নদীর গোবিন্দ ধর,গোবিন্দের নদী
হারাধন বৈরাগী 
১৯৭১ ।পূর্বপাকিস্থানের বারুদবাতাস সারা ত্রিপুরার সাথে উত্তরত্রিপুরার আকাশটাও মেঘলা করে চলেছে।কৈলাশহর ধর্মনগর কুর্তি কদমতলার মতো প্রান্তীয় শহর গ্রামের বাতাসে বারুদের গন্ধ - মানুষের চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।আকাশ পথে কামানের মেঘগর্জন মেসিনগানের হিসহিস আওয়াজ, মর্টার সেলের কড়কড় শব্দ, বন্দুকের চড় চড় ধ্বনি, যুদ্ধবিমানের সাঁই সাঁই রব- মানুষের মনে সৃষ্টি করে চলেছে বিভীষিকা।স্বজন হারানো কান্নায় ডুকরে উঠেছে এপারের বাতাস।বয়ে চলেছে ওপার থেকে এপাড়ে ছিন্নমূল মানুষের ঢল। মুক্তিবাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে পশ্চিমপাকিস্থানী ও রাজাকার বেইমানদের বিরোদ্ধে।

জুলাইমাসের এমন একটা কর্কটসময়সন্ধিক্ষনে কবি গোবিন্দ ধরের জন্ম(১৯৭১, ৩০জুলাই) অবিভক্ত উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগরের অফিসটিলায় বৃষকেতু নাথের বাড়িতে।তাঁর বাবা দক্ষিণারঞ্জন ধর তখন  একটা ক্ষুদ্র চাকরি করতেন পদ্মপুর দ্বাদশস্কুলে ।মাতা সুষমারানী ধর গৃহিনী।বৃষকেতু নাথের নারায়ন মন্দিরে জন্ম হয়েছিল বলে জাতকের নাম রাখা হয়েছিল গোবিন্দ।এই নামের মাঝেই বুঝি সেদিন লুকিয়ে ছিল আগামীর দ্রোহবীজ ।যে নামে আজ
কর্ণফুলি-মেঘনা-পদ্মা-ব্রম্মপুত্র-গঙ্গা-ভাগীরথী অজয়-কোপাই-সুবর্ণরেখা-তিস্তা-তোর্সা-জুরী-মনু-দেও ঐকতানে বাঁজে।ঢেউএ ঢেউএ কবিতার পরাঅপরা কলধ্বনি ওঠে।

বৃষকেতুর বাড়ি থেকে জুরীর জাড়িজুরী দেখা যায়। শৈশবে তাই তিনি নদী দেখিয়ে বলতেন ওই নদী আমার। নদী হয়তো বাল্যসখির মতো চোখের ইঁশারায় জারিজুরী করত তার সাথে।আর তিনিও বুকের ভেতর বুঝি জড়িয়ে ধরতে চাইতেন নদীকে।তাই সেই শৈশবে দিদি মল্লিকারাণীর  হাতধরে নদীতে নামতেন  জলখেলি খেলতে। একদিন তাই নদীর বুকে জলখেলির নামে হারিয়ে যেতে বসেছিলেন কুহকিনী জুরীর বুকে।শৈশবে যার জুরীর সাথে জলখেলি শুরু,যৌবনে এসে মনুনদী থাকে বালুপ্রেমে বাধ্য করে।পিতার বদলির কারণে তাকে নিজগ্রাম রাতাছড়ায় ফিরে যেতে হয়।আর এখানেই শুরু হয় তার মনু নাম্নী নারীর সাথে জল ডুব ডুব বালুপ্রেম।এখানে‌ই লেখাপড়া শুরু হয় তৎকালীন রাতাছড়া উচ্চ বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে।

