা আক্তার।
mdm ধৈর্য ধরুন সময় ওকে আরও বিচ্ছিরি সব উপহার দেবে । আপনার স্পষ্ট কথা বলার ক্ষমতা আমাকে মুগ্ধ করেছে ।------শ্যামল বৈদ্য।
কার কথা বলছেন? যিনি মূল স্রোতের কবি??? লিটিলম্যাগে কখনো লিখেন নি, তাঁর কথা শ্যামলদা? যদি তিনি হন তাহলে বলতে বিন্দুমাত্রও খারাপ লাগবেনা যে শিষ্ঠাচার পনে জানেনা তিনি যতো বড়োই ভাবুক নিজেকে তিনি হীন নিম্ন রুচিবোধের কবি(মানুষ)।---অপাংশু দেবনাথ।
কাল থেকে নেট না থাকায় কিছুই বলতে পারিনি-----
রবীঠাকুর বলেছেন
আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার চরণ ধুলার তলে।সকল অহংকার হে আমার ডুবাও চোখের জলে।
এই কবিতাটি উনাকে আরেকবার পড়তে বলবো।
সত্যি কথা কি উনি যে সব কথা আমাকে বললেন সে গুলি বলে কথা বারাবো না। নিপু বাবুর সাথে ক ----সঞ্জীব দে।
নিপু বাবুকে আমি ফোর বেডের একটি এসি রোম এ থাকতে বললাম তখন উনি বললেন উনি আমায় বললেন উনি এই সব রুমে থাকতে অভ্যস্হ নন। আমি বললাম বললাম ঠিক আছে কিছুক্ষন রেষ্ট করুন আমি দেখছি ভি আই পি রুম,,, এই কথা বলেই আমি রুম ঠিক করতে পরের কম্পেক্সে আসি। ঠিক করতে ১৫ / ২০ মি সময় লেগেছে কারন আমি রাবেয়া দি কেও কথা দিয়েছিলাম ভি আই পি রুম দেবো। ঠিকও করেছি আমরা। উনাদের নিয়ে আসতে দেখি উনারা বেড়িয়ে যেতে প্রস্তুত। সবাই মিলে আমরা উনাদের ভি আই পি রুমে এনে দেই। এর মাঝে আকাশ বানী সাক্ষাতকার নিতে এসেছিল সবার কাছ থেকে তাই একটু দেড়ি হল। কিছুক্ষণের জন্য ফোর বেডের এসি রোমে থাকতে দেওয়া কি এমন অপরাধ হল বুঝলাম না,,,,,,--------সঞ্জীব দে।
এমন একটা লোক যে কিনা লিটলম্যাগ আন্দোলন টাই বুঝে না ! বলে, যাদের লেখা বড়ো কাগজে ছাপা হয় না তারাই নাকি নিজের ও বন্ধুদের লেখা ছাপতে ওসব করে । লিটলম্যাগ আন্দোলন সম্বন্ধে তাঁর জ্ঞান শুনে চমকে উঠেছি!--------- শ্যামল বৈদ্য।
ত্রিপুরায় শ্রদ্ধেয় ড,নিরঞ্জন অধিকারি, সুমুন দা, বেলায়েত দা, পুলক দার, মতো আরো অনেকেই এসেছেন উঁনাদের দেখলাম কত বিনয়ী ,,, উনাদের দেখলাম মানুষ কে ভালবাসতে কবিতাকে ভালবাসতে,,, প্রবির দাকেও দেখলাম কি অসাধারন ব্যবহার,,, কই তাঁরা তো এসি রোমকে ভালবাসেনি,,, ভালবেসেছে ত্রিপুরাকে, তিপুরার মানুষ কে। কেউ তো অসীম বাবুর মত কথা বলেন নি। অসীম বাবু কথাগুলি বলে শুধু ত্রিপুরার কবি সাহিত্যিকদের অপমান করেন নি,,, করেছেন বাংলাদেশের কবি সাহিত্যিকদের।। দোষটা উনার নয় দোষটা বুর্জোয়া পরিমন্ডলের। বুর্জোয়া পরিমন্ডলে থাকতে থাকতে মনটাও বুর্জোয়া হয়ে শিল্পীর প্রকৃত সত্ত্বাকে ঢেকে রেখেছে। সাপের মাথায় মনি থাকলেও মনিটা বর্জনীয় কারন সাপে বিষ। যে কোন সময় ছোবল দিতে পারে কি বলেন।-----সঞ্জীব দে।
যথার্থ বলেছেন।---ইমদাদুল হকসুফি।
নোয়াখালি প্রবাদ
মোডে মা রাধে না
কয়
গরমগুন খামু।----সঞ্জীব দে।
এইসব অসভ্য ছাগলকে লিটলম্যাগ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর রহস্যটাও বুঝলাম না ! এই উজবুক যখন বলে সে লিটল ম্যগাজিনে কবিতা লিখেনা তাহলে আসে কেন আরেক দেশে নিজের দেশের মান ডোবাতে !! এইসব ভণ্ড কে আমরা বাংলাদেশে কবি স্বীকৃতি দেইনা ।----কাজী মহাতাব সুমন।
আপনি যে কত বড়ো মনের মানুষ বুঝতে পারলাম Kazi Mahtab ShumanKaziদা ।---শ্যামল বৈদ্য।
সে বেশ কিছুকাল যাবৎ দেশেও বিভিন্ন ঝামলা পাকাচ্ছিল।-------ইমদাদুল হকসুফি।
আমরা এবারে চিনতে পারলাম ওকে।--শ্যামল বৈদ্য।
আমার বক্তব্য সঙ্গে সঙ্গে ডিলিট করে দিয়েছেন মূল ধারার কবি ৷একটা পুরো দিন এমন ব্লকড ছিলাম, কেউ আমার লেখা দেখতে পারেন নি ৷ তবে কিছু মানুষের হাসি হাসি মুখটা পড়তে পারলাম ৷সুযোগ পেলে ওরা আমার সামনে হেমলকের বাটি তুলে ধরবেন ৷------অশোকানন্দ রায়বর্ধন।
এতে বাংলাদেশ ও আমাদের রাজ্যের কিছু মানুষের মুখ সরাসরি টেলিকাস্ট হলো সকলের সামনে। তবে এসব করে টিকে থাকা গেলেও, বড় হওয়া যায়না-----অপাংশু দেবনাথ। এবার সবাই থামুন প্লীজ---শ্যামল বৈদ্য।
অসীম সাহা দেশেও কিছুকাল ধরে ঝামেলা করছে। এমন পরিস্থিতিতে তার মত লোককে আমন্ত্রণ জানানো ঠিক হয়নি। আপনি যা যা লিখেছেন প্রায় সব কথার আপনার সাথে আমি একমত তবে এক অসীম সাহাকে দিয়ে একটি দেশ আর তার মানুষকে যাচাই করতে যাওয়াটা ঠিক হবে না। বাংলাদেশের সাথে ভারতের ত্রিপুরাসহ বাংলাভাষী সকল এলাকার আত্মিক যোগাযোগ রয়েছে।----ইমদাদুল হক সফি।
বাংলাদেশের শিল্পী সাহিত্যিক অনেকের সাথেই আমার পরিচয় হয়েছে । তাঁদের ব্যবহার সত্যিই অনুকরণীয় । এমন একজন দাম্ভিক মানুষ নিশ্চিত ওই মহান দেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার হতে পারে না । আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক আগের মতোই থাকবে ।---শ্যামল বৈদ্য। ১২-১৪/৯/২০১৬(২)
নানা বিতর্ক :রণবীর পুরকায়স্থ
-------------------------------------------
গোবিন্দ,
আন্তর্জাতিক লিটল ম্যাগাজিন উৎসব সফল হোক।কুতর্কের জবাবে সন্দীপ এর বক্তব্য তোমাকে বাড়তি oxygen দেবে।
দূরে থেকেও তোমার কর্মকাণ্ডের শরিক আছি।
সম্পাদিত স্রোত
------------------------
সুশান্ত কর
ত্রিপুরা তথা পূর্বোত্তর ভারতের অন্যতম সাহিত্য পত্রিকা। পত্রিকার ২৪ বর্ষ, ৬৮-৬৯ সংখ্যাটি এরা সাজিয়েছেন ত্রিপুরার ছোয় পত্রিকা সম্পর্কিত এক গুচ্ছ বাছাই লেখা নিয়ে। ফলে ত্রিপুরার কাগজ এবং লেখালেখি নিয়ে পড়তে এবং জানতে গেলে সংখ্যাটি অবশ্যই সংরক্ষণ যোগ্য। সেই সঙ্গে এই প্রথম কোনো কাগজ মনে হয় আন্তর্জালে বাংলা ভাষা এবং সাহিত্য চর্চার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়ে নিলেন। ফলে আই সোসাইটি, অনলাইন বাংলা পত্রিকাটি নিয়ে সৌমিত্র রায়ের একটি লেখা। 'আন্তর্জালে বাংলা ভাষা এবং বুদ্ধিচর্চার প্রজন্মান্তর কাহিনি ' নামে আমার একটি পুরোনো লেখাও আবার ছেপেছেন। লেখাটি এখানেও পড়তে পাবেন। http://sushantakar40.blogspot.in/2015/04/blog-post.html
ফিরে দেখা
---------------
প্রবীর পাল
স্রোত আয়োজিত লিটল ম্যাগাজিন উৎসব ২০১৬। একটি বিশেষ উৎসব। সাহিত্য প্রেমীদের মিলনমেলা। এপাড় বাংলা ওপাড় বাংলার লেখিয়েদের সৌভ্রাতৃত্বের মৈত্রী সম্পর্কের উৎকর্ষতা সীমারেখা অতিক্রম করেছে মানচিত্র।
লেখক, পাঠক, দর্শক, কর্মী, শুভাকাঙ্খী, মন্ত্রী মহলের কর্তাব্যাক্তি, শিল্পী, সমজদার, বাদ পড়েনি কেউ। এমনকি কর্মী হিসেবে শিশুদের কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মত।
না, এ শাক খেয়ে ঘি খাওয়ার ঢেকুর তোলা নয়, বরং নামে লিটল ম্যাগাজিন উৎসব হলেও তার ব্যাপ্তি এবং আড়ম্বরতা যে কোন আন্তর্জাতিক উৎসবের আয়োজনকে অনেকাংশে হার মানাতে পারে। তবে মানুষের টুকটাক ভুল না ধরলে ইহ জগতের এমন কিছু ক্ষতি হয়ে যাবে না। এ কথা বলছি আমার বিশ্বাস থেকে।
আমি বলছি কারণ আমিও সবার একজন ছিলাম আমন্ত্রিত হয়ে। সৌভাগ্যক্রমে এ অনুষ্ঠানের অংশ ছিলাম,
ছিলাম উৎসব জুড়ে মুখর, অবশ্য মুখর না থাকার উপায়ও ছিলনা, বাধ্য ছিলাম আমি আমরা মুখরিত থাকবার, সময়টাই ছিল এমন। যেন সমস্ত দুঃখকে জয় করার এ উৎসব। প্রাণে প্রাণ মেলানোর এ উৎসব।
যদি কোন কারণে উপস্থিত হতে না পারতাম তবে এমন আনন্দ আয়োজন থেকে বঞ্চিত হতাম আজীবনের তরে।
আমি প্রায় দুই যুগ ধরে আবৃত্তির মত একটি অবিপনীয় শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পেরেছি এও আমার সৌভাগ্য।উৎসবের আয়োজকরা ডেকেছেন, মঞ্চ দিয়েছেন সে জন্য ঋণী রইলাম কিন্তু কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ করেছেন অকৃত্রিম আতিথিয়তায়।
মুগ্ধ, সত্যি আমি মুগ্ধ। বরণ থেকে বিদায় পর্ব পর্যন্ত বিশেষ পদ্মশ্রী শ্রী মতির কথা না বললে অপূর্ণ যাবে সব, সঙ্গে তার ছোট্ট এতটুকুন পরীটা। অকপটে বলতে পারি শিখতে হবে ওদের কাছে সাংগঠণিক কাজ করার শক্তি কি, সত্যিই প্রশংসার দাবীদার।
এছাড়াও নাম বলতে গেলে কাকে বাদ দিয়ে কার কথা বলবো সুতরাং সেদিকে না গিয়ে নমস্য এবং প্রীতিভাজনেরা আন্তরিকতায় বেঁধেছে একেবারে আত্মিক বন্ধনে আজীবনের তরে।
জয় হোক স্রোত, বয়ে যাক সরব স্রোতে সামনে থেকে আরো সামনে, যেখানে মিশেছে সীমাহীন অনন্ত স্রোত।
জয়তু
জয়তু
জয়তু
মৌমিতা প্রকাশনার রাখাল মজুমদার
-----------------------------------------------------
আমি লক্ষ করছি বেশ কিছুদিন ধরে আপনি কবি লেখক এবং প্রকাশকদের ক্রমাগত উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন।আপনাকে তো তেমন কোন।সহযোগিতা করিনি।তবু প্রকাশনা আন্দোলনে আপনার সহযোগিতার হাত প্রসারিত দেখে খুব উৎসাহিত ও আনন্দিত আমি।আপনি পাশে থাকবেন।প্রকাশনা হোক একটি আন্দোলন।আপনি হোন তার একজন উপদেশক।আমরা হয়তো কিছু কাজ করেছি কিন্তু অনেক কাজ তো করতে হবে তাই সহযোগিতা লাগবে।
রাজ্যে হোক কবিতা আকাদেমি
--------------------------------------------
১।গ্রন্থাগার বিভাগ
কবিতার যাবতীয় বই ও নির্বাচিত/সমগ্র সংগ্রহ।
সম্পাদিত সংকলিত কাব্য সংগ্রহ।
অনুদিত কাব্য সংগ্রহ।
ভারতীয় ও বিদেশী ভাষার কবিদের কাব্য সংগ্রহ।
কবিদের পান্ডুলিপি সংগ্রহ।
কবিদের স্বকন্ঠে অডিও ডিভিডি/সিডি সংগ্রহ।
কবিতার আবৃত্তির ক্যাসেট সংগ্রহ।
কাব্যগ্রন্থের প্রথম সংস্করণ সংগ্রহ।
কবিতার লিটল ম্যাগাজিন সংগ্রহ।
কবিদের সাক্ষর সংগ্রহ।
কবিতা উৎসব,মেলা,সভার রিপোর্ট
নথিভুক্ত করণ।
শ্রুতি/কাব্যনাট্য সংগ্রহ।
কবির জীবন-পঞ্জীর ফাইল তৈরি করা।
জাতীয় ও আন্তঃর্জাতিক কবিতা উৎসবের পোষ্টার ইত্যাদি সংগ্রহ।
কবিতা সম্পর্কিত দেশী ও বিদেশী আলোচনা, সমালোচনার বই সংগ্রহ।
কবিতা নিয়ে অন লাইন ব্লগ গুলোর ঠিকানা
পঞ্জী
কবিদের ডাকযোগাযোগ ঠিকানা পঞ্জী
কবিদের ফোন ই মেল ওয়েব পঞ্জী
...ক্রমশঃ
সূত্রঃসন্দীপ দত্ত।
প্রভাতে গোবিন্দনাম...
