সেই পাড়াতো বোন ও রক্তকরবী

চৈতন্য ফকির

রক্তকরবীর গোটা খেয়ে আত্মহত্যা করেছিলো পাড়াতো একবোন।

তখনো আমার কাছে রবীন্দ্রনাথ অধরা।
রক্তকরবী নাটকের কথা জানি না।
বাড়িতে রবীন্দ্রচর্চা চোখেরবালি অব্দি থাকলেও
রক্তকরবীর গোটা খেলে আত্মহত্যা করা যায় তা বুঝার বয়স হয়নি।
রক্তকরবী নাটক লিখে রবীন্দ্রনাথ হইচই ফেলে দিলেও
তখনো আমাদের বাড়ির চৌকাট পেরোয়নি রক্তকরবী।

বাবা নাট্য অভিনেতা হলেও তিনি গল্পচ্ছলে বলেননি
রক্তকরবী শুধু ঘন্টাফুল নয়।
আমরা ঘন্টাফুলের মধু শুষে খেতাম।
তাতে লেগে থাকা কষে  বিষ আছে বাবাও বলেননি।
নির্ধিধায় শুষে নিতাম বিষ ও মধু।

যেদিন পাড়ার বোনটি রক্তকরবী খেয়ে নীল হয়ে গেলো
সেদিনও ঘন্টাফুলকে রক্তকরবী বলে জানতাম না।

করবীর গোটা দিয়ে আমরা কড়ি খেলতাম।
কড়ির ভেতর বীজের মতো অংশ ফেলে দিতাম।
তাতে বিষ আছে কোনদিন বাবা বলেননি।

ঘন্টাফুলের ভেতরের অংশ জড় করা বিষ
খেয়ে পাড়াতো বোন
কেন আত্মহত্যা করতে গেলো তখন বুঝিনি।

কড়ি খেলতে খেলতে আমরা বালক হয়ে গেলাম।

ততদিনে শম্ভু মিত্রের গণনাট্যের হাত ধরে
রক্তকরবী পরিচিত মঞ্চসফল নাটক।

১০:০৫:২০১৮
বেলা:১২:২০মি
কুমারঘাট।

0 Comments