তাঁরা আট ভাইবোন।পিতার সংসারে সচ্ছলতা  ছিলো না।তাই সকালে জমিচাষে সময় দিয়ে খানিকটা দেরীতে স্কুলে যাওয়া।লাউকুমড়ো  পেয়ারা পেঁপে জিঙ্গে বেগুন পটল সিম লতচই টমেটো ধান এমনসকল ফসলেই  খানিকটা হাত পাকানো।রাস্তায়  কংক্রিট তৈরীর মতো  দিনমজুরী।কখনও বা মায়ের উনুন জ্বালানোর হাতেকড়ি।কবিতার কাগজ ছাপাখানা বিবিধ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকে জীবিত রাখার জন্য রাতাছড়া থেকে কুমারঘাটে এসে পত্রিকা হকারি।স্কুলে এসে ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে বয়ঃসন্ধির আঁকিবুকি।এমন সময়ে সহপাঠী লীলাবতীর ব‌ইপ্রীতি‌‌ই কিশোর কবির কলমে কাঁচা হাতের প্রথম কবিতা-"ভালোবাসি ভালোবাসি--
তোমাকে-সত্যি ভালোবাসি"! 

অসচ্ছলতা দিয়ে যার জীবন শুরু, কবিতা যার আত্মা,যে কিনা শব্দশ্রমিক কিংবা শব্দকর,সেকি আর কখনও সচ্ছল হতে পারে?
শুরু হয় স্রোতস্বিনী দিয়ে তার সাংস্কৃতিক যাত্রা।তারপর স্রোতস্বিনী থেকে স্রোত,তার কবিতার অবগাহনবেলা।এই থেকে প্রকাশনা ও  বিবিধ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড,মাঝেমধ্যে কদর্পক শুন্য হয়ে যাওয়া।এই থেকে পরিত্রাণ কখনও বা দুধেল গাভী বিক্রি,জমি বিক্রি, কখনও বা সহধর্মিণীর  স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি।

১৯৯০ এ পিতার মৃত্যু,১৯৯১ এ মাধ্যমিক পাশের চাকরি,মা-ভাই-বোনের দায়িত্ব প্রথাগত লেখাপড়ায় ছেদ এনে দেয়। শুরু হয় জীবনের আরেক বানভাসি।এ চলছে কখনও এ বাঁক থেকে ওবাঁকে।এমন বানভাসির মাঝেই বুঝি একটা অদ্ভুত আগুন ধিকি ধিকি জ্বলছে কবির বুকের ভেতরে।আর নিজেকে নিংড়ে দিচ্ছেন কবিতার সলতে পাকাতে।জগতে বুঝি কিছু পাগল থাকে-আর তাদের বুকে এই আগুন জ্বলতে থাকে নিরবধি।এই আগুন যাদের বুকের কোরাস, যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ এরা পিছু হটতে জানে না ।এ আগুনমণিই বুঝি পৃথিবীর সকল সাকসেসফুল পাগলদের সাফল্যের চাবিকাঠি। 

কবির বুকে বামপন্থী আওয়াজ দানা বেঁধে ছিল সেই স্কুলবেলা থেকেই।সেই আওয়াজ থেকে আজ‌ও বায়ে‌ই চলেছেন কবি।নদীর মতো উজান ভাটি করতে করতে।আর এ বুঝি পিতার জিন থেকেই পাওয়া।

ছোটবেলার রাতাছড়ার যাত্রাদল, পুতুলনাচের দল আর স্থানীয় ধামাইল কীর্তন মনসামঙ্গল কবিগান,পিতার বুকবাঁধাই,সব‌ই সমান্তরাল তার জীবন ডিঙ্গির পাটাতন ধরে গুন টানে।তাই ঘুরে ফিরে চলেছেন একে একে জুরি,আনুয়ারা,মনু দেও,নদী ছড়া নদী করে। গোবিন্দ নদীর সন্তান,নদীর অন্তর আঁকেন নিজের অন্তরে।তাই তিনি‌ই বুঝি পেরেছেন আঁকতে,আনুয়ারা নামের মেয়েটি,দেওনদী সমগ্র,মনুসমগ্রের মতো নদী কাব্য সম্ভার।

স্রোত ও স্রতস্বী তার একটা স্বপ্ন।এমন স্বপ্নের পেছনে দৌড়তে গিয়ে আজ‌ তিনি কদর্পকশূন্য ভূমিহীন,আত্মীয়হীন, বন্ধুহীন।স্বপ্ন মানুষকে নি:স্ব করলেও স্বপ্নহীন মানুষের বেঁচে থাকার কি কোন মানে থাকে তিনি জানেন না।প্রতিক্ষণ জেগে জেগে স্বপ্ন দেখেন। একটা স্বপ্ন তার ঘুম কেড়ে নেয়।ফের স্বপ্ন দেখেন যতক্ষণ স্বপ্নসফল না হয় যত ক্লান্তি আসুক,ঝিমিয়ে যেতে শিখেননি।হয়তো স্রোত একটি শব্দ।তাঁর কাছে এক সাগর জল।যে জল ক্রমাগত বয়ে চলেছে  অন্যভুবন সঙ্গমের দিকে। 