--------------------------------
অশোকানন্দ রায় বর্ধন
সুপ্রভাত বন্ধুরা ৷ কালরাতে অপাংশু অনেক্ষণ একা একা বহু মূল্যবান কমেন্ট পোস্ট করে গেছেন ৷ দুঃখিত আমি সঙ্গ দিতে না পারায় ৷ আসলে আমি এগারোটার পর লাইট অফ করে দিই শারীরিক কারণে ৷ কিন্তু সারাদিন অন্যরা যখন কর্মচঞ্চল, অকর্মা আমি তখন নেট হাতড়ে বেড়াই ৷ অনেকের কবিতার মূল্যায়ন করেছেন ৷সেইসঙ্গে আমারও ৷ সবই গঠনমূলক ৷ আলোচনা না থাকলে উৎসাহও থাকে না সৃষ্টিতে ৷ অথচ আলোচনা সমালোচনা হয়ই না আজকাল ৷ হলেও এমন প্রতিক্রিয়া হয়, হিতাহিত জ্ঞান থাকে না ৷ তাই সাহস করে বলপেনের বলটার উপর বলপ্রয়োগ করি না ৷ তাকে নিরাপদ পথে নিয়ন্ত্রণ করি ৷ অপাংশু বা অন্য কোনো সুহৃদ যদি আমার লেখা যদি কাটাছেঁড়া করে বর্জ্যবাক্সেও ফেলে দেন, আমি শ্রদ্ধা জানাব তাঁদের কলমকে ৷ এ আমার অন্তর্গত অঙ্গীকার ৷ আমি আবার কলম ধরব সুন্দরের উপাসনায় ৷ আমি জানি আমার ওজন কতটুকু ৷ আসলে আমরা সবাই মিলে হাত ধরাধরি করে না এগোই তাহলে কী করে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছুব ৷ আমি তো ঘরকুনো বরাবরেরই ৷ কদিন আগে অপাংশুরা আমাকে ধরে বেঁধে একটা অনুষ্ঠানের সর্বোচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত করেছে ৷ আমি আজও ভাবি আমি তার যোগ্য ছিলাম কিনা ৷ সেই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিকালে একদিন আমরা সবাই অগ্রজপ্রতিম কবি রামেশ্বরদার বাড়ি গিয়েছিলাম তাঁর পরামর্শ নেওয়ার জন্যে ৷ কথাপ্রসঙ্গে তিনি সবার সামনেই গোবিন্দকে সাধুবাদ জানিয়ে
বলেছিলেন, গোবিন্দ ( ধর) অসাধ্যসাধন করেছে ৷ অশোকানন্দকে খোলস ভেঙে বের করে আনতে পেরেছে ৷ রামেশ্বরদার স্পষ্টও উজ্জ্বল বাকশৈলীতে আমার মন্ডুকাবস্থানের প্রতি ইঙ্গিত থাকলেও প্রণত হয়েছি তাঁর মূল্যায়নে ৷ সেইসঙ্গে কবি গোবিন্দ ধরের প্রতি শ্রদ্ধা আরো বেড়ে যায় আমার ৷ আরে! আমি তো ভেবে দেখি নি এভাবে ৷ কৃতজ্ঞতা জানানোর সৌজন্যবোধও নেই আমার ৷ আজ গোবিন্দর দুঃসময় ৷ পাশেও দাঁড়াচ্ছি না ৷ শব্দ ব্যবহার করছি মেপে মেপে ৷ জীবনখাতায় তো শেষ তালা পড়ে যাবে সহসাই ৷আক্কেল কবে আমার হবে! কী না করেছে গোবিন্দ আমার জন্যে ৷ আমার কবিতার বই ' বিনীত চুম্বন', প্রবন্ধগ্রন্থ ত্রিপুরার ' লোকসংস্কৃতির তত্ত্বরূপ ও উৎসসন্ধান' এবং সদ্য প্রকাশিত প্রবন্ধসংগ্রহ ' মগ জনজাতির ইতিহাস ও সংস্কৃতি' এই তিনটি গ্রন্থই প্রকাশ করেছে একেবারেই স্ব উদ্যোগে এবং নিজ ব্যয়ে ৷ যে কোন প্রকাশক বা নিজের খরচে বই ছাপেন, অনুমান করতে পারেন তিনটে বই ছাপাতে কতো খরচ হতে পারে ৷ আমি জানি না ৷ সাহস করে জিজ্ঞাসাও করি নি কোনদিন ৷ বেহায়ার মতো একটা কপি খুঁজে নিতেও লজ্জা করে ৷তবু সে সে প্রায়শই আমাকে তার প্রকাশনার গাদা গাদা বই হাতে তুলে দেয় ৷ এবং কোন অতিথির হাতে ( তিনি রাজ্যের হোন বা বহির্রাজ্যের কিংবা দেশের বাইরের) একগুচ্ছ বই তুলে দেওয়া কবি ও প্রকাশক গোবিন্দ ধরের স্বাভাবিক সহবৎ ৷ এভাবে কতো টাকা নষ্ট করে সে ৷'নষ্ট' শব্দটা সচেতনভাবে ব্যবহার করলাম ৷ বই নিয়ে জুয়ো খেলছে গোবিন্দ ৷ জুয়োই বলব ৷যারা গোবিন্দ ধরের কুমাঘাটের বাড়ি গেছেন, দেখবেন বড়িটা কী অবস্থায় আছে ৷আমার তো আশঙ্কা হয়, এ বাড়ি আদৌ কুটিরেও পরিণত হবে কী ! গোবিন্দ যেসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেখানে উপস্থিত সবার হাতে হাতে বই তুলে দেয় এটা ইতিহাস ৷ ত্রিপুরা পাবলিশার্স গিল্ড তার প্রকাশনাকে জেনে বুঝেই সদস্য করেছেন ৷ ভালোমতো যাচাই করেই ৷ তাঁরা জানেন গোবিন্দ ধর ও স্রোত প্রকাশনা প্রতিদ্বন্দ্বী হবে না ৷ সহযোদ্ধাই হবে ৷ত্রিপুরার প্রকাশনা আন্দোলনে ৷ গোবিন্দ নিজে যেমন অনেক অভিনব অনুষ্ঠানের মাস্টারমাইন্ড, ইভেন্টম্যানেজার তেমনি অনেক অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থেকে পরামর্শদানসহ যথাসাধ্য সহযোগিতাও করে থাকে ৷ রাজ্যের বাইরেও সে যে অনুষ্ঠান করে তা ত্রিপুরার সাহিত্য নিয়েই ৷ ক'টাকা ঘরে ওঠে ভুক্তভোগীমাত্রই জানেন ৷এই কিছুদিন আগে সাব্রুম বৈশাখি মেলায় অনুষ্ঠান করে এসেছে স্রোত ৷ মেলাকমিটির মঞ্চটা কোন বিনিময় ছাড়া ব্যবহারের সুযোগ ব্যতীত আনুষঙ্গিক সমস্ত ব্যয়ভার নিজেই মিটিয়েছে গোবিন্দ ৷ সেইসঙ্গে সংবর্ধনা দিয়ে এসেছে রাজ্যের দুই গুণীজন সাব্রুমের ড.রঞ্জিত দে এবং তিমিরবরণ চাকমাকে ৷ সেইসঙ্গে মরণোত্তর সম্মান প্রদর্শন করে এসেছে সাব্রুমের প্রত্যন্ত গ্রাম রূপাইছড়ির প্রয়াত কবি হরিহর দেবনাথকে ৷ এভাবে ত্রিপুরার গ্রাম জনপদে কাজ করে চলেছে ত্রিপুরা পাবলিশার্স গিল্ডের একজন অর্বাচীন সদস্য ৷ সঞ্জীব দের মতো তরুণ মেধাবী সাহিত্যসেবীদের তুলে আনছে ৷সবই কী অর্থগৃধ্নু অভীপ্সা? আগামী সেপ্টেম্বরে আয়োজন করেছে আন্তর্জাতিক লিটল ম্যাগাজিন উৎসবের ৷সাজ সাজ রব পড়ে গেছে চারিদিকে ৷ আর এরই মধ্যে গোবিন্দ বিষন্ন হয়ে পড়ছে আঘাতে আঘাতে ৷ কাজ করলে ভুল হতেই পারে ৷আমি অকর্মার ঢেঁকি ৷ আমি বুক ঠুকে বলতে পারি, আমার কোনো ভুল নেই ৷ সবাই বলেনও, তাইন খুব বালা মানুষ ৷ আর আমিও হেঁ হেঁ ধরনের নির্লজ্জ আত্মপ্রসাদ পাই ৷ এতো কাজ করে গোবিন্দ তার তো ভুল হবেই ৷ হওয়াটা স্বাভাবিক ৷কাছে ডেকে সৎ পরামর্শ দিলে সে তো উপকৃতই হয় ৷ কাজ আরো সুন্দর হয় ৷ কোথা থেকে কী হয়েছে আমি সে সব বিষয় তুলে ধরে আমার কলমকে অমর্যাদা করব না ৷ শুধু আমার অনুভব, গোবিন্দ যদি হেরে যায়, গোবিন্দ যদি হারিয়ে যায়, গোবিন্দকে যদি হারানো হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হবো আমরা, ত্রিপুরার সাহিত্যাঙ্গন, ত্রিপুরার প্রকাশনা আন্দোলন ৷ খুব সচেতনভাবে সংবেদনশীল বিষয়টা তুলে ধরলাম ৷তার পরেও যদি কারো অন্তরে কিঞ্চিৎ বেদনারও সঞ্চার হয়, আমি নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থী ৷ যাঁরা সময় নষ্ট করে এই প্রলাপলিপি পাঠ করবেন তাঁদের কাছেও ৷ সবাই ভালো থাকবেন ৷
ত্রিপুরার লিটল ম্যাগাজিন :পাঠ প্রতিক্রিয়া
-------------------------------------------------------------
● লেখক — গোবিন্দ ধর
● প্রকাশক — স্রোত প্রকাশনা । (Srot Prakashana)
● ISBN: 978-93-80904-84-9
আলেচনা:অরিন্দম ভৌমিক
ত্রিপুরা তথা উত্তর-পূর্ব ভারতের লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের এক অনন্য দলিল হলো , গোবিন্দ ধর সংকলিত ' ত্রিপুরার লিটল ম্যাগাজিন ' নামক পুস্তকটি । ১৮২১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত লিটল ম্যাগাজিনের বিবরণ লিপিবদ্ধ হয়েছে , এই সংকলন গ্রন্থটিতে । স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়ে ত্রিপুরা থেকে প্রকাশিত হওয়া সংবাদপত্র , সাময়িক পত্র , ছোট পত্রিকা ; স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ের পত্রিকা ও সাহিত্য পত্র ; সাম্প্রতিককালে প্রকাশিত হওয়া পত্র-পত্রিকা , লিটলম্যাগসমূহ , তাদের প্রকাশকদের ঠিকানা ইত্যাদি খুঁটিনাটি বিষয়গুলি খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপিত হয়েছে , এই বইটিতে ।
বহু তথ্যে সমৃদ্ধ এই বইটি কেবলমাত্র লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদকদের জন্যই নয় , ছাত্র , শিক্ষাবিদ , গবেষক ও ইতিহাসকারদের জন্যও যথেষ্ট কর্মোপযোগী ।
লিটল ম্যাগাজিনের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে , এই বইটি একটি তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে সক্ষম ।
বই প্রকাশ
---------------
ত্রিপুরায় বাংলাসাহিত্য চর্চা:শ্যামল ভট্টাচার্য
ত্রিপুরার লিটল ম্যাগাজিন :গোবিন্দ ধর
লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ হয় সেদিন
------------------------------------------------
বনতট:হারাধন বৈরাগী
মনুতট:গোপালচন্দ্র দাস
স্রোত.কম:গোবিন্দ ধর
রসমালাই:অমলকান্তি চন্দ
স্রোত:গোবিন্দ ধর(আন্তর্জাতিক লিটল ম্যাগাজিন সংখ্যা)
স্রোত:গোবিন্দ ধর(শ্যামল ভট্টাচার্য সংখ্যা)
আন্তর্জাতিক লিটল ম্যাগাজিন সংখ্যা
-----------------------------------------------------
স্রোত আন্তর্জাতিক লিটল ম্যাগাজিন সংখ্যা
সূচীক্রম
(১)ত্রিপুরার লিটল ম্যাগাজিন
(২)উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় লিটল ম্যাগাজিন
(৩)বাংলাদেশের লিটল ম্যাগাজিন
(৪)লিটল ম্যাগাজিন
(৫)লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদকের কর্তৃক লিটল ম্যাজিনের ইতিহাস
(৬)ত্রিপুরার একমাত্র মিনি কবিতা পত্র"পরমাণু" প্রথম সংখ্যার পুনর্মূদ্রন
(৭)"এবং" ও "পৌণমী"মিনি পত্রিকার পুনর্মূদ্রন
(৮)অন লাইন লিটল ম্যাগাজিন
লেখাগুলো ডিটিপি চলছে।
এখন চাই আপনাদের সহযোগিতা।চাই বিজ্ঞাপন।নিচে বিজ্ঞাপন ও স্পনসর এর চার্ট দিলাম।যোগাযোগ:09436167231mail:boibari15@gmail.com
মঞ্চ নামাকরণ
---------------------
উদ্বোধনী পর্ব থেকে শেষ হওয়া অব্দি নানা পর্বে ভাগ ছিল অনুষ্ঠান। সেগুলোর মঞ্চ নামাকরণ করা হয় কবি লেখকদের নামানুসারে। মঞ্চ উৎসর্গ করা হয় কবি হিমাদ্রি দেব, দিব্যেন্দু নাগ,রমাপ্রসাদ দত্তসহ অনেকেরই নামে।বেসরকারীভাবে এইরকম মঞ্চ উৎসর্গ করে স্রোত সাহিত্যে এক বাঁকের জন্ম দিলো।
আমন্ত্রিত সংগীত শিল্পী
--------------------------------
রাবেয়া আক্তার
লিটল ম্যাগাজিন সম্মান প্রদান
--------------------------------------------
জোনাকি:পীযুষ রাউত
ঝিণুক:বিমলেন্দ্র চক্রবর্তী
নান্দীমুখ: স্বপন সেনগুপ্ত
মুখাবয়ব:দেবব্রত দেব
:সুনীল দেববর্মা
:ক্রাইরী মগ চৌধুরী
পূর্বমেঘ:রামেশ্বর ভট্টাচার্য
স্বতন্ত্রমেধা: নকুল রায়
জলজ:সন্তোষ রায়
বহ্নিশিখা: মন্টু দাস
:গৌতমলাল চাকমা
সংসপ্তক: দিলীপ দাস
প্রজন্মচত্বর: জ্যোতির্ময় রায়
ও
উপস্থিত সকল অতিথি এবং লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদকদের লিটল ম্যাগাজিন সম্মাননা প্রদান করা হয়।
একটি পাঠ্যক্রম জনিত প্রস্তাব
-------------------------------------------
