কুলাউড়া উপজেলার ইতিহাস ও অন্যান্য ||গোবিন্দ ধর
পূর্ব পুরুষের ধুলো লেগে থাকা
কুলাউড়া জংশন রেলওয়ে স্টেশনে ৫ মার্চ ২০২৩
রাত তখন ১১টা।
কুলাউড়া উপজেলার ইতিহাস ও অন্যান্য
কুলাউড়া উপজেলা বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা এবং একটি প্রশাসনিক এলাকা। ১৯৮২ সালে কুলাউড়া উপজেলায় উন্নীত হয়।বর্তমানে এটি একটি পৌরসভা।
কুলাউড়া উপজেলার অবস্থান ২৪.৫১৬৭ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ থেকে ৯২.০৩৩৩ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত। আয়তন ৬৭৯.২৫ বর্গ কিলোমিটার (২৬২ বর্গ মাইল)। এই উপজেলার উত্তরে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ও বড়লেখা উপজেলা, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা, পূর্বে জুড়ী উপজেলা, পশ্চিমে রাজনগর উপজেলা ও কমলগঞ্জ উপজেলা।
কুলাউড়া উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম কুলাউড়া থানার আওতাধীন।
নামকরনের ইতিহাস
শাহা হেলিম উদ্দিন কোরেশী নামক গ্রন্থ থেকে জানা যায় মোঘল সুবাদার এর কাছ থেকে দেওয়ানী পাওয়ার পর মনসুর গ্রামের প্রখ্যাত দেওয়ান মামন্দ মনসুরের পিতামহ মামন্দ মনোহরের ভ্রাতা মামন্তদ কুলাঅর কুমার থাকাবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। তার মৃত্যুর পর মামন্দ মনোহর ভ্রাতার স্মৃতি রক্ষার্থে নিজ জমিদারির পূর্বাংশে একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করে নাম রাখেন কুলঅরার বাজার’’। কালক্রমে “কুলঅরার বাজার থেকে কুলাউড়া” নামকরণ করা হয়েছে।
ভূপ্রকৃতি
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হাওর হাকালুকির বেশিরভাগ অংশ কুলাউড়ার অধীনে। এছাড়াও লংলিয়া, গোয়ালজোর ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য হাওর। মনু সবচেয়ে বড় ও প্রধান নদী। হাওর আর নদী ছাড়া এই অঞ্চলের বেশিরভাগ স্থানই সমতল। তাছাড়া উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা জুড়ে পাহাড়ি বন বিস্তৃত যা কুলাউড়া পাহাড় নামে পরিচিত। পাহাড়ী জনপদ রয়েছে যার বৈচিত্রতা পরিলক্ষিত হয়।
জনগণনা
২০০১ খ্রিষ্টাব্দের আদমশুমারী অনুযায়ী উপজেলার জনসংখ্যা ৩,৩৯,৬৭৩ জন (২০১১-তে তা হয় ৩,৬০,১৮৫ জন)। তন্মধ্যে ২০০১-এ পুরুষ ৫১.০৯ শতাংশ, এবং নারী ৪৯.৯১ শতাংশ। ২০১১ সালে পুরুষ ৪৮.৮১ এবং নারী ৫১.১৮ শতাংশ। এলাকার জনসংখ্যার সিংহভাগ মুসলমান (৭৪.২১ শতাংশ); এছাড়াও রয়েছেন হিন্দু (২৪.৫৮ শতাংশ), খ্রিস্টান (১.১২ শতাংশ) ধর্মাবলম্বী। অন্যান্য ধর্মাবলম্বী রয়েছেন ০.০৯ শতাংশ। আদিবাসীদের মধ্যে অন্যতম খাসিয়া, মণিপুরী এবং অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায়, এদের সংখ্যা ৬,১৯৪ জন।
কুলাউড়া উপজেলার জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৬৬০ জন। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২.১০ শতাংশ (পরিবার পরিল্পনা অফিস) বা ১.৩৯ শতাংশ (জাতীয়)।
অর্থনীতি
মূলত কৃষি নির্ভর। এছাড়া বিভিন্ন পেশাজীবি সম্প্রদায় রয়েছে। এই উপজেলার অর্থকরি ফসলের মধ্যে চা অন্যতম। এছাড়া রাবারেরও উৎপাদন হয়।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
সড়ক পথে মৌলভীবাজার এবং ওপর দিক থেকে বড়লেখা হয়ে রাজধানী শহর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সাথে যোগাযোগ রয়েছে। এছাড়া রয়েছে রেল যোগাযোগ। কুলাউড়া রেল জংশন একটি প্রাচীনতম রেল জংশন।
0 Comments