কবি কথায়-"আমার চাই মানুষ।মানুষের ভালোবাসা আমি পেয়েছি।মানুষের ঘৃণা আমি পেয়েছি।তবুও মানুষের কাছেই আবার ছুটে যাই।মানুষই আমার কাছে চিরন্তন সত্য।রাতাছড়ার বাসায় প্রতিবেশিরা ক্রমাগত আল কেটে জমি ঠেলতেন।বাবা  জেনে বুঝেও কাউকে কোনদিন কটুকথা বলতে শুনিনি - এতটাই নির্লিপ্ত ছিলেন বাবা।" কবি এমন পিতার জিনেটিক উত্তরাধিকার। 

কবির জিনেটিককোডে ছিলো নাটকের নেশা।১৯৯৫-২০০৩ সালে রাতাছড়ায় আঞ্চলিক নাটক যাত্রার সাথে যুক্ত হন তিনি।আর সময়ের দাবী মেনে মহামায়া নাট্য সংস্থা গঠন করেন।সর্বসম্মতিতে এই সংস্থার সম্পাদক‌ও নিযুক্ত হন তিনি।এই থেকে তার নাটক লেখায় হাতেকড়ি।

পূর্নাঙ্গ নাটক

(১)প্রতিদিনের প্রতিবাদ
(২)সভ্যতার অকথিত কাহিনী 

একাঙ্ক নাটক

(১)সাক্ষরতা অভিযান 
(২)হুরুতার তালাপি
(৩) ভালাকরি বাঁচার যাদু
(৪)প্রায়শ্চিত্য

একই সাথে সাহিত্যের পুড়াসংরক্ষনের জন্য গড়ে তুলেন-উদ্দিপ্ত সংগ্রহশালা।এক‌ই সাথে তার প্রথম লিটলম‍্যাগাজিন আন্দোলনের অঙ্কুরোদগম। ।কালেভদ্রে রাতাছড়া থেকে হালাইমুড়া আগমনের সাথে সাথে সেই কর্মকান্ড দেওমনু সঙ্গমে স্থানান্তর। শুরু হয় কুমারঘাট সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্য এক অধ্যায়,স্রোত ও স্রোতস্বীর কলকল যাত্রা -যার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে ২০১০এ তার স্থাপিত "বইবাড়ি" নামক বইর একটি অপ্রথাগত প্রতিষ্ঠান।বইবাড়ির উদ্দেশ্য শুধু সুলভমূল্যে বই বিক্রয় নয়।সাহিত্যের আড্ডা লেখক পাঠকের নৈকট্যস্থাপন,নুতন প্রজন্মের সাহিত্যমানসজমিন কর্ষন।২০১৮,১লা অক্টোবর তার প্রচেষ্টায় ঘটিত হয় কুমারঘাটে "দেওমনুসাহিত্যমঞ্চ"যার উদ্দেশ্য সাহিত্যআড্ডা পরিচালনা।এই আড্ডা চলছে।

রাতাছড়া থাকাকালে ২০০০এ প্রথম তার হাতে জন্ম নেয় একটি শিশু সাহিত্যের কাগজ - কুসম।তারপর হালাইমুড়া এসে ২০০৭এ কবিতার একটি মননশীল সাহিত্যপত্র- কবিতা ঘর।আর স্রোত ও স্রোতস্বীকে কেন্দ্র করে বইবাড়ি, উদ্দিপ্ত সংগ্রহশালা কবিতাঘর ও কুসুমের ডালপালা বিস্তৃত হয়ে বর্তমানে ব্রুইফাং এ পরিণত-যাকে কেন্দ্র করেই হালাইমুড়া তথা কুমারঘাটের সাংস্কৃতিক মুখ ক্রমশ হয়ে উঠছে উজ্জ্বল। 