আমি চাই শুধু ব্যতিক্রম কিংবা স্রোত নয় আমাদের আধা বানিজ্যিক প্রকাশনাগুলোকে এই অঞ্চলের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সকল লেখক কবিদের যৌথ প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাওয়ার সলতে পাকানোর কাজটা করে দেওয়া।আমরা আমাদের কবি লেখকদের সৃষ্টিকে প্রাক প্রাথমিক থেকে পাঠ্য তালিকায় আনতে প্রয়োজনে আন্দোলন সৃষ্টি করা।আমাদের সৃজন প্রতিভাকে পাঠ্য তালিকায় পাঠ্যক্রমের আয়তায় আনলেই পাঠক বাড়বে।ক্রয় করার মানসিকতা বাড়বে।আমি মনে করি আমরা সমবেত ভাবে এই কাজটা করতে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।তলে তলে এক দুজন তাদের মেধাবস্তু পাঠ্য তালিকায় নিলেই আমাদের সৃষ্টি পাঠকের গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে যাবে যারা ভাবেন তারা আর যাই হোক এই অঞ্চলের সুচিন্তন আমি তা মনে করি না।তলে তলে সলতে চালালে হয়তো নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা যায় সাময়িক সময়ের জন্য।কিন্তু চিরকাল এভাবে সম্ভব নয়।তাই সমবেত প্রচেষ্ঠা হতে পারে বাংলা সাহিত্যেরই শুভপ্রদ।আমি বিশ্বাস করি আমাদের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাহিত্য প্রাক প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে পাঠ্য তালিকায় অচিরেই নেওয়া প্রয়োজন।আমাদের লেখক কবিরা কোন অংশেই কলকাতা থেকে,বাংলাদেশ থেকে মেধা কিংবা মননে কম নয়।সুতরাং হোক না পাঠ্য তালিকায় সংযোজন।এতে আমাদেরই লাভ।আমাদের শিক্ষার্থীরা জানবে আমাদের সৃষ্টিকে।তবেই আমরা একা যে যুদ্ধ করছি এই অঞ্চলের প্রকাশনা জগতে তার অগ্রগতি সম্ভব।আসুন সমবেত প্রচেষ্টা হোক আমাদের সাহিত্যের বাতিঘর আলোকিত করার পদক্ষেপ।
শেষকথা
-------------
অসংখ্য ভাবনার প্রতিফলন ঘটেছে আন্তর্জাতিক লিটল ম্যাগাজিন উৎসব :২০১৬ উদযাপনকে কেন্দ্র করে। পাশাপাশি বিতর্ক আছে হয়েছে তবুও এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব এখনো ঘটে চলেছে ত্রিপুরার লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনে এই বিশ্বাস রাখি।
বিদ্র:তথ্যগত অসংগতি লক্ষ হলে শুভাকাঙ্ক্ষীরা ধরিয়ে দেবেন আশা করি।
০৬:০৬:২০২০
সকাল:০৮:৫০মি
কুমারঘাট।
[29/05, 22:00] GOBINDA DHAR: প্রসঙ্গ স্রোত লাইব্রেরি
স্রোত প্রকাশনার একশটি বই একদমই ফ্রী পৌঁছে গেছিলো বেশ কয়েকজন কবি লেখক ও পাঠকের হাতে।দাবী ছিলো বইগুলো স্রোত লাইব্রেরি হিসেবে ব্যববহার করার।
প্রথমজন ধর্মনগর থেকে কবি মধুমঙ্গল সিনহা নিয়েছিলেন স্রোত প্রকাশনার বই।পর পর অনিতা ভট্টাচার্য ও শাশ্বতী দাস আমাদের বই নিলেন।এই লাইব্রেরি করতে আরো অনেকেই বই নেবেন।কথা মোতাবেক এ মাসে আরো বেশ কয়েকজনকে ফ্রী বই প্রদান করা হবে।ত্রিপুরার বিভিন্ন লাইব্রেরি ও ছাত্র ছাত্রীদের হাতেও বইগুলো তুলে দেওয়া হবে।আজ রাজেন্দ্রনগর নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা এস এম সি ও কোক কাম হেলপারদের হাতেও বই তুলে দিয়েছি।
সন্ধ্যায় কবি ও সংগীতশিল্পী শাশ্বতী দাস মহোদয়ার বাসভবনে নতুন লাইব্রেরি ওপেনিং হলো।বইগুলো গুছিয়ে রাখার মূহুর্তে ছবি ধারণ করে ফেলেন কবি।আমি ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি।অগত্যা আর কি করি বন্ধুদের জন্য দিলাম।
আর আগ্রহীদের নিকট অনুরোধ আসুন স্রোত প্রকাশনার বইগুলো স্রোত লাইব্রেরি হিসেবে নিজ বাসায় কিংবা স্কুল অথবা ক্লাবেও রাখতে ইচ্ছুক হলে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর ঃ৯৪৩৬১৬৭২৩১ এ যোগাযোগ করবেন।
২১:০৭:২০২২
[29/05, 22:01] GOBINDA DHAR: স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত
একটি লিটল ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ইতিহাস:চব্বিশ
গোবিন্দ ধর
স্রোত:পঞ্চম বর্ষ:সপ্তম সংখ্যা:অক্টোবর -ডিসেম্বর :১৯৯৮
----------------------------------------------------------------------
তখন কবিতা সিংহ আমাদের ছেড়ে চলে যান।কবি ১৫ই অক্টোবর ১৯৯৮ সালে প্রয়াত হোন।চল্লিশের উপর কবিতা সংকলনের তিনি স্রষ্টা। জন্ম ১৬ই অক্টোবর ১৯৩১ সালে।বাংলা কবিতা তাঁর হাতে সমৃদ্ধ হয়েছিলো।
তখন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত সেন নোবেল সম্মান পান।আরো একটি ঘটনা মনে পড়ে ত্রিপুরার মুকুটহীন সম্রাট দেশরথ দেবও প্রয়াত হোন।তিনি ১৪ই অক্টোবর ১৯৯৮ সালে তিনি প্রয়াত।দশরথ দেবের জন্ম ১৬ই নভেম্বর ১৯১৬ সালে।
স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত এই রকম এক ক্রান্তিলগ্নে। কিন্তু স্রোত প্রথম সংখ্যা কোথাও লেখা নেই। স্রোতস্বিনী নামটির বেগ তখন মনে হয়েছিলো কম।গতি কম।স্রোত নামটিই প্রকৃতপক্ষে আমি যা চাই আমার পরাণ যা চায় তা-ই।সেই মনোনয়ন থেকেই স্রোতস্বিনী হয়ে গেলো স্রোত।
পাশাপাশি স্রোতস্বিনীতে শেষ দিকে শরীকি অধিকারও কেউ কেউ ফলাতে চান।এটা একটি লিটল ম্যাগাজিনকে দম বন্ধ করে গলা টিপে হত্যা করার সামিল।একজন লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক হিসেবে তখন স্রোতস্বিনী আমার ধ্যান।স্রোতস্বিনী এভাবে বন্ধ হলে আমিও দমে যেতাম।
আমার প্রাণের উত্তাপ থেকে উষ্ণতা থেকে এই শরীকি কাইজ্জা থেকে স্রোতস্বিনীকে রক্ষা করতেই এই চেষ্টা।
সেদিন এই শরীকি ঝামেলায় না পড়লে স্রোত হতো না স্রোতস্বিনী।
এই সংখ্যা ছাপা হয় ধর্মনগর উত্তরা প্রিন্টার্স তাপস কর লেন,নয়াপড়া থেকে।প্রকাশক সুমিতা পাল ধর। মূল্য পাঁচ টাকা।
তখনও আমরা রাতাছড়ায়।
এ সংখ্যায় যারা লিখেছেন:কবিতা সিংহ,সেলিম মুস্তাফা, সন্তোষ রায়, মিলনকান্তি দত্ত, বিশ্বজিৎ দেব, সুনীল ভৌমিক, তাপস রায়,গোবিন্দ ধর,পীযূষ রাউত ও সুধন্য ত্রিপুরা।
আগামীকাল সংখ্যাটি থেকে কয়েকটি কবিতা তুলে ধরবো।
আশ্চর্য হলেও সত্যি শেষ অব্দি সে সময়ের রাতাছড়া থেকে কোন কবিই কবিতা লেখার ধারা বাহিকতা রাখেননি।কবিতাকে না ভালোবাসলে কবিতাও ধরা দেয় না এ কথা তখনও বলতাম।এখনো সমান প্রাসঙ্গিক আমার নিকট।
আরো একটি বিষয় আমি যা জানি না তাতে আমার আধিপত্য না ফলানোই প্রয়োজন।কিন্তু দূর্ভাগ্য হলেও সত্যি আমরা তা মানি না।এতে হয়তো অনেক ক্ষতি হলেও আমরা তা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।স্রোতস্বিনীতে এরকম অনধিকার হস্তক্ষেপ না এলে সত্যি শেষ অব্দি স্রোত নামে বাঁক নিতো না।
হয়তো ইতিহাসচর্চাও এরকম করতাম না।
ভালো না মন্দ হলো আগামীকাল সে হিসেব বলবে।ততদিন আমিও স্রোতকে ধরেই আছি।(চলছে)
২১:০৪:২০২০
রাত:০৭টা১৫ মি
কুমারঘাট।
[29/05, 22:01] GOBINDA DHAR: স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত
একটি লিটল ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ইতিহাস:সতেরো
গোবিন্দ ধর
স্রোতস্বিনী ৪র্থ বর্ষ ৫ম সংখ্যা থেকে নির্বাচিত কবিতা
----------------------------------------------------------------
দেবাশীষ তরফদার
ইতস্তত পংক্তি
সেদিন অভাব এসে তিনপ্রহরে
কেড়ে নিত ঘুম
রাত জুড়ে অনাদর
প্রহারে যন্ত্রণায় কমণ্ডলু ভরা
নগ্ন পা
একপা দু'পা ভিজিয়ে যেতে
শিশিরের মতো গান
আহা গান!
তাই তুমি শুনেছিলে
হিসেব কুকুর
ভরিয়ে দিচ্ছে আজ নাম এসে
অর্থ ভীরু ঠোঁটের নীচে পুরুলোভ
ঘেন্না করে কথা বলতে এমন কুকুর
ঘুর ঘুর
সম্বিত জাগে না তবু দরজায়,দরজায়
হাহাকার ছুটিয়ে
চুটিয়ে ফসল ফলাবো বলে
পত্রিকায় পত্রিকায় একগাদা ফুল স্ক্যাপ!
আর যে মেয়েটা নামধাম লিখে নিয়েছিলো
সেকি ভালোবাসা জানে!বলছিলো!
আমরণ!
সুরতহাল লেখা হচ্ছে তারো।
কবিকে শ্রদ্ধা। কারণ তিনি সেদিন ব্যস্ততম একজন ডাক্তার। সমসাময়িক সময়ে উত্তর ত্রিপুরা জেলার মেডিকেল সি এম ও এর দায়িত্বও পালন করেছেন।একজন সফল ই এন টি স্পেশালিষ্ট তিনি।কৈলাসহরের বিশেষ ডাক্তার অভিভাবক।তাঁর দুই সন্তান। বড় ছেলে দেবায়নও ডাক্তার এখন।সেও কবিতারও ছবি আঁকতো।পরে শুভদীপ দেবরা উড়ুম্ভুম নামে একটি গানের দল গঠন করে সাড়া ফেলেছে। এখন সে সর্টফিল্মও করে।দেবাশীষদার গোটা পরিবার সংস্কৃতির সাথে যুক্ত। বৌদি রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী।
আমার শ্রদ্ধা আজও তাঁর প্রতি সমান।
তিনি কেন যে কবিতা আর লেখেন না সে খেদ আমাকে যন্ত্রণা দেয়।ত্রিপুরায় যে কজনকে কবিতার জগৎ থেকে ঠেলেও বিদায় করা যাবে না দেবাশীষ তরফদার তার একজন।
২০০১ সালে আবহমান প্রকাশনা থেকে তাঁর একমাত্র কবিতা সংকলন প্রকাশিত হয়।জলকাতর।মেঘ বৃষ্টি রোদ আমার সম্পাদিত কবিতা সংকলনে দেবাশীষদার কবিতাও পেয়েছিলাম।
বলছিলাম আবহমান প্রকাশনার কথা।অনুপ দুলাল নামেই পরিচিত দুজন কথাশিল্পীর প্রাণের প্রদীপ আবহমান। বয়স ও অন্যান্য নানাবিদ কারণে ত্রিপুরার প্রকাশনা জগতে আবহমান এখন আর বই প্রকাশ করেন না।কিন্তু আবহমান ত্রিপুরায় যে কাজগুলো করে গেছেন ভাবি ত্রিপুরায়ও তার মূল্যায়ণ হতে বাধ্য।
জলকাতর আবহমান থেকে প্রকাশিত।তারপর কবি নিজে এমন জলডুবে গেলেন আমরা তা্র পাঠকেরা কবিতাকাতর তাঁর হয়েছি কিন্তু তিনি জলডুবে এখনো রয়েই গেলেন।
স্রোতস্বিনীর এ সংখ্যা দেবাশীষদার কবিতাটি পেয়ে সত্যি সেদিন খুব আনন্দিত হয়েছিল।
বহুবার নাক কান গলার সমস্যা নিয়ে তাঁর নিকট গেলে পরম যত্নে দেখে দিতেন।কিন্তু কবিতা লেখার অসুখ আমারও সুতরাং কোনদিন ভিজিট পরিশোধ করার সুযোগ দেননি।এমন হিতসাধনকারী ডাক্তর কবি হলে এমন বিপদও হয়।তবুও তাঁকে ডাক্তারের পাশাপাশি চেয়েছিলাম কবিতায়ও।সে সুযোগ তিনি আর না দিলেও কবিদেরকে তিনি পরমস্নেহ করতেন এখনো তাঁর স্নেহভরাহাত কবিদের প্রতি রয়েই আছে।
এতগুলো কথা বলার দরকার নেই। তবুও করোনাকালে সময় তো কম নেই তাই এই কথাগুলো একটু বলেই ফেললাম।
সকল সন্যাস শেষে কবি দেবাশীষ তরফদার আবারও কবিতায় আসবেন সে আশাবাদ আমাদের অন্তরে যত্নে লালিত থাক।
১৩:০৪:২০২০
রাত:০৭:২০মি
কুমারঘাট।
[29/05, 22:01] GOBINDA DHAR: স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত
একটি লিটল ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ইতিহাস:বারো
গোবিন্দ ধর
স্রোতস্বিনী
সাহিত্য সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা
শারদ ও সুবর্ণ জয়ন্তী সংখ্যা :সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ইং
-------------------------------------------------------------------
সম্পাদক :গোবিন্দ ধর
প্রকাশক:শিবুরঞ্জন দে
প্রচ্ছদ শিল্পী:নীলিমেশ পাল
প্রচ্ছদ মুদ্রণ :কালিকা আর্ট প্রেস,কৈলাসহর
বিনিময় :১০টাকা
অন্তর স্রোত
প্রবন্ধ
সাংস্কৃতিক চর্চায় রাতাছড়া :শিবুরঞ্জন দে
ছড়া
কিশোর কবি:আব্দুল বারিক
আজকে পৃথিবী :অসীমা দেব
সম্প্রীতির গান:শুভপদ্ম চাকমা
ককবরক কবিতা
কুঞ্জবিহারী দেববর্মা
কবিতা
নদীর সন্ধানে,তাসের ঘরের সন্ধানে, জন্মদাতার মৃত্যুর পর:গোবিন্দ ধর
বড়দাকে:প্রণব দেবনাথ
পাতার ব্যথা:মানসকুমার চিনি
দশ বছর পর:বিশ্বজিৎ দাস
পাষাণী মা:মণিকা বড়ুয়া
মুখ ফেরালেও গৌরী সেন:সুব্রত দেব
স্বাধীনতা তুমি:মো:আলাল উদ্দিন
বিধস্ত সময়:মন্টু দাস
শ্রেয়সীর জন্ম-১:সত্যজিৎ দত্ত
মা আছে আগুনে :নীলিমেশ পাল
মেঘের জন্য সুরের জন্য :মণিকা চক্রবর্তী
কিছুই বলেনি:প্রভাত সিংহ
নবীন ঘাসের মুখ:মনোরঞ্জন বিশ্বাস
দুঃসময়ে স্বপ্ন :শ্যামলকান্তি দে
দিন শেষে :প্রবীরকুমার সিংহ
অগ্নি:পীযূষ রাউত
গল্প
স্বপ্ন ও একটি রাত:পৃথ্বীশ দত্ত
উত্তরাশা:অরিন্দম চক্রবর্তী
পত্রাণু
হরিভষণ পাল
মনোরঞ্জন বিশ্বাস
হিমাংশুশেখর চক্রবর্তী
আলোচনা :সাময়িকী
স্রোতস্বিনী:দ্বিতীয় বর্ষ সাম্প্রতিক :মৌসুমী গঙ্গোপাধ্যায়
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে স্রোতস্বিনী :শ্রীউদ্দীপ্ত