 সময়ের দাবী মেনে অনেক ঝড়ঝঞ্জা, স্রোত ও স্রোতস্বীর মতো পরিব্রাজন করে চলেছেন কবি। যতো ঝঞ্জাই আসুক থেমে নেই তিনি। এগিয়ে চলেছেন কুহেলিকা পথে সফেন সঙ্গমের দিকে।আর তার সাথে ছুটে চলেছেন অসংখ্য প্রান্তজন।.স্রোত ও অস্রোত অনেক আলোচনা সমালোচনার ডহর ভেদ করে ভাটার টানের দিকে জলজ নদীর সন্তান।জীবনের মধ্যগগন ফাড়ি দিতে গিয়ে অগনিত বন্ধু ও বন্দুক পেয়েছেন । অনেকেই কাছে আসেন-জলজ  পথে কেউ টিকে থাকেন কেউ না। কেউ তাঁর সাথে চলতে গিয়ে স্রোতের তোড়ে নিমজ্জিত হয়ে হারিয়ে যান মাঝ দরিয়ায়।থেমে নেই ,চলছেন তো চলেছেন অভিষ্ট লক্ষ্যের দিকে।তাই মধ্যগগন অতিক্রম পর্বেই তিনি আজ ব্রুইফাং। এই ব্রুইফাংকে নিয়ে আলোচনা করা আমার মরুমায়া মনে হয়। 

গোবিন্দ ধরের সংক্ষিপ্ত জীবন রচনা ও সম্মান পুরস্কার

গোবিন্দ ধর

পিতা:--  দক্ষিণা রঞ্জন ধর
মাতা:--  সুষমারাণী ধর
জন্ম: -- ৩০শে জুলাই ১৯৭১
জন্মস্থান :অফিশটিলা,ধর্মনগর,উত্তর ত্রিপুরা।
স্কুল:রাতাছড়া দ্বাদশশ্রেণি বিদ্যালয়।বর্তমান হাজিবাড়ি দ্বাদশশ্রেণি বিদ্যালয়।
পেশা:শিক্ষকতা।
প্রথম শিক্ষক জীবন:উত্তর রাতাছড়া উচ্চ বুনিয়াদি বিদ্যালয়:১৯৯১।

প্রথম প্রকাশিত রচনা:১৯৯১
প্রথম বই:জলঘর:২০০৭(কবিতা সংকলন)।

ছদ্মনাম:চৈতন্য ফকির

সম্পাদিত কাগজ:
স্রোত 
স্রোhttp://xn--45b.com/
স্রোত.f
কবিতাঘর
কুসুম
বাংলাভাষা
বইবাড়ি
অন্যপাঠ
উৎসব সমাচার
ভাষাচর্চা 

প্রাতিষ্ঠানিক সম্পৃক্তিঃ

ত্রিপুরা রবীন্দ্র পরিষদ :আজীবন সদস্য
সুতপাঃআজীবন গ্রাহক
স্রোতস্বিনী সাংস্কৃতিক সংস্থা :সম্পাদক
মহামায়া নাট্য সংস্থা :সম্পাদক
স্রোত:সম্পাদক
স্রোত পরিবার:সম্পাদক
স্রোত বন্ধু দল:সম্পাদক
দোলনা:উপদেশক
কুসুম:উপদেশক
কবিতাঘর:উপদেশক
বইবাড়ি:কর্ণধার
স্রোত.f.:সম্পাদক 
স্রোত.com:সম্পাদক 
উৎসব সমাচার:সম্পাদক
অন্যপাঠ:কর্ণধার
বাংলাভাষা:সম্পাদক
গ্রাফিপ্রিন্ট:উপদেশক
ত্রিপুরার পুঁথি-পাণ্ডুলিপি গবেষণা কেন্দ্র:সংগ্রাহক
উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় লিটল ম্যাগাজিন গবেষণা ও চর্চা কেন্দ্র:সংগ্রাহক
বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ
কুমারঘাট শাখা:সম্পাদক
সৃষ্টিলোক সাংস্কৃতিক সংস্থা :সহসভাপতি
ত্রিপুরা লিটল ম্যাগাজিন গিল্ড:সম্পাদক
উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় প্রকাশনা সংসদ:কার্যকরী সদস্য
দেও-মনু সাহিত্য মঞ্চ:কার্যকরী সদস্য
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা চর্চা সমন্বয় পরিষদ:কেন্দ্রীয় কমিটি,সদস্য
ত্রিপুরা পাবলিশার্স গিল্ড:সদস্য
শ্রীহট্টীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদ :কার্যকরী সদস্য