স্রোতকথা
নদীর স্রোতের মতো সময় প্রবাহমান। আমাদের স্বাধীনতাও ৫০টি বছর প্রবাহিত হলো।ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সারাদেশের সাথে আমরাও সুবর্ণজয়ন্তী করলাম।
স্বাধীনতার জন্মলগ্নে কথাছিলো প্রতিশ্রুতি মতো কাজ হবে।অথচ মোটাভাত মোটা কাপড় কই?উলঙ্গের পিছু নির্লজ্জের দল পঞ্চাশটি বছর প্রতারণা করে করে হাঁটছে।এভাবে তো কথা ছিলনা উলুখাগড়াদের সোনার হরিণের পিছু লেলিয়ে দিয়ে হরির লুটে পকেট ভর্ত্তির।
সাংস্কৃতিক শিক্ষকদের দায়িত্ব বাঁদরদলের গড্ডালিকায় আলোকপাত করে সবাই যেন পায় খেতে রোজ ডাল ভাত এর আন্দোলন করা।
ঝড় ঝঞ্ঝা বিষাক্ত ছোবল প্রতি পদক্ষেপে আছে,সনাজকে রক্ষা করতে রোমবিষ থেকে সতর্কতাই সুস্থ সংস্কৃতির চাবিকাঠি।
*
সময়ের সাথে সাথে অনেক বক্তব্য হয়তো পট পরিবর্তন করে।কথাও হারিয়ে ফেলে সময়ের বক্তব্য। এই সুরের অন্ধকার থেকে সময়কে বের করে আলোর পথ কবে কখন আসবে আমরা অপেক্ষায়।
০৯:০৪:২০২০
সকাল:১০:৩০মি
কুমারঘাট।
[29/05, 22:01] GOBINDA DHAR: স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত
---------------------------------
একটি লিটল ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ইতিহাস :তিন
গোবিন্দ ধর
ভালোবাসার মনে :জীবন থেকে বাতিল ঘোষণা
-------------------------------------------------------------------
১৯৯৪ সাল।টকবগে রক্ত।প্রেম জেগে না ওঠে হয়।কিন্তু এ কাহিনী তা নয়।একজন অসম প্রেমিকের প্রেম প্রেম বিষয়টি মেনে নিতে পারিনি আমি ও আমার আরো দুই বাল্য বন্ধু। তারই কাহিনী।ঘটনা লেখা৷ হয়েছিল আমি তখন ক্লাস সেভেনে পড়ি।এক বন্ধু সিক্সে অন্যজন এইটে আমাদের তখনকার ঘটনা।কাঁচা হাত।লেখা হলো টান টান উন্মাদনায়।লেখাটি দেখাই নীলিমেশ পাল মহোদয়কে।তিনি জাস্ট প্রকাশ না করতে বললেন।আমার তখন কী রাগ কবির উপর।লুকিয়ে নিয়ে যাই ধর্মনগর।জয়শ্রী প্রেস কালীবাড়ি রোড।তিনি দায়িত্ব নিলেন।ছাপা হলো।১০০০ কপি। আমার মনে কত আনন্দ। নিয়ে এলাম।রাতাছড়া বাজারে যাকে পাই বিলি করছি।কেউ কেউ নিলেন সাদরে।কেউ কেউ কত তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে ফিরিয়ে দিয়েছেন। কেউ কেউ বাজারেই ফেলে গেছেন।মনে উন্মাদনা।জেদ।কত তাচ্ছিল্য এর জন্য আমাকে পেতে হলো তা হিসেবে রাখিনি।শুধু জেদ করেছিলাম আমাকে লেখতে হবে।কত কত লেখেছি।কত কত ছিড়ে ফেলেছি।
এই বইটির মায়া তখন কাটাতে পারিনি।রাজ্যের বিভিন্ন কবি সাহিত্যিকদেরকেও বিলি বন্টন করেছি।
কুমারঘাট প্রথম বইমেলায় ১৯৯৪ সালে বইটি নিয়ে টেবিল দিয়েছি।বিক্রি করেছি।খরচার টাকা প্রায় তুলেছি।তখন খরচা হয়েছিল ২৭০০ টাকা।
জয়শ্রী প্রেসে বইটি ছাপা হয়েছে অন্তত কুরুচীকর হরফে।অস্পষ্ট লেটার।বইটি আনার সময় মালিকের সাথে তুমুল ঝগড়া করেছি এরকম ছাপার জন্য।
রাজ্যের অরুণোদয় সাহা মহোদয় বইটি নিয়ে আলোচনা মূলক চিঠি পাঠিয়েছেন।
সেকেরকোটের এক পেনবন্ধু দীর্ঘ নয় পাতার আলোচনা দিয়েছেন বইটি নিয়ে।
এত সব টকবগ টকবগ বিষয় আশয় থাকা সত্বেও বইটি এর আগেও আমি আমার লেখক জীবন থেকে বাতিল ঘোষণা দিয়েছি।আবার প্রকাশ্য এই বইটি বাতিল বলে ঘোষণা দিলাম।বইটি এখনো কারো নিকট থাকলে অনুগ্রহপূর্বক চানাচুর ওয়ালার নিকট কিংবা নিকটস্থ ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করে এই বইটির অস্তিত্ব লুপ্ত করবেন।এই বইটি আমার লেখক জীবনের কোন অংশ হোক আমি চাই না।
আমার এই ঘোষণার পরেও কারো কাছে এই বইটি রক্ষিত হলে কিংবা আমার জীবনের সাথে জড়িয়ে কেউ তাকে ব্যবহার করলে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।এই ঘোষণা কেউ লঙ্ঘন করলে এই লেখককে অপদস্ত করা হিসেবে গণ্য হবে।অনুগ্রহ করে এমন করে আমার লেখক জীবনের বাতিল বইটি বাতিল রাখতে সহায়তা করবেন।
সাহিত্য আড্ডা
--------------------
কথা ছিলো আজ আড্ডা বিষয়ে লিখবো।কিন্তু শুরু করলাম নিজের বাতিল হয়ে যাওয়া বইটি নিয়ে।
স্রোতস্বিনী সাহিত্য সংস্থা প্রতি রবিবার স্থানীয় কবি সাহিত্যিক তৈরী করতে এই আড্ডায় মিলিত হতো স্রোতস্বিনীর এই আয়োজনের আগে কখনো কেউ রাতাছড়ায় লেখালেখি করতেন বলে জানা নেই। স্রোতস্বিনীর এই সাহিত্য আন্দোলন হয়তো এই ডিজিটাল সময় মনে রাখবে না।তাও আমাদের আড্ডায় ডাক পেয়ে আসতে শুরু করেন কাজলকান্তি মালাকার,ভানুলাল দত্ত, আলাল উদ্দিন, আব্দুল মতিন,বদরুল হোসেন,আকমদ আলী, মোসাহেব আলি শাহ্, মৃন্ময় দে,কুঞ্জেশ্বর সিনহা,প্রতীক সেন,নির্মল দে,শিবুরঞ্জন দে,শিবু দেসহ আরো কেয়কজন।
ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সন্তোষ রায়, দেবজ্যোতি সেন,সুতপা রায়,নীলিমেশ পাল,নীলিমা দেব,বিজয়লক্ষ্মী সিনহা,মধুমিতা দেব,অরূপরতন শর্মা,মোয়াজ্জেম আলি,পদ্মশ্রী মজুমদার প্রমুখ। কবিতা গল্প নাটক পাঠ হতো নিয়মিত।আলোচনা সমালোচনাও হতো নিরপেক্ষ ভাবে।কেউ কেউ রাগ করতেন।কোন কোন সময় উপস্থিত হতেন না।আবার ডেকে আনতাম।এরকম চলে দুই তিন বছর।তারপর শুরু হয় আরো এক জার্নি।
রাতাছড়ায় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও লিটল ম্যাগাজিন প্রদর্শনী
-----------------------------------------------------------------
১৯৯৫ সালে প্রথম রাতাছড়ায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। কবিতা ছড়া লেখা,নাটক লেখা,গল্পও প্রতিযোগিতা শুরু হয়।আঁকা ও গানও এই প্রতিযোগিতায় ছিলো।ছিলো যেমন খুশি সাজো।এরকম চললো আরো বছর চারেক।তারপর স্রোতস্বিনী সাংস্কৃতিক সংস্থায় রূপান্তরিত হয়েও আরো নতুন নতুন দিগন্তে সংস্কৃতি চর্চায় নিবেদিত হয়ে কাজ করতে করতে চলছিলো।ঠিক একই সময় থেকে লিটল ম্যাগাজিন প্রদর্শনীও চলতে থাকে।এতে হাজার হাজার দর্শক আসতেন এই অনুষ্ঠানে। আমাদের অনুষ্ঠানগুলো করতে আর্থিক সহযোগিতার জন্য চাল কালেকশন করে বিক্রি করতাম।তা থেকে অনুষ্ঠানের অর্থ আসতো।
রাতাছড়ায় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও লিটল ম্যাগাজিন প্রদর্শনী হয় চার পাঁচ বছর।তখন কেউ কেউ সরে গেলেন।
আমাদের এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হতেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পীরা।গান করতেন জ্যোতির্ময় সিনহা,নীলিমেশ পাল।লোকগীতি করতেন বীণাপানি পাল।লিটল ম্যাগাজিন প্রদর্শনীতে রাজ্যের অনেক পত্রিকা প্রদর্শন করা হয়।তখনই যোগাযোগ হয়েছিল রমাপ্রসাদ দত্ত আমাদের পল্টুদার সাথে।তিনি কিছু কিছু পত্র পত্রিকার কপি দিয়েছেন আমার গবেষণাগারের জন্য।তখন প্রদর্শনীতে রবি পত্রিকাও রেখেছিলাম।পল্টুদা এক সময় বলেছিলেন আমাকে তাঁর অবর্তমানে রমাপ্রসাদ গবেষণাগারের দায়িত্ব টাস্টে রাখবেন।সকল পত্র পত্রিকার একের অধিক সংখ্যাগুলো তিনি আমাকে দান করবেন।কিন্ত আমি তত কি আর যোগাযোগ রেখেছি শেষ অব্দি? মাঝে মাঝে যেতাম।তাও বছরে বইমেলার সময় এক আধ বার।তা তিনি কি আর মনে রেখেছিলেন?হ্যাঁ কথাটি মনে ছিলো তাঁর। যখনই যেতাম কথা হতো।কিন্তু মৃত্যুর সময় আমি আর কাছে ছিলাম না।মৃত্যুর বহুদিন পূর্ব থেকেই সে রকম আর আগরতলা আমার যাওয়া হতো না।কারণ যাওয়া আসা ছিলো বিরাট বাঁধা। সে সময় সকালে বের হলে সারাদিন এসকর্টের ঝামেলা শেষে রাতে গিয়ে পৌঁছাতে হয় আমাদের। সে জন্য বছরে শুধু বইমেলায় যাওয়া হতো।
স্রোতস্বিনী সাংস্কৃতিক সংস্থা আয়োজিত এই সকল লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় উদ্বোধক হিসেবে আম্বেদকর মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ড.এ বি বর্ধন থেকে আরো উল্লেখযোগ্য অনেকেই আসেন।উদ্বোদক হিসেবে তৎকালীন বিধায়ক বিজয় রায় ও বিধুভূষন মালাকার কুমারঘাট নগর পঞ্চায়েতের চেয়ারম্যান নিতাই দে মহোদয়ও উপস্থিত হয়েছিলেন।
এই সাফল্য রাতাছড়া এমড়াপাশা তরুণীনগর সায়দাপারের জনগণের। এতেই সে সময় কেউ কেউ হিংসেয় জ্বলে উঠেন।কেউ কেউ সংস্থা থেকেও বেরিয়ে যান।কেউ কেউ সম্পাদক হওয়ার কম লড়াই করেননি।যদিও আমাদের প্রতি বছর বাৎসরিক সম্মেলনে গোপন ভোটাভুটিনির্ভর কার্যকারী কমিটি গঠন হতো।
(চলবে)
০২:০৪:২০২০
রাত:০৮:৩০মি
কুমারঘাট।
[29/05, 22:02] GOBINDA DHAR: স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত
একটি লিটল ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ইতিহাস:ঊনিশ
গোবিন্দ ধর
ত্রিপুরার লেখক যখন প্রকাশক
---------------------------------------------
ত্রিপুরায় লেখক সম্পাদকরাই পরবর্তী সময় প্রকাশনায় আসেন গ্রন্থ নির্মানকে ভালোবেসে।লাভালাভের জন্য প্রথমত কোন প্রকাশনা বই ছাপতে প্রকাশ করতে আসেননি।সময়ের নিরিখে কোন কোন প্রকাশনা লাভের মুখ দেখলেও অধিকাংশ প্রকাশনা প্রকাশনায় আসেন লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ করতে করতেই। বিষয়টিকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসেন বলেই।তার কিছু কিছু তুলে ধরলাম।বিস্তৃত নয় এগুলো।কারণ এর থেকে শুধু স্রোতের অবস্থান চিহ্নিত করার প্রয়াস থেকেই এই আয়োজন।
★পিলাক প্রকাশনী ও শঙ্খপল্লব আদিত্য ★
শঙ্খপল্লব আদিত্যের পরিচয় দেওয়ার দরকার নেই।তিনি আমাদের রাজ্যের কবিদের মুখ। তিনিও পিলাক প্রকাশনী থেকে পীযূষ রাউতের, জন্মজুয়াড়ী প্রকাশ করেন।নামগুলো তাৎক্ষণিক মনে পড়ছে না।তিন চারখানা বই পিলাকের সম্মানকে আজও অস্বীকার করার কোন জায়গা ত্রিপুরার হয়নি।পিলাক তার প্রকাশনা চালু রাখলে হয়তো অনেকেরই প্রকাশনায় আসতে হতো না।
পিলাক থেকে প্রকাশ হয়েছিল কবি বিজনকৃষ্ণ চৌধুরীর 'সেতুবন্ধ ও অন্যান্য কবিতা' নামক কাব্যগ্রন্থটিও।
শঙ্খপল্লব আদিত্য প্রকাশনায় এসে অনেকগুলো গ্রন্থের প্রকাশ করেন।তিনি পীযূষ রাউতের নষ্ট আশ্বিনের কবিতা নামে সম্ভবত একটি বই করেছিলেন।কবি পীযূষ রাউত বইটি বাতিল করেন ভুলে ভরা প্রকাশ ছিলো বলে।অথচ পীযূষ রাউত এর সেই বইয়ের কবিতাগুলে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত ছিলো।সুখময় ঘোষের সুরেন মহাজনের সমুদ্র যাত্রা,(গল্প),রমাপ্রসাদ দত্তের ত্রিপুরায় রবীন্দ্র সংঙ্কৃতি(প্রবন্ধ),দুটি বইও প্রকাশ পেয়েছিল পিলাক প্রকাশনা থেকে।শঙ্খপল্লব আদিত্যের ছাপাখানার নাম ছিল পাণ্ডুলিপি।আগরতলার প্যারীবাবুর বাগানে ছিল এটি।
হ্যাঁ পিলাক বিষয়ে আরো লেখা দরকার।আমাদের একজন শক্তিশালী কবি শঙ্খদা। তিনি প্রকাশনায় না এলে কি এমন ক্ষতি ছিলো।কিন্তু রাজ্যে প্রকাশনায় তিনি প্রথম দিকের সৈনিক।তখন লেটার প্রেসের আমল।লিনোকোটে প্রচ্ছদ হতো।
★পৌনমী প্রকাশন ও নিলিপ পোদ্দার★
আমাদের রাজ্যের লেখকের মধ্যে উল্লেখ্য গল্পকার নিলিপ পোদ্দার। প্রথম দিকে রাতুল দেববর্মণও এর যৌথ সম্পাদনার সাথে যুক্ত।১৯৭৩সালে লিটল ম্যাগাজিন,পৌনমী শুরু করেন কবি রাতুল দেববর্মণসহ যৌথভাবে।সময়ের তাগিদে পৌনমী প্রকাশন একদম।দশ টাকা পাঁচ টাকার গল্প থেকে শঙ্খপল্লব আদিত্যের কবিতা এক একটা বই যেন মুদ্রিত শিল্প। শঙ্খপল্লব আদিত্যের কবিতা বইটির কবি শঙ্খপল্লব আদিত্য মহোদয় পেলেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য পুরস্কার।পৌণমীর বই আমাদের অহংকার।
★সৈকত ও মানস পাল★
সৈকত ত্রিপুরার একটি উল্লেখযোগ্য লিটল ম্যাগাজিন।কবি মানস পাল(Saikat Prakasan) ছড়াও লেখেন।এক সময় প্রকাশনায় আসেন।সৈকতের বই পাঠকের কাছে নিশ্চয়ই রুচিশীলতায় উত্তীর্ণ। আমার নিজস্ব পাঠ তালিকায় সৈকতের অনেক বই এখনো সুরক্ষিত।সৈকত কাগজটিও এখনো প্রকাশিত হয়।
★কাকলী ও চুনী দাশ★
অনেকগুলো ছড়া সংকলন কাকলী থেকে প্রকাশিত।মূলত চুনী দাশের ছড়ার বইগুলো প্রকাশিত হয় কাকলী প্রকাশনী থেকে।
★স্বাগতম ও সুভাষ সাহা★
স্বাগতম থেকে গল্প প্রবন্ধের বই বের হয়।সুভাষ চন্দ্র সাহাও রাজ্যের একজন গল্পকার। বর্তমানে বয়সজনিত কারণে অঞ্জনদা কাজটি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনিও বেশ কিছু কাজ করে যাচ্ছেন।
★জ্ঞানবিচিত্রা ও দেবানন্দ দাম★
কবিতা দিয়ে শুরু দেবানন্দ দামের।তারপর বাংলাভাষায় বিজ্ঞান আন্দোলনে রাজ্যে পথিকৃৎ। সাহিত্যের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বই জ্ঞানবিচিত্রার অহংকার আমাদেরও।
★ভাষাসাহিত্য ভাষা প্রকাশন★
ভাষাসাহিত্য ভাষা ট্রাস্টের একটি উল্লেখযোগ্য সাহিত্য পত্র।কল্যাণব্রত চক্রবর্তী রামেশ্বর ভট্টাচার্য দিলীপ দাস মাধব বণিক কৃত্তিবাস চক্রবর্তী অশোকানন্দ রায়বর্ধন সদানন্দ সিংহ কাকলী গঙ্গোপাধ্যায় সহ একটি বলিষ্ট লেখক সংস্থা। এরাজ্যের বুকে প্রথম লেখকদের একটি একত্রে পথচলার প্রতিষ্ঠান।
সাহিত্যপত্রের সাথে সমান তালে ভাষা প্রকাশন আমাদের রাজ্যে লেখক দ্বারা সমবেত ভাবে পরিচালিত একটি প্রকাশন সংস্থা।ভাষাও পরিশীলিত কাজ করে পাঠকের নজর কেড়েছেন।
★জলজ সাতদিন একটি আন্দোলন★
একদম জলজ সাতদিন সন্তোষ রায় সমান সমান। এটাও লেখা দরকার।জলজ একটি আন্দোলন।যার মূল কান্ডারী কবি সন্তোষ রায়।সাথে একঝাঁক তরুণ তুর্কি অভিজিৎ চক্রবর্তী তমাল শেখর দে সিদ্ধার্থ নাথ বাপ্পা চক্রবর্তী।ত্রিপুরার লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনে ক্রমাগত পদক্ষেপ নিয়েছে জলজ।কিছুদিন পর জলজের প্রকাশন শাখা সাতদিন এই বিহঙ্গকাল সহ বাপ্পা তমাল অভিজিৎ সিদ্ধার্থের বই প্রকাশের পাশাপাশি আরো অনেকগুলো কর্মকান্ড করে দেখিয়েছেন।জলজ লিটল ম্যাগাজিন উৎসব তাদের একটি উল্লেখযোগ্য কাজ।
★জ্ঞান বীক্ষন প্রীতম ভট্টাচার্য★
প্রীতম ভট্টাচার্যও একজন কবি।তিনি নিজেও রাজ্যের প্রকাশনায় কাজ করছেন।বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা প্রসারে তার নিরলস কাজ আমাদেরকে উৎসাহিত করে।
★তুলসী নীলুৎপল সরকার★
তরুণ আইনজ্ঞ নীলিুৎপল সরকার ছিলেন গল্পকার। গল্প লিখতে লিখতে চলে এলেন প্রকাশনায়।
★অনার্য রসরাজ নাথ★
অনেকগুলো বই অনার্য থেকে এক সময় প্রকাশিত।তিনি একজন কবিও।অনার্স একটি কবিতারও কাগজ।
★মুখাবয়ব ও দেবব্রত দেব★
তাঁর দীপ্ত পদচারণা গল্পে।এখনো লেখনি কথা বলে।তাঁর অন্তস্থল আমাদের (স্রোত প্রকাশনার)একটি উল্লেখযোগ্য গল্প সংকলন।মুখাবয়ব আমাদের অনেকগুলো উল্লেখযোগ্য সংখ্যা উপহার দিয়েছে।একটি লিটল ম্যাগাজিন মুখাবয়ব।
দেবব্রত দেবও আমাদের রাজ্যের প্রকাশনায় এলেন।তাঁকে লেখক তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সাহস এ রাজ্যে নয় গোটা বাংলা সাহিত্যে হয়নি।
★সোমবার চারুকৃষ্ণ কর★
সাহিত্য সাময়িকী থেকে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বইও প্রকাশিত সোমবার করেছেন।চারুকৃষ্ণ কর এলজন কবিও।
★ত্রিপুরা দর্পণ ও সমীরণ রায়★
এক সময় ত্রিপুরায় সংবাদ সাহিত্য আন্দোলনে রাজ্যের মুখ ছিলো ত্রিপুরা দর্পণ। সমীরণ রায়ের স্নেহপুষ্ট হননি এমন তরুণ রাজ্যে কমই আছেন।নৃপেন চক্রবর্তীর লংতরাই আমার ঘর উপন্যাস লাইন দিয়ে বইমেলায় বিক্রি হয়।তাতে স্টলে বসে নৃপেন চক্রবর্তীর অটোগ্রাফ নেওয়ার কী হিড়িক সেদিন আগরতলা বইমেলার পাঠক ত্রিপুরা দর্পণে এসে পড়ছিলো এসব নিজের চোখে দেখা।
★ত্রিপুরাবাণী ও রঘুনাথ সরকার★
রঘুনাথ সরকারও একজন লেখক।তাঁর সম্পাদিত অনেকগুলো বই ভাবীকাল মনে রাখবে।ত্রিপুরাবাণীও একটি সপ্তাহিক সংবাদপত্র।
মোটামুটি এই প্রকাশনার কর্ণধাররা লেখক হয়েও ত্রিপুরার প্রকাশনা শিল্পে একটি বাঁক আনতে সাহসী পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
★তৃণতট ও একঝাঁক তরুণদের মুখাবয়ব★
আকবর আহমেদ তপন দেবনাথ আব্দুল আলিমদের মৃগয়াভূমি তৃণতট।সকলেই কবিতার ক্ষেত্রে নিজেদের মতো করে লিখে যাচ্ছেন কিন্তু প্রকাশনীটির দিকে আর কেউ মনোযোগ দেননি।
সম্ভবত ছুটির ঘন্টা,তপন দেবনাথের কবিতা সংকলনসহ অনেকগুলো গ্রন্থের প্রকাশ তৃণতটের।
তৃণতট লিটল ম্যাগাজিন পরবর্তী সময়ে তৃণতট প্রকাশনী নামেও বেশ কিছু বই প্রকাশ হয়েছে।আকবর আহমেদ, আব্দুল আলিম,তপন দেবনাথ, অপাংশু দেবনাথ, গোপেশ চক্রবর্তী ও পঙ্কজ বণিকরা ই প্রকাশনার চালিকাশক্তি ছিলেন।তপন যদিও এখন আর আমাদের মাঝে নেই।
★অন্যান্য প্রকাশনা★
বিদ্যা প্রকাশের প্রশান্ত ভট্টাচার্য, মানবীর কল্যাণী ভট্টাচার্য, রাইটার্সের দীনেশচন্দ্র সাহা,আবহমানের অনুপ ভট্টাচার্য ও দুলাল ঘোষ,সপ্তপর্ণার নিয়তি রায়বর্মন, বর্ণমালার ফুলন ভট্টাচার্যও এই ইতিহাসের অংশিদার।
★স্রোত প্রকাশনা★
শুধু সাধে স্রোত লিটল ম্যাগাজিন হয়েও প্রকাশনায় আসেনি।স্রোত পরিবারের প্রত্যেকেই কমবেশী কবিতা গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ কমিক্স ছড়া চর্চা করেন। করছেন এখনো।রাজ্যের লেখালেখির ইতিহাস বিকৃত করে লেখা হলে কথাকার ও কবি পদশ্রী মজুমদার অক্ষর শ্রমিক গোবিন্দ ধরকে বাতিল করা যেতে পারে।অন্যতায় এমন কোন ঘটনা এখনো ঘটেনি তাঁদের লেখনি থেমে যাওয়ার।সুতরাং প্রকাশক সুমিতা পাল ধরও একজন কবি হয়েও কেন স্রোত প্রকাশনা করতে হলো তার একটি ইতিহাস থাকবে না? ত্রিপুরায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলন থেকে বই প্রকশনায় একটি অন্য মেজাজ ও তরুণ কবি সাহিত্যিকদের সব সময় অগ্রাধিকার দিয়ে স্রোত প্রকাশনাও পাঠক লেখকের নজর কাড়তে পেরেছে নিশ্চয়ই।
এছাড়াও আরো অনেকেই লেখক হয়েও লিটল ম্যাগাজিন বই প্রকাশ করে রাজ্যের সাহিত্য ও সাহিত্যিকদের পাশে আছেন।
এ রাজ্যের প্রকাশনা শিল্পের সাথে যারা যুক্ত সকলেই লেখালেখি কিংবা লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক কিংবা সংবাদ সাহিত্যের সাথেই যুক্ত।
স্বত্বও ধীরে ধীরে রাজ্যে দেওয়াও শুরু হয়েছে।এটা আনন্দের।স্রোতও লেখকস্বত্ব দেওয়া শুরু করেছে।
রাজ্যের প্রকাশকরার সাধ অনেক।সাধ্য কম।পাঠক লেখক প্রকাশকের যৌথ অলিখিত একটি মৌয়ের ফল আমরা বিশ্বাস করি।সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ত্রিপুরার প্রকাশনা সারা বাংলা সাহিত্যে নিজস্বতার চিহ্ন নিশ্চয়ই রাখতে পারছে বলে বিশ্বাস করি।
১৪:০৪:২০১৮
সকাল:০৯টা
আমবাসা।
[29/05, 22:02] GOBINDA DHAR: স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত
একটি লিটল ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ইতিহাস:এগারো
গোবিন্দ ধর
দ্বিতীয় বর্ষ:২৬শে সেপ্টেম্বর :১৯৯৬ইং
নির্বাচিত কবিতা
-----------------------
বিশ্বজিৎ দেব
পবিত্র সামারিটান
দিগন্তের কাছে কিংবা দূর থেকে এসে
কোল জুড়ে থেকে যেতে চাওয়া,প্রকৃত
এসব কোন দাবিই ছিল না,অথবা
তাৎপর্যপূর্ণ ছিল না মালঞ্চপোকাদের এত পীড়াপীড়ি!
তবু,জেরুজালেমগামী পবিত্র সামারিটান
মসৃনতাহেতু সর্পিল হয়ে পাশ কেটে চলে যেতে পারো
যেরকম ক্ষতের দূরত্বে চলে যায় তুলো,
যেভাবে লুটিয়ে পড়তে চেয়ে জোছনা পিছলে পড়ে -
সুষমাময়ীর ঘাড় হয়ে, সেও মসৃনতাহেতু!
এনিয়ে ডিমের ভেতর থেকে ভোর হলে
শহরের রাস্তায়, পাঁচ মাথা,ছমাথা,কিংবা মাথাহীন
সোজা রাস্তায় পুচ্ছউড়িয়ে যখন সতী ও অসতীরা
যায়,এদের দেখি এবং দেখে দেখে তুলনায়
চক্ষু তুলে ভাবি তুমি তো অনন্য ছিলে,ছিলে পৃথক আকাশ
পবিত্র সামারিটান।
কবির অনেকগুলো কবিতা সংকলন। ঊণকথন,খণ্ডপাড়ায় জলবার্ষিকী, ধর্মগোধূলী,শ্রেষ্ঠ কবিতাসহ ছয়টি।এ পর্যন্ত কবিতাটি সংকলিত হয়নি।ঐ সময় কবিতাটি গড্ডালিকা থেকে সতন্ত্র ছিলো তা সময়ের ব্যবধানেও অনুমেয়।
সেলিম মুস্তফা
দক্ষিণা
আমাদের
অজ পাড়া গাঁয়েও
শেষ পর্যন্ত এসে গেল
শহরের বাঘ-
হালুম!
খাবে
আমাদের অঙ্গ -প্রত্যঙ্গ,
প্রতিশ্রুতি সততা
কিছু যাবে
মালুম
কিছু তো যাবেই!
সেলিম মুস্তফা ত্রিপুরার একজন উল্লেখযোগ্য কবি।ছুরার বদলে একদিন,বাহান্ন তাসের পর,ইতি জঙ্গল কাহিনীসহ তাঁরও ছয়ের অধিক কবিতা সংকলন প্রকাশিত।
নীলিমেশ পাল
অনুরাগ নেই বিরাগও
যতোবার ফিরে যেতে চাই
যতোবার ফিরে ফিরে আসি
অহনা বিবেকঘামে
কাতুকুতু কথার ফুসকুড়ি
ছেঁড়াখোঁড়া করতলে
অনুরাগ নেই বিরাগও
যদি হাত ধরো-
নিঃশব্দে হাজার মাইল হেঁটে যাবো
স্পর্ধার কাঁধ ছুঁয়ে
নেমে যাবো নিঃসীম গহীনে।
যে ভাবে জেগেছে রাত
যে ভাবে চাঁদের ছায়ে
নিস্তব্ধ রাত্রির প্রহরা---
তারপর ঘুম ভাঙলে
কুয়াশা কাটার আগেই
ফিরে যাবো শনৈঃ শনৈঃ
যেখানে রোপন করেছিলাম অশ্বত্থবীজ
নীলিমেশ পাল এখনো কোন সংকলনে নিজের সৃষ্টি একত্রে আনেননি।শুধু তাঁর ছড়া সংকলন, বুদবুদ আমাদের পাঠক চিত্তে কিছুটা পাঠ আনন্দ দিয়েছিলো।
মণিকা চক্রবর্তী
দৃষ্টিহীনের বুলি
এই তো সেদিন তোমায় দেখেছি
রাত্রির সাথে কথা কও
এই তো সেদিন তোমায় দেখেছি
পারানির কড়ি ফাঁকি দাও।
মুষ্টিভিক্ষা চেয়ে চেয়ে
নিজের মুষ্টি ভরেই নিলে
অবশিষ্টের ঝোলনাটাকে
অবশিষ্টই রেখে দিলে।
রাতদুপুরে ঘুম ভেঙেছে
ভোরের পাখি মান করেছে -
রাতের শেয়াল খেয়াল করে
দরজা দু"টো ফাঁক করেছে।
ঘুলঘুলিতে আলো দেখেছি
তোমার চোখে ঘুম দেখেছি,
রাতের নীরব কথা শোনে
নকশী কাঁথার জাল বুনেছি।
এই তো সেদিন তোমায় দেখেছি
মেঘের সাথে পাল্লা দাও...
এই তো সেদিন তোমায় দেখেছি
আলোর সাথে দাঁড় যে বাও।
মণিকা চক্রবর্তীর একটি কবিতা সংকলন এখন অব্দি আমরা পাই।প্রয়াস লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করে সাহিত্যে তিনি সময়কে উসকে দিয়েছিলেন।
মিলনকান্তি দত্ত
ব্যক্তিগত শব্দাচার
এক.
খারাপ লোক আরও খারাপ হলে
ঈশ্বর জানেন।
ভাললোক কিন্তু ভাল না হলে
আমাদের বিশ্বাসের হাঁটু ভেঙে যায়।
আমরা অর্থাৎ যারা ভালমানুষের
কাছে লজ্জা পেলেম
দারুণ পরাভূত হই এবং
মনে ভাল কিছু জমা পড়লে খামকা কেঁদে উঠি।
দুই.
একটি সাধারণ জোঁক কত অসামান্য
হয়ে উঠতে পারে
যখন কোথাও লেগে থাকে।
তিন.
জীবভূত সনাতন জোঁক, মুখে নুন
দিতেই লক্ষ্য করা গেল অতিলাল
মৃত্যুমহিমা
কতটা তার নিজের।
চার.
জোঁকের গল্পে মেয়েরা ভয় পায়,
গল্পের জোঁক তাদের ক্ষত করে-
একান্ত সুশ্রী মেয়েরাই জোঁক
ভালবাসে!
পাঁচ.
আমার জ্যাঠামশায়ের নাম হরি-
আমার বারার নাম মদনমোহন-
আমার কাকার নাম কানাইলাল-
আমার একমাত্র পিসির নাম রাধা-
এবং তিনটি পুরুষ একটি মহিলাতে
এ যাবৎকালেও কোন বিচ্ছেদ নাই।
আমি মিলনকান্তি দত্ত,
শুধু এই বিষয়ে একটি পদ্যের
পিতা ও প্রেমিক।
মিলনকান্তি দত্ত ত্রিপুরার সাহিত্যে বৃক্ষপ্রতীম নাম।তাঁর করতল পৃষ্ঠে,ফট,মেহগনি কাঠের হরিণ, মিলনকান্তি দত্তের কবিতা,শ্রেষ্ঠ কবিতাসহ অনেকগুলো সংকলনের তিনিই পিতা ও প্রেমিক।
স্রোতস্বিনী দ্বিতীয় বর্ষের সংখ্যা থেকে এরকম আরো বেশ কিছু কবিতা তুলে দিতে পারতাম।সত্যজিৎ দত্ত,পীযূষ রাউত,মণিকা বড়ুয়া তাঁদের মধ্যে অন্যতম।এ রাজ্যের কবিতার আকাশ এখনো এ সংখ্যার অনেক কবি আলোকিত করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সংখ্যা থেকে এরকমই কিছু কিছু নির্বাচিত কবিদের কবিতা পাঠকের সাথে শেয়ার করবো।(চলছে)
০৮:০৪:২০২০
রাত:০৭:৩৫ মি
কুমারঘাট।
[29/05, 22:03] GOBINDA DHAR: স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত
একটি লিটল ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ইতিহাস :একত্রিশ
গোবিন্দ ধর
আগরতলা বইমেলা ২০১৪
১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৪ স্রোত প্রকাশনার স্টলে বিশিষ্ট সাহিত্যিক বাংলাদেশের জনাব আনিসুজ্জামান স্বস্ত্রীক। আমাদের বই নেড়ে দেখে তিনি আনন্দিত।সাথে পশ্চিমবঙ্গের কবি দীপিকাবালা বিশ্বাস এবং স্রোত সাহিত্য পত্রের সম্পাদক কবি ও অক্ষরশ্রমিক গোবিন্দ ধর।
এই আমাদের পথ চলা।আমরা আপ্লুত।আনন্দিত।
গর্বিত।গৌরবান্বিত।
সময়ের বাতিঘর আনিসুজ্জামান তিনি নেই আর। এ বড় অভাব:১৪:০৫:২০২০। তিনি নেই। তাকে সময়ের বাতিঘর বলা হয়।সেদিন তাঁকে চনমনে প্রাণবন্ত উৎসবমুখর একজন বলিষ্ঠ পুরুষ হিসেবে কিছুক্ষণ কাছে দাঁড়ানোর সময় পাই।মনে হয়েছিল একটি বৃক্ষের নিকট ছায়ায় জিরিয়ে নেবার আরাম কত উৎফুল্ল করে মন সেরকমই। তাঁর সাথে যে কয়টি বাক্য বিনিময় হয়েছিল তাতেই আমার বোধগম্য হয় তিনি সময়ের বাতিঘর। তাঁর সাথে একটি সাক্ষাৎকার আছে আমার সে ভিডিও ধারণ করা বাংলাদেশের কবি ও ছড়াকার সাংবাদিক ঝর্ণা মনির নিকট।কখনো বাংলাদেশ গেলে তা নিশ্চয়ই প্রকাশ হবে।
তিনি সত্যিই জাতির বিবেক,বাতিঘর। আমাদের মাথার উপর ছায়াঘর। মাথার উপর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সমস্ত ছায়াবৃক্ষ। আজ একটু আগে চলে গেলেন আনিসুজ্জামান স্যার। এই অসময়ে তাঁকে বিদায় বলতে গিয়ে মনে হল এ জগত সভায় তাঁর উপস্থিতিই প্রবল, অনুপস্থিতির অবকাশ নেই। তা়ঁর অন্তরীক্ষ যাত্রায় স্রোত প্রকাশনারও অশেষ শ্রদ্ধা রইলো।
চলে গেলেন অামাদের চেতনার বাতিঘর, সর্বজন শ্রদ্ধের শিক্ষাগুরু, জাতীয় অধ্যাপক অনিসুজ্জামান স্যার। হৃদয়টা শূন্য হয়ে গেলো। অভিভাবকহীন হলাম অামরা। অভিভাবকহীন হলো শিল্প-সাহিত্য অঙ্গন।এই অভাব সারা বাংলা ও বাঙালির।তাঁকে আমাদের হৃদয়ের শ্রদ্ধা।
১৪:০৫:২০২০
সন্ধ্যা:০৫:৫৩মি
কুমারঘাট।
[29/05, 22:04] GOBINDA DHAR: স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত
একটি লিটল ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ইতিহাস:তেইশ
গোবিন্দ ধর
ত্রিপুরার বইপত্র পাঠক ও আমরা
ত্রিপুরার বই বাজার খুব ছোট। ৩৬-৩৭ লক্ষ মানুষ।
প্রতি ১০০০ জনে ১ জন বই পড়েন ধরলে বই পড়েন ৩৬ হাজার -৩৭ হাজার মানুষ। হয়তো এর মধ্যে খানিকটা সিরিয়াস বই পড়েন ১%।মানে ৩৬০০-৩৭০০ মানুষ।
তো, এই ৩৬-৩৭ হাজার মানুষের ১% অর্থাৎ ৩৬০-৩৭০ জনের কাছে আমাদের ভাল বইয়ের খবর, ভাল বই ঠিক মতো পৌঁছায়?যদি পৌঁছাতো তাহলে আমাদের রাজ্যের কবি সাহিত্যিকের এক একটি বই ছাপা ২০০-২৫০ খুব বেশি হলে ৩০০ বই বিক্রি হতে কতদিন সময় লাগবে?নিশ্চয়ই ১০-১২ বছর নয়?হ্যাঁ কোন কোন বই প্রকাশের সাথে সাথে বিক্রি হয়ে যায়।তা নিশ্চয়ই বইটির করিস্মা নয়।লেখক ও প্রকাশনার ব্যক্তিগত প্রচার প্রসারই বইটি বিক্রির গোপন সফলতা।
যদিও এমন রেকর্ড আছে শঙ্খ পল্লব আদিত্যের নির্বাচিত কবিতা বইটিও প্রথম বইমেলায় বারোতম গ্রাহক আমিই ছিলাম।ঐ মেলার শেষ দিনের শেষ পাঠক আমি নিজে প্রকাশকের তৎকালীন মৌখিক বয়ান অনুসারে।
অথচ আমাদের রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ১% লোকজন বই পড়লেই আমাদের বই বাজারের ক্রেতা সংখ্যা হতেন ৩৬-৩৭ হাজার।যদিও বাংলাদেশের ১৮কোটি লোক সংখ্যার তুলনায় যত পাঠক ও ক্রেতা আছেন আমাদের ত্রিপুরা রাজ্যোর পাঠক তত নয়।কলকাতার মতোও নয়।
রাজ্যের প্রকাশকরা প্রতি বছর অনেক বই করেন।কারো কারো পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৩০০-৪০০ নতুন বই প্রকাশিত হয়।
আমাদের ত্রিপুরায় বই বিক্রেতাদের তিন চারটে সংস্থা আছে।
ত্রিপুরার প্রকাশকদের সব থেকে বড় সংস্থা ত্রিপুরা প্রকাশনা মঞ্চ। সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত সংস্থা।
সাহিত্যের বই প্রকাশকদের সংস্থা: ত্রিপুরা পাবলিশার্স গিল্ড। তারপর পাঠ্য বই বিক্রেতার সংস্থা,:বুক সেলার্স এন্ড পাবলিশার্স গিল্ড,আর আছে :অল ত্রিপুরা বুক সেলার্স এন্ড পাবলিশার্স সমিতি এরকমই কিছু।
সারা বছর এখন ত্রিপুরায় বই-পুস্তক পত্র-পত্রিকা প্রকাশ হয়েই চলেছে।
কিন্তু দূর্ভাগ্য হলেও সত্যি সেই তুলনায় পাঠক তৈরী র আন্দোলন সেরকম কোন সংস্থা করেন না।বইমেলায় পাঠক বাড়েন নিশ্চিত। কিন্তু শুধু বইমেলা হলেই আকাশ থেকে পাঠকবৃষ্টি হয় কি?বইমেলা পাঠক বাড়াতে সহায়ক কিন্তু একমাত্র উপায় নয়।পাঠক বাড়াতেও চাই সচেতন ভাবে গিল্ড ও সরকারের যৌথ উদ্যোগ।নতুন নতুন পাঠকদের আকৃষ্ট করা যায় এমন ভাবনা চিন্তার মনন সমৃদ্ধ আয়োজন করে যাওয়া চাই।
ত্রিপুরায় কোন প্রকাশনা সে কাজটি করেন তা বিচার হবে আগামী কোন এক সময়।
কিন্তু পাঠক তৈরীর চেষ্টা চলুক না হয় ত্রিপুরা নয় গোটা পাঠ মানচিত্র থেকে একদিন মশারীর ভেতর মোবাইলযুদ্ধের ভাইরাস কেড়ে নেওয়া মননগুলো আর ফিরে পাবো না আমরা।
আমাদের মনন কিন্তু বই পাঠ করতেই চায়।শুধু একজন পাঠক আরো একজন মানুষকে ক্রমাগত পাঠ অভ্যাসের অনুপ্রেরণা দিয়ে গেলেও আমাদের পাঠক সংখ্যা বাড়তে পারেন।পাশাপাশি রাজ্যের সকল সরকারী কর্মীদের মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষক অধ্যাপক।অন্তত এই শিক্ষক অধ্যাপকদেরকে সরকার বাধ্য করুন বই পাঠ অবশ্যই করতে লাগবে এরকম মেমো জারী করে।আর তাতে মেমো হোক বছরে অন্তত ১২টি বই না পাঠ করলে প্রতি বছরের ইনক্রিমেন্ট বন্ধ হবে।বইগুলো পাঠ সত্যি সত্যি একজন শিক্ষক করলেন কি তারও পাঠ বিষয়ক প্রশ্ন থাক।এতেও যদি আমরা আমাদের পাঠক বাড়াতে পারি তাহলেও ত্রিপুরার লোকজনদের মধ্যে আরো চেতনার আলোক প্রবাহ প্রবেশ হবে।
তখন আমরা আরো সমৃদ্ধ হবো।আমাদেরই শুভ হবে।
প্রকাশক ও সরকার এই উদ্যোগ ক্রমাগত করে গেলেই ত্রিপুরা আরো আলোক দীপ্ত হবে।
০৯:০২:২০২০
সকাল:০৫:৩০মি
কুমারঘাট।
[29/05, 22:04] GOBINDA DHAR: আজকালের প্রতিবেদন :বিশালগড়,১২ জুন-সহিষ্ণুতা,মানবতার বার্তা দিয়ে শেষ হল স্রোতের " উত্তর-পূর্ব কথা সাহিত্য উৎসব:২০১৭"।গেল কয়েক দিন সাহিত্য নক্ষত্রদের উপস্থিতিতে ঝলমল করছিল আগরতলা।বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক ড.সেলিনা হোসেন,নুরুদ্দীন জাহাঙ্গীর,পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসেছিলেন রামকুমার মুখোপাধ্যায়,মেঘালয় থেকে এসেছেন স্ট্রিমলেট ডখার, আসাম থেকে এসেছেন সুশান্ত কর,তপন মহন্ত, নেপাল থেকে এসেছেন সরু কাবিয়া'র মতো খ্যাতনামা কথা সাহিত্যিকরা।উপস্থিত ছিলেন কবি মধুমঙ্গল বিশ্বাস,বিভা বসু,ফাল্গুনী চক্রবর্তী প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিকরা। এরমধ্যে রয়েছেন-কল্যাণব্রত চক্রবর্তী,চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং,এল বীরমঙ্গল, স্নেহময় রায় চৌধুরি প্রমুখ। রবিবার রাত সাড়ে ৯ টায় শেষ হয় অনুষ্ঠান।রবীন্দ্রভবনের দুই নম্বর হলে।রবিবার বিকেল সাড়ে তিনটায় উৎসবের উদ্বোধন করেন মহারাজা বীরবিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্জ ড.গৌতম বসু।মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন,ড.সেলিনা হোসেন,রামকুমার মুখপাধ্যায়,স্ট্রিমলেট ডখার,চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং।সভাপতিত্ব করেন কল্যাণব্রত চক্রবর্তী।উদ্বোধকের ভাষনে ড.গৌতম বসু বলেন,সমাজে গণতান্ত্রিক চেতনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।বেকার সমস্যা নিয়ে কথা হচ্ছেনা।দেশে সম্পদ আছে। তবু আমরা যা চাই তা পাইনা কেন ভাবতে হবে।তিনি বলেন যারা তথাকথিত সাহিত্যিক নয় তাদের মধ্যেও অনেক দর্শন তত্ত্বের প্রকাশ হয়।যারা তথাকথিত সভ্যতা থেকে দূরে আছেন তাদের কাছ থেকেও কখনো দার্শনিক চেতনার আঁচ পাওয়া যায়।সবার প্রত্যাশা কথা সাহিত্যিকরা পথ দেখাবেন।কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন,মানবতা যখন পদদলিত হয় কথাসাহিত্যিকরা চুপ করে থাকতে পারেনা।তিনি বলেন ক্ষমতার লোভে ধর্ম এবং রাজনীতিকে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে।নিপীড়িত হচ্ছে মানুষ।পারস্পরিক বিশ্বাস ভঙ্গ হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।তিনি আরো জানান,পারস্পরিক ধর্মকে শ্রদ্ধা করতে হবে সব অংশের মানুষকে।এখানের কলমের দায় রয়েছে।তিনি বলেন,ধর্ম নয়, আগে ভাত চাই। সেই কাজটিই আমাদের করতে হবে।লেখিকার কথায় ওঠে আসে মার্কস,এঙ্গেলসও।এপথেই ভাতের লড়াই তীব্র করতে হবে।বার্মায় রোহিঙ্গা নির্যাতন সহ,পৃথিবীর নানা প্রান্তে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে সরব হন তিনি।অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করে রাজ্যের "আওয়াজ " শিল্পীগোষ্ঠী এবং বাংলাদেশের "অভ্যূদয় সঙ্গীত অঙ্গন"স্বাগত ভাষন পেশ করেন স্রোত কর্ণধার গোবিন্দ ধর।ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন প্রাবন্ধিক দেবব্রত দেবরায়।অনুগল্প পাঠ,গল্প নিয়ে আলোচনা, নানা ভাষা,নানা অঞ্চলের সাহিত্য চর্চা নিয়েও আলোচনা হয়ে।সোমবার সকাল থেকে রাজ্য ছাড়তে শুরু করেন অতিথিরা।
[29/05, 22:05] GOBINDA DHAR: স্রোত আরো প্রবল বেগে
শুভ্রশংকর দাশ
স্রোত' যখন যাত্রা শুরু করে , তখন একটা উঠতি প্রকাশনা সংস্থার পক্ষে কাজ করা অনেক বেশি পরিশ্রমসাধ্য ছিল। অঙ্কুর থেকে স্রোত এখন বৃক্ষে পরিণত হয়েছে। মনে আছে, ৪বছর আগে যেবার প্রথম প্রকাশকের বাড়ি গেছিলাম বুঝতে পেরেছিলাম প্রকাশককে কি পরিমান ছুটোছুটি আর প্রতিকুলতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, অথচ এতকিছুর পরেও কবি/প্রকাশক গোবিন্দ ধরের আন্তরিকতার কোনো অভাব ছিল না। এই কর্মযজ্ঞ লাভের জন্য নয়। সাহিত্যের প্রতি দীর্ঘস্থায়ী ভালোবাসা না থাকলে স্রোতের প্রবাহ বাড়িয়ে তোলা সম্ভব হতো না। স্রোত এখন ত্রিপুরা তথা উত্তরপূর্বাঞ্চলের ও অহংকার। আশা করি স্রোত তার অভিজ্ঞতার উপর ভর করে , তার দোষ ত্রুটি গুলো কাটিয়ে , তার প্রবাহমানতা অক্ষুন্ন রাখবে।
প্রসঙ্গত বলে রাখা দরকার, কেউ যদি পয়সা দিয়ে বই করাতে চায় তাহলে এর জন্য প্রকাশক দায়ী নন। লেখক দায়ী। প্রকাশক লেখকের কাছে আর্থিক সহায়তা চাইতেই পারে কেননা সব বই বিনা পয়সায় করতে গেলে প্রকাশনার ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
লেখকের কাছ থেকে কোনো পয়সা না নিয়ে , কোনো শর্ত ছাড়াও স্রোত বেশ কিছু বই করেছে । আমার "বাউল মলিকিউলস'' ও এই তালিকায় আছে । আমার প্রতি প্রকাশকের এই বিশ্বাস ও ভালোবাসার কথা আমার মনে আছে ও থাকবে।
স্রোত আমাদের আরো প্রবল বেগে ভাসাতে থাকুক..
১০:০৩:২০১৯
[29/05, 22:05] GOBINDA DHAR: ৩৯ তম আগরতলা বইমেলা :২০২১
আমাদের স্টলগুলো:
ব্লক:L-স্রোত প্রকাশনা B-18
ব্লক:R-বইবাড়ি-S-05
ব্লক:B-অন্যপাঠ-S-39
উত্তর পূর্বের সাহিত্যের অন্যপাঠ
স্রোত
১৯৯৫-২০২১
"যে ভাষায় কথা বলে নদী
পাখি গান গায়,কালস্রোত
লেখা হয় পাতায় পাতায়।"
*ত্রিপুরার প্রত্যন্ত গ্রাম রাজধর মানিক্যের স্মৃতি বিজড়িত রাতাছড়া থেকে ত্রিপুরার লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলন ও প্রকাশনার জগতে এক উল্লেখযোগ্য নাম "স্রোত "।ইতিমধ্যে তিমিরবরণ চাকমা অনুদিত চাকমা ভাষায়"গীতঞ্জলী" ও সেবিকা ধরের "মানবীবিদ্যার আলোকে নারী এক ভিন্নমাত্রিক পাঠ" প্রকাশের জন্য পর পর দু'বার ত্রিপুরা সরকারের শ্রেষ্ট প্রকাশনা পুরস্কার সহ শ্যামল ভট্টাচার্যের উপন্যাস "লোদ্রভার কাছাকাছি" পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হয় স্রোত।আমরা বই ছাপি, শুধু তা নয়,বই ছেপে প্রকাশ করি উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাহিত্য সৌন্দর্য।সৃষ্টি ও নন্দনচর্চায় মুখে মুখে উচ্চারিত স্রোত।
আমাদের আরো দু'টি প্রকাশনা:বইবাড়ি ও অন্যপাঠ।লেখকদের ভালোবাসায় ঋদ্ধ স্রোত।
[29/05, 22:08] GOBINDA DHAR: স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত
একটি লিটল ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ইতিহাস:একুশ
গোবিন্দ ধর
ত্রিপুরার প্রকাশনায় প্রচ্ছদশিল্প
--------------------------------------------
ত্রিপুরায় লিটল ম্যাগাজিনকে কেন্দ্র করেই মূলত প্রকাশনা শিল্পের হয়ে ওঠা।পিলাক,বর্ণমালা,
পৌণমী,অক্ষর, ভাষা,মুখাবয়ব, স্রোত, এই প্রকাশনাগুলোর প্রচ্ছদ সম্পাদকদের সুচয়ন ও ভাবনার প্রতিফলন পাওয়া যায়।এই লাইনে আরো আরো অনেকগুলো প্রকাশনাকে আমরা যোগ করতে পারি।
লেটার প্রেস থেকে বর্তমান ছাপাছাপির বিকাশের সব ধারাতেই প্রকাশনা হয়ে আসছে নানা রকম পত্রিকা, বই।
এক সময় কভার বা প্রচ্ছদ লিনো কেটে হতো।তারপর ব্লক পেরিয়ে সিলস্কীণ হয়ে বর্তমান ডিজিটাল, মাল্টিকালারে ঝকঝকে প্রচ্ছদ ছেপে প্রকাশ হচ্ছে নানা রকমের গ্রন্থ ।
এই ক্রমের সিঁড়িগুলোতে যে সকল শিল্পীদের শ্রম মেধা ঘাম লেগে আছে তাদের নামগুলে শুধু স্মরণ করছি।
প্রথম দিকে প্রশান্ত সেনগুপ্ত প্রচ্ছদ করতেন।সেই ধারায় নীলিমেশ পাল,স্বপন নন্দী অন্যতম।
সেই সময় শৈলেশ দেববর্মন,শক্তি হালদার, সত্যেন চক্রবর্তী, ধর্মনারায়ণ দাশগুপ্ত, চিন্ময় রায়,পার্থপ্রতীম দেবও প্রচ্ছদ শিল্পকে সুন্দরভাবে তুলে ধরেন।যদিও তখন ছাপাছাপির তত সুযোগ না থাকায় তেমন ভাবে বইপত্রে দেখা যায়নি।
স্বপন নন্দী ও পার্থপ্রতীম গঙ্গোপাধ্যায় ত্রিপুরার প্রচ্ছদশিল্পীকে অসম্ভব পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। অনেকগুলো উল্লেখযোগ্য বইয়ের প্রচ্ছদ শিল্পদ্বয় পরম মমতায় বিণাপারিশ্রমিকে করে দিয়েছেন মমতায়।
ত্রিপুরায় সিল স্ক্রিন সময়ে অপরেশ পাল,প্রণব চৌধুরী, কান্তিলাল ভৌমিক এবং সুকোমল দেব বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন।
সংঘমিত্রা নন্দী,নিলীপ পোদ্দার, অশোক দেব,সত্যজিৎ দত্ত অনেকগুলো বইপত্রের প্রচ্ছদ করেছেন।
তারপর প্রলয়েন্দু চৌধুরী, অভিজিৎ ভট্টাচার্য,মিলনকান্তি দত্ত, পুষ্পল দেব অসাধারণ সব প্রচ্ছদ করে ত্রিপুরার প্রচ্ছদশিল্পকে সুন্দর শোভন করেছেন।
মনীশ ভট্টাচার্য, অমিত নাথ,মনোজ ঘোষ,রূপা নন্দীও উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন।
ডিজিটাল মাল্টিকালার সময়ে প্রচ্ছদ করছেন চৈতন্য ফকির,উমা মজুমদার,বাপ্পা চক্রবর্তী।
ত্রিপুরার গন্ডি পেরিয়ে এই সময়ের সবশেষ সংযোজন যার হাত ধরে প্রচ্ছদশিল্প অন্যরকম ভাবনায় এগিয়ে চলছে তার কথাও বলতে হয়।সে এক তরুণ নাম গৌরব ধর। তার ভাবনায়ও লিটল ম্যাগাজিনগুলো নুতন আঙ্গিকে সেজেগুজে আসছে পাঠকের নিকট।
মোবাইল স্কীণে বিশেষ রকম ছবি আঁকছেন অনেকেই।সঞ্জীব দে তাঁর আঙুলের ছোঁয়ায় মোবাইলে প্রচ্ছদ আঁকছেন এবং তা বই ও পত্রিকায় শোভন ছাপায় বইয়ের প্রচ্ছদ হিসেবে দৃষ্টি কাড়ছেন তিনি।
চিরশ্রী দেবনাথসহ অনেকেই নিজের বইয়ের প্রচ্ছদ করে পরিচিত হচ্ছেন।
ত্রিপুরার প্রকাশনা ক্রমাগত সাবালক হয়ে প্রকাশ হচ্ছে। এই সময় শিল্পীরাও তাদের ভাবনাকে নুতন করে আরো সৃজনশীল করে তুলে ধরছেন।এটাই আমাদের আশার কথা।
রাজ পরিবারের কেউ তেমনভাবে প্রচ্ছদ শিল্পের দিকে না এলেও ধৃতি দেববর্মনের একটি প্রচ্ছদ আমাদেরকে ভাবায়।
ত্রিপুরার প্রকাশনা অলাভজনক হলেও বর্তমানে একটি নীরব প্রতিযোগিতাও।প্রায় সকলেই তাদের গ্রন্থের শোভন মুদ্রণ ও ঝকঝকে বিষয় ভিত্তিক মোড়কে গ্রন্থ নির্মাণে এগিয়ে আসায় শিল্পটিও হয়তো অদূর ভবিষ্যতে আরো সমৃদ্ধ হবে।এই দৌড়ে স্রোত প্রকাশনাও এক বিশেষ জায়গায় নিঃসন্দেহে।
১৮:০৪:২০২০
রাত:০৭:৩০মি
কুমারঘাট।
[29/05, 22:08] GOBINDA DHAR: স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত
একটি লিটল ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ইতিহাস:আট
গোবিন্দ ধর
স্রোতস্বিনী :বার্ষিক সাহিত্য পত্র
-------------------------------------------
দ্বিতীয় বর্ষ:সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ইং
সম্পাদক :গোবিন্দ ধর
সহযোগিতা
ভানুলাল দত্ত, আলাল উদ্দিন, শিবুরঞ্জন দে, প্রতীকচন্দ্র সেন,কাজলকান্তি মালাকার,নির্মল দে,আজিজুর রহমান,আব্দুল মতিন,বদরুল হোসেন
প্রচ্ছদ :নীলিমেশ পাল
মুদ্রক:মহাশক্তি প্রেস,ফরেস্ট অফিশ রোড,কৈলাসহর
প্রচ্ছদ মুদ্রণ:গ্রাফিটোন,কৈলাসহর
মূল্য:দশ টাকা।
অন্তর স্রোত
গল্প
স্মৃতির দর্পনে গোপন কান্না :পৃথ্বীরাজ
ককবরক কবিতা
গোমতিনি হাদুক রমীই(গোমতির পথ ধরে):কুঞ্জবিহারী দেববর্মা
ছড়া
হাভাতের ছড়া:বিপ্লব সেন
আড়ি:রাখী দাস
দাসু রাম:মমতা আচার্য
শব্দ সংগীত:ড্মৃতিকণা দত্ত
ছড়া:প্রদীপ মুখার্জি
আজব কালের ছড়া:আব্দুল বারিক
স্রোতস্বিনীর ডাক:সুকুমার নম:
কবিতা
পবিত্র সামারিটান :বিশ্বজিৎ দেব
ত্রিপুরা :গোবিন্দ ধর
ঔরসজাত অস্তিত্বের ক্রোধ :পীযূষ রাউত
হিপনোটিজম :ভানুলাল দত্ত
দক্ষিণা:সেলিম মুস্তাফা
নদী:নির্মল দে
ব্যক্তিগত:রঘুনন্দন সিংহ
বধ্যভূমি:রসরাজ নাথ
তবুও:কুন্তল দত্ত
রূপময় জগৎ :মণিকা বড়ুয়া
অনুরাগ নেই বিরাগও:নীলিমেশ পাল
দৃষ্টিহীনের বুলি:মণিকা চক্রবর্তী
ব্যক্তিগত শব্দাচার:মিলনকান্তি দত্ত
হে স্রোতস্বিনী :অনিলচন্দ্র দেব
ব্যগ্তিগত পঙক্তির অন্তরালে :আজিজুর রহমান
উদ্বাস্তু :সত্যজিৎ দত্ত
আমারই বুকে:প্রণব দেবনাথ
বিংশ শতাব্দীর সভ্যতা:প্রতীকচন্দ্র সেন
আধুনিক ভগ্নরেখা:শিবুরঞ্জন দে
শতাব্দীর কালো হাত:আলাল উদ্দিন
ইংরেজি কবিতা
YOU MUST KNOW:JADULAL ROY
প্রবন্ধ
আদ্যাশক্তির সন্ধানে :অরিন্দম চক্রবর্তী
শ্রদ্ধার্ঘ
পিতৃতর্পন:গোবিন্দ ধর
আলোচনা
স্রোতস্বিনী প্রথম বর্ষ:১৯৯৫ইং:ড:অচিন্তকুমার রায়চৌধুরী
প্রয়াস:তৃতীয় সংখ্যা :জুন-১৯৯৬ইং
:শ্রীউদ্দীপ্ত
গ্রন্থলোক
ডাঃ সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী
পত্রাণু
পুরঞ্জনপ্রসাদ চক্রবর্তী
নৃপেন চক্রবর্তী
সম্পা চৌধুরী
প্রণব দেবনাথ
কুঞ্জবিহারী দেববর্মা
রসরাজ নাথ
মণিকা বড়ুয়া
ইরেশ দেবনাথ
সুকুমার নম:
উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়
কুন্তল দত্ত
অনিলচন্দ্র দেব
পৃথ্বীশ দত্ত
অঞ্জনা দাশ
সম্পাদকীয়
----------------
সাহিত্যের শহর সংস্কৃতির শহর কৈলাসহর মহকুমার প্রত্যন্ত গ্রাম রাতাছড়া আজ সাহিত্য সংস্কৃতির হৈ হৈ রৈ রৈ অবস্থায়। স্রোতস্বিনী তাই গর্বিত।মাত্র এক বছর পূর্বে ২৬শে সেপ্টেম্বর ১৯৯৫ইং ঘরোয়া আড্ডাকে কেন্দ্র করে স্রোতস্বিনী সাহিত্য সংস্থা "র প্রতিষ্ঠা, এক বছর পর ঘরোয়া নয় রাতাছড়ার নয়;আজ সারা বাংলা সাহিত্যের গতিপ্রকৃতির সাথে হাত মিলাচ্ছে।
একটি ছোট স্বপ্ন
----------------------
ছোট এক স্বপ্ন ছিলো।রাতাছড়ায় সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা করা।এই স্বপ্ন মানুষের নিকট পৌঁছে দেওয়া হলো।ত্রিপুরার পত্র পত্রিকা তাকে আলোচনায় সমৃদ্ধ করলেন।পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য প্রাবন্ধিক গবেষক ও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী নৃপেন চক্রবর্তী মহোদয়ও পত্রিকাকে প্রেরণা দেওয়ার জন্য স্নেহ বশত:আমাকে চিঠি লেখেন। এটা আমাদের প্রাপ্তি ছিলো।আমি পাঠিয়েছিলাম সংখ্যাটি। তিনি মমতায় প্রাপ্তি সংবাদ ও মতামত তুলে ধরে যে কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ করেছিলেন তা আমার প্রেরণা হিসেবে আজও অনুভব করি।
একই সময়ে আমাদের এই স্রোতস্বিনীকে সাহিত্য সংস্কৃতি র শাখা প্রশাখায় কাজ যেন না করি তারও নানান ফুসমন্তর তখন বিভিন্নজন করেছিলেন।এসবও আমাদের নিকট ছিলো কাজ করার মানসিকতাকে আরো বলিষ্ঠ করার সেতু।
নতুন লেখক তৈরি
-------------------------
বরাবরই চেয়েছি নতুন নতুন লেখক ও সাংস্কৃতিক কর্মী তৈরি হোন।স্রোতস্বিনী সাহিত্য পত্রে নতুন নতুন লেখক লেখার সুযোগ করে দিয়েছিলাম।রাজ্যের যারা এখন বিভিন্ন শাখায় লেখালেখি করেন তাদের অনেকেরই প্রথম লেখা স্রোতস্বিনী প্রকাশ করেছে।এই সংখ্যার সূচীও তা প্রমাণ করবে।
গল্প লেখক পৃথ্বীশ দত্ত তখন পৃথ্বীরাজ ছন্দ নামে এ সংখ্যায় লেখে তার প্রথম গল্প।তেমনি আরো কত কত কবি ছড়াকারকে এ সংখ্যায় আমরা একত্রে এনেছি তাদের সৃজনশীল লেখাগুলো তুলে দিয়েছি পাঠকের জন্য।মনে আছে রঘুনন্দন সিংহ বর্তমানে অনন্ত সিংহ নামে পরিচিত তারও কবিতাটি এ সংখ্যায় যথা যোগাযোগ্য মর্যদায় তুলে ছাপা হয়।
আফসোস অনেকেরই লেখালেখিতে শেষ অব্দি আর লেগে থাকেননি।থাকলে হয়তো ত্রিপুরাকে সে সকল কবি লেখকরাও সমৃদ্ধ করতে পারতেন।
সমালোচনা হোক।সমালোচনা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে।একজন গঠনমূলক আলোচক সমালোচক না হলে সাহিত্য এগিয়ে যেতে পারে না।এই বিশ্বাস তরুণদের থাকতে হবে।তখনই তরুণদের উন্নতি হবে।তারাও আগামীর ত্রিপুরার উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবেন বিশ্বাস তখনো ছিলো আমার।এই বিশ্বাসে এখনো ক্রমাগত কাজ কাজ আর কাজ করেই যাচ্ছি। (চলছে)
০৭:০৪:২০২০
বেলা:১১টা
কুমারঘাট।
[29/05, 22:08] GOBINDA DHAR: শিলচর কবিতা আড্ডা
গোবিন্দ ধর
প্রতি শনিবার শিলচর বসে শনিবাসরীয় কবিতা পাঠ।প্রেমতলায় সুশান্ত ভট্টাচার্যের জেলরোড পাঁচতলায়। ১৫:১২:১৮ আজকের আসর।
বিশ্বসাহিত্য নিকেতনের সাধারণ সম্পাদক ও প্রতিষ্ঠাতা ইমরান শাহ বাংলাদেশ থেকে গতকাল ভারতের শিলং হয়ে আজ শিলচর এলেন। বিসানি প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক যুথিকা দাস শিলচর আছেন।।মূলত একটি কবিতার বই আগামীকাল শিলচর বইমেলা:১৮ এ প্রকাশ হবে যুথিকা দাস সম্পাদিত।যার ভারতের পরিবেশক স্রোত।
আগে থেকে স্বর্নিমা চৌধুরীদির হোটেল ইলোরা বুকিং করে রেখেছেন আদিমা মজুদার ।আমি আর ইমরান ২০০৫এ আছি।আমাদেরকে সঙ্গ দিতে আসেন শিখা রায়,আদিমা মজুমদার,অমৃত রায় আর বিশ্ব সাহিত্য নিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা যুথিকা দাস। সন্ধ্যায় আমরা সুশান্তদার শনিবাসরীয়তে যাই বেলা চারটেয়, আদিমাদির গাড়ি করে।
আজ আড্ডায় ছিলেন,চন্দ্রিমা দত্ত,শেলী দাশ,দোলনচাঁপা দাসপাল,বন্ধু সম্পাদক শতদল আচার্য।আর শিখা রায় শিবানী গুপ্ত।যুথিকা দাসসহ ইমরান শাহ ও আমি।আড্ডায় আরো ছিলেন দেবাশীষ চক্রবর্তী - অধীষ্টিতা শর্মা রাই।ছিলেন জয়ন্তীদিও।দোলনচাঁপা দাসপাল বললেন,"কবিতা -কথা-গান -আলোচনা এসব কিছুই একটা আড্ডা রচনা করে, আড্ডার মেজাজ তৈরী করে।। সে আড্ডা আমাদেরকে ঋদ্ধ করে। আজকের ব্যস্ত সময়ে মিছিমিছি সময় নষ্ট করার মতো সময় আমাদের কারুর হাতে নেই। একটা বাজে সিনেমা, একটা বাজে উপন্যাস, একটা বাজে থিয়েটার যেভাবে আমাদের শিরঃপীড়ার কারণ হতে পারে, একটা বাজে আড্ডা ও তার ব্যতিক্রম নয়। এভাবে যাচাই করে যখন দেখি যে গতকাল সুশান্তদার জেল রোডের ফ্লাটে কবিতা সন্ধ্যাকে ঘিরে যে আড্ডার জন্ম হয়েছিল তা এককথায় অনবদ্য ছিল তখন মনটা আনন্দে ভরে ওঠে।
বিভিন্ন ঘরানার, বিভিন্ন রকমের, বিভিন্ন মেজাজের অসাধারণ কিছু কবিতা শোনা হল কাল। নিখাদ প্রেম, বিরহ, পূর্ণ সমর্পণ থেকে শুরু করে রাজনীতি ,স্বদেশ প্রেম ,আজকের অস্থির সময়,নিজেকে চেনার আকুলপারা ব্যাকুলতা সব যেন নিজেকে উজার করে ধরা দিল আমাদের কাছে। সাথে ক'খানা গান থাকল আমাদের কবি বন্ধুদের গলায়।
সুশান্ত দা আর চন্দ্রিমাদির ভরসায় কবিতা আড্ডাকে সন্ধ্যা থেকে কিশোর -রাত অব্দি পারাপার করাবার দায়িত্বে থেকে গেলাম আমি।
মন ভালো করার এ আড্ডার কিছু মুহুর্ত এখানে তুলে ধরলাম।"
কবিতায় কবিতায় গানে গানে এই আড্ডা চা মিষ্টি আর চপ সব মিলে বিশেষ প্রাপ্তি অনেকজন কবিদের সাথে সাক্ষাৎ হয়।বিশেষ প্রাপ্তি কবিদের সাথে পরিচিত হওয়া।
১৫:১২:২০১৮
রাত:০৮:৪৫মি
শিবচর, আসাম।
[29/05, 22:09] GOBINDA DHAR: স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত
একটি লিটল ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ইতিহাস :ত্রিশ
গোবিন্দ ধর
ব্যক্তিগত সম্পর্কে কেউ হয়তো কারো পছন্দ নয় কিন্তু সাহিত্যের বিচার বিশ্লেষণ সে সম্পর্কের নিরিখে নির্ণয় হয় না।হলে তা দূর্ভাগ্য।যদি সাহিত্যের কালখণ্ডে কেউ শ্রেষ্ঠ হোন, উত্তীর্ণ হোন তো তিনি আমার ব্যত্তিগত শত্রু হলেও সাহিত্যিক।তিনি কবি।তিনি লেখক। তার সাথে সুসম্পর্ক না থাকলেও তার সাহিত্যকে অস্বীকার করার সাহস ও সামার্থ আমার নেই। কারো না হওয়াই উচিত।সে নিরিখে স্রোত কাজ করে।কাজে দূর্বলতা থাকতে পারে পরিকাঠামোহীন এই রাজ্যে।তাও নিজেকে যতটুকু সুন্দর করা যায় ততটুকু সুন্দর বাকীটুকু আমার আমি নয়।তাও সেই ততটুকু নিয়ে আমাদের কত অহংকার। এই অহংকার দূর হোক চাই।আমার হোক তাও চাই।স্রোত তরুণদের মৃগয়াভূমি হোক সম্মিলিত সহযোগিতায়।এই প্রেক্ষাপটে স্রোত কাজ করে।
স্রোত সাহিত্য পত্রিকার জন্ম হয়েছে বাংলা সাহিত্যে তরুণেরা উপেক্ষিত বলে।বিশেষ করে ত্রিপুরায় নয়ের দশকের বিভিন্ন সময় কবিতা লেখতে আসেন একঝাঁক তরুণ কবি।সে সময় দেখা গেছে ত্রিপুরার কবিতার সাবালকত্ব আনতে প্রায় ৫০ জন কবির অশ্বখুরের ধ্বনি।কিন্ত নয়ের দশকের সমস্ত ধ্বনিকে কেউ কেউ তাদের নিজস্ব পদধ্বনি বলে চালিয়ে গুড়ের লাভ তাদেরকে সমৃদ্ধ করতে কাজে লাগানো হয়েছে।সেই জায়গাকে আরো শক্তিশালি অর্থাৎ নয়ের দশকে যারা কবিতা লেখতে এসছিলেন সে সকল তরুণদের তখনও কোন রকম কদর যত্ন লালন সেরকম তখন ত্রিপুরায় হচ্ছিলো না। ঠিক সেসময় স্রোতস্বিনী রাতাছড়ায় একক ভাবে একটি সাহিত্য পত্রিকাকে লেখা কালেকশন থেকে ছাপতে দেওয়া প্রুফ সংশোধন প্রেস বিল মেটানো এমন কি সৌজন্য সংখ্যা পৌঁছে দেওয়া অব্দি স্রোতস্বিনী সম্পাদক হুিসেবে একা একা সামাল দিতে হয়েছে। এখনও পত্রিকা ছাপার পর সে কাজ করে যাওয়াই একজন লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক হিসেবে পালন করি।একজন লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদকের এমন বিশ্বাস থেকেই কাজ শুরু করতে হয়।স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত দীর্ঘ ছাব্বিশ বছর ধরে একটুকুই সম্পাদক হিসেবে করে আসছি।আগামীদিনেও স্রোত সম্পাদক হিসেবে এরকমই দায়িত্ব পালন করে যাওয়াই কাজ।
স্রোত পরিবারের কবিতাঘর থেকে প্রকাশিত হয় চল্লিশ অনুর্ধ কবিদের কবিতা সংখ্যা। ভূমিকা লেখেন দুজন।উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কবিরা তাদের কবিতা সে সংখ্যায় আমাকে ছাপার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।পীযূষ রাউত আলোচনাও করেন।
লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনায় এসছেন নতুন নতুন সম্পাদক তখন।স্রোত লিটল ম্যাগাজিন এর প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে অনুপ্রেরণা দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন নামে প্রায় বিশটির মতো নতুন নতুন সম্পাদককে সম্পাদনায় আনা সম্ভব হয়েছে। তরুণ লেখক কবিরা ত্রিপুরায় চর্চা করছেন শত শত ।তাদের অনেকেরই প্রথম কবিতাটি স্রোত স্রোতস্বিনী,কুসুম,কবিতাঘর দোলনায় ছাপা হয়েছে।।
একসময় ত্রিপুরা থেকে বই প্রকাশেরই সুযোগ ছিলো না।তারপর এই সেদিন বইমেলা শুরু হলো নতুন অফসেট ছাপা।সব মিলে বীরেন দত্তের উপন্যাসই প্রায়,৫০ বছর পর ছাপা হয়।খাঁচার পাখি আজও গ্রন্থই হয়নি।প্রায় ১৭১টি উপন্যাসের অনেক উপন্যাস এখনো সংকলিত নয়।
এখন ছাপাছাপি সহজ।প্রিন্ট মিডিয়ার নানা রকম উত্থানের পর এসছে অন লাইন ছাপাছাপি।
তরুণেরা তাও ত্রিপুরায় চিরবঞ্চিতই ছিলেন।এই ১৯৯৫ সালেও আগেও তরুণ কবি সাহিত্যিকরা বঞ্চিতই।এখন নিজের পয়সা খরচা করে যেকোন প্রকাশনা,থেকে কবিতা সংকলন ছাপার দোয়ার উন্মুক্ত। মুক্তবাজার এখন।ইচ্ছে এবং নিজস্ব খুঁটি থাকলে যে কেউ কবি সাহিত্যিক হওয়া সহজ।কিংবা টাকা থাকলেও নিজের বই ছাপা যায়।আমাদের সময় সে সুযোগ তেমন ছিলো না।আমি নিজেও যদি এমন সুযোগ পেতাম তো কোন ভাবেই প্রকাশনায় আসতাম না।হ্যাঁ লিটল ম্যাগাজিন আমার প্রাণ।কবিতা লেখি নিজের ভাবনাকে কোথাও লিখে রাখবো বলে।কোনদিন বড় কবি কিংবা সাহিত্যিক হওয়ার বাসনা অন্তরে ছিলো না। মুখফুটেও আসেনি। বলিনিও কোথাও।এখনও সেরকম কোন বাসনা নেই নিজের ভাবনাকে বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনে প্রকাশ হলে ভালো লাগে।অন লাইন ভার্সন পত্র পত্রিকায়ও কবিতা ছাপি।তাও এই অন লাইনে আমার এলার্জি।অন লাইন খুব ভালো মাধ্যম এখন।সহজে প্রায় নিখরচায় একজন লেখককে নেট দুনিয়ায় সহজে পরিচয় করিয়ে দিতে পারে।আজকে আসা কবিকেও কবি করে দেয় নেট।অথচ বঙ্কিমচন্দ্র বলেছিলেন একটি লেখা কম করেও দশ বছর নিজের আয়ত্বে লালন করা প্রয়োজন।বার বার এডিটিং সম্পাদনা তারপর নিজেকে তৈরী করে পাঠকের সামনে নিয়ে আসা দরকার।এখন সে রকম সময় ও ধৈর্য আমাদের নেই।
যে তরুণদের হাতে বারবার সাহিত্যের বাঁক নিতো তাদেরও সহসা কবি সাহিত্যিক হওয়ার অদম্য ইচ্ছে কোন লেখাকে পুনঃলিখনের সময় আমরা এখন আর দিই না।এতে সাহিত্যে বাঁক এলেও চলচ্চিত্রের রিমিক্স যেন।তাও বিশ্বাস করি তরুণেরা সব সাহিত্য মাধ্যমেই বাঁক আনেন।এরকম লালিত বিশ্বাস থেকে স্রোত পরিবারের সব কটি লিটল ম্যাগাজিনে তরুণ লেখকের ছড়াছড়ি। প্রতিটি কাগজেই তার স্বাক্ষর পরবর্তী সময় সূচীপত্র ধরে বাকী সংখ্যাগুলো আলোচনার সময় নিশ্চিত বলবো।
সাহিত্য তখনই স্তিমিত হয়ে যেতে বাধ্য যখন কোন তরুণ লেখতে আসবেন না।এরমই উৎকন্ঠা প্রতিটি দশকে দশকে সারা পৃথিবীময় বিরাজ করলেও শেষ অব্দি তারুণ্যের জয় নিশ্চিত। এই বিশ্বাস আজন্ম বুকে লালন করেই স্রোত প্রকাশনাও তরুণের লেখাপত্রকে যত বেশি সংখ্যক সম্ভব প্রতিবছর প্রকাশ করে আসছে স্রোত প্রকাশনার জন্ম সময় থেকে।এতেও কারো কারো লালরক্তবর্ণচোখের সামনে পড়তে হয়নি তা নয়।আমরা আমাদের বিশ্বাস থেকে সেদিনও পিছপা হইনি।তারুণ্যকে যথাবিহিত সম্মান জানাই।তাদের সৃষ্টি তুলে দিতে চাই নিষ্ঠ পাঠকের নিকট।এ জায়গায় আমরা বঙ্কিমবিরোধী।বিশ্বাস করি সাহিত্যযাপনে থাকলে প্রত্যেক তরুণ লেখক বন্ধুজন একদিন মহীরুহ সম লেখক হবেন।কালখণ্ডে তিনিই হবেন একজন প্রকৃত সাহিত্যিক কবি।সকল তরুণদের প্রতি আমার এমনই ভাবনা।ত্রিপুরায় প্রকৃতপক্ষে লেখালেখি করে হাতেগোনাদের মধ্যে কেউ কেউ লেখাকে পেশা ভাবলেও সকলেই অপেশাজীবি সখের দোকানদার।পাশাপাশি প্রকাশকদেরও তথৈবচ অবস্থা। একজন লেখককে লেখক হিসেবে ঠিকঠাক পাঠকের নিকট নিয়ে গেলেও এই ছোট রাজ্যের পাঠক সীমিত থাকায় বিক্রিত বই থেকে মুনাফা দূরে থাক প্রকাশকদের মূলধনও ফেরত আসেনা ১০ বছরেও।এই জায়গায় লেখকের ব্যক্তিগত করিশ্মাহেতু কোন কোন গ্রন্থ প্রকাশকদের নিকট বিক্রি জনিত আনন্দ প্রদান করে কিন্ত অধিকাংশ ক্ষেত্রে সে সুযোগ হয় না।এতে একজন লেখককেও উৎসাহিত করতে না পারাকে নিশ্চয়ই প্রকাশকরাও খুশি থাকেন এমন নয়।ত্রিপুরা এমন এক রক্তশূন্যতায় প্রকাশক ও লেখকের যৌথ প্রচেষ্টায় এগিয়ে চলেছে। হয়তো এমন কোন যাদুকাঠি আবিস্কার হবে যা আমাদের সাহিত্যকে পাঠকের নিকট নিয়ে যেতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে।এরকম এক স্বপ্ন আমিও দেখি।সকলের সহযোগিতায় এই স্বপ্নকে লালন করে যাবো।
(চলবে)
১০:০৫:২০২০
রাত:১১টা৩০মি
কুমারঘাট।
0 Comments