কবিতা সংকলন:

(১)জলঘর
(২)সূর্যসেন লেন
(৩)দ্রোহববীজ পুঁতে রাখি,একা
(৪)মনসুনমাছি
(৫)শ্রীচরণেষু বাবা
(৬)আনোয়ারা নামের মেয়েটি 
(৭)দেওনদীসমগ্র
(৮)আষাঢ়ের দিনলিপি
(৯) মনু সমগ্র (যন্ত্রস্থ)

যৌথ কবিতা সংকলন:

(১)মেঘ বৃষ্টি রোদ
(২)গোপন জোছনা
(৩)তামাদি হয়নি যে ভালোবাসা
(৪)কখনো পাহাড় কখনো নদী
(৫)এই সময়ের বত্রিশ জন কবির কবিতা
(৬)আঞ্চলিক ভাষার কবিতা
(৭)শেখড়ের ধ্বনি
(৮)কবিতা :২০০১/২০০২/২০০৩/২০০৯/২০১০
(৯)সমকালীন পনেরজন কবির কবিতা
(১০)ত্রিপুরার আবৃত্তির কবিতা

আবৃত্তির অডিও সিডি:

(১)দ্রোহবীজ:২০১৭
(২)আত্মদ্রোহ:২০১৭
(৩)শ্রীচরণেষু:২০১৭

ছড়া সংকলন:

(১)থইথই ছড়া
(২)তোমার উনিশ আমার একুশ

যৌথ ছড়া সংকলন:
(১)এই শতাব্দীর ছড়া

প্রবন্ধ ও গবেষণা:
(১)শ্রীহট্টীয় লৌকিক সংস্কৃতি ও শব্দকোষ
(২)আত্মক্ষর
(৩)ত্রিপুরার লিটল ম্যাগাজিন
(৪)ত্রিপুরার সাহিত্যকোষ
(৫)ত্রিপুরার লেখক অভিধান
(৬)কুমারঘাটের ইতিবৃত্ত ও তথ্যপুঞ্জী
(৭)কুমারঘাটেরর স্থান নাম
(৮)ত্রিপুরার লিটল ম্যাগাজিন শিশুসাহিত্য ও অন্যান্য 
(৯)আলোকিত বিজয় রায়
ছদ্মনামের আড়ালে:চৈতন্যফকির

(১)সময়ের গোল্লাছুট

সম্পাদিত:

(১)শতবর্ষের আলোকে সমর সেন:ফিরে দেখা
(২)হিমাদ্রি দেব রচনা সমগ্র
(৩)ত্রিপুরার প্রথম কবিতাপত্র জোনাকি সমগ্র
(৪)অনন্য অনিল সরকার
(৫)জননেতা দশরথ দেব:জীবন ও সংগ্রাম
(৬)কথাসাহিত্যিক শ্যামল ভট্টাচার্য
(৭)সমকালীন ত্রিপুরার পাঁচজন কবি সাহিত্যিক
(৮)পীযুষ রাউত উজ্জল উদ্ধার

সম্মান ও পুরস্কার:

(১)কুমারঘাট নগর পঞ্চায়েত:২০০১
(১)অণির্বান দেশবার্তা:২০১০
(২)উত্তরণ :২০১২
(৩)প্রাণেরকথা:২০১৫
(৪)বিজয়া:২০১৬
(৫)বহ্নিশিখা সম্মান:২০১৭
(৬)কথাশিল্প(পশ্চিমবঙ্গ):২০১৭
(৭)সৃষ্টিলোক:২০১৭
(৮)ক্রিয়েটিভ :২০১২
(৯)ষষ্ট  উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় লিটল ম্যাগাজিন সম্মেলন(আসাম):২০১৬
(১০)বিশ্ব কবিমঞ্চ, আগরতলা শাখা সম্মান:২০১৭
(১১)সমভূমি সাহিত্য সম্মানঃ২০১৮
(১২)উত্তরবঙ্গ সাহিত্য সম্মান(পশ্চিমবঙ্গ) :২০১৮
(১৩)শব্দকোষ সাহিত্য সম্মান:২০১৮
(১৪)মণিহার সাহিত্য সম্মান:২০১৯
(১৫)উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় লিটল ম্যাগাজিন সম্মান(আসাম):২০১৯
(১৬)আন্তর্জাতিক ভাষাচর্চা সম্মান(আাসাম):২০১৯
(১৭)আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা সম্মান(আসাম):২০১৯
(১৮)মাতৃভাষা সম্মান স্মারক (উদারবন্দ,আসাম):২০১৯
(১৯)বিশ্বনাথ দে স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার(সুতপা,ঝাড়খণ্ড):২০১৯

লিখে লিখেছেন এপার ওপারের তাপসী, যুগভেরী,কবি মঞ্চ, ভোরের আলো, উত্তর ভাবনা, কন্ঠসাধন পত্র, দেশ প্রসঙ্গ, সবুজের জয়যাত্রা, ভাটিয়াল, ময়মনিসংহের ‘স্বতন্ত্র’ পত্রিকায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শতবার্ষিকী স্মারকগ্রন্থ,শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত (১৮৮৬-১৯৭১) :আত্মপ্রতিকৃতিত, বাংলাদেশে গোবিন্দ ধরের প্রবন্ধ, নৃপেন্দ্রলাল দাশ স্মারকগ্রন্থ, হাবীবুল্লাহ সিরাজী সংবর্ধনা গ্রন্থ, ভূপতিভূষণ বর্মা সংবর্ধনাগ্রন্থ, প্রভৃতি বিবিধ সাহিত্য পত্র ও স্মরণ গ্রন্থে।

সম্মান ও পুরস্কার 

(১)বিশ্ব কবিমঞ্চ একুশে পদক:২০১৬
(২)কবি আলাউদ্দিন আল আজাদ স্মৃতি পুরস্কার :২০১৬
(৩)বাংলাদেশ বুকক্লাব সম্মান:২০১৭
(৪)দক্ষিণ এশিয়া সাহিত্য সম্মান :২০১৭
(৫)বজ্রকথা সাহিত্য সম্নান:২০১৭
(৬)চট্রগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র সম্মানঃ২০১৭
(৭)সাহিত্য একাডেমি ব্রাহ্মণবাড়ি সাহিত্য সম্মান:২০১৭
(৮)কন্ঠসাধন সম্মান:২০১৮
(৯(বরমা বৈশাখী মেলা সম্মান:১৪২৪
(১০)উষসী সাহিত্য -সংস্কৃতি পর্ষদ সম্মান :২০১৮
(১১)সিলেট বইমেলা অতিথি সম্মান :২০১৯
(১২)জয়বাংলা ইয়থ এয়ার্ড:২০১৯

আমন্ত্রিত অতিথি 

চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র :২০১৭
দক্ষিণ এশিয় সাহিত্য উৎসব :২০১৭
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমি :২০১৭
কন্ঠসাধন আবৃত্তি উৎসব :২০১৮
উষসী আবৃত্তি উৎসব:১৪২৪
কবিমঞ্চ কবিতা আড্ডা :২০১৮
সিলেট বইমেলা:২০১৯
রৌদ্রজল বইপ্রকাশ:২০১৯

ভ্রমণ :

ঢাকা,বাংলাদেশ :২০১৭
রংপুরঃ২০১৭
চট্টগ্রাম :২০১৭
ব্রাহ্মণবাড়িয়া:২০১৭
কমিল্লা:২০১৭
কুমিল্লা :২০১৮
কুমিল্লা :২০১৯
একুশে বইমেলা :২০১৮
সিলেট:২০১৮
মৌলভীবাজার :২০১৮
ব্রাহ্মণবাড়িয়া:২০১৮
ব্রাহ্মণবাড়িয়া:২০১৯
একুশে বইমেলা:২০১৯
সিলেট:২০১৯

থেমে নেই। যতো দিন যাচ্ছে নদীর মতো বাঁক নিচ্ছেন। সাহিত্যের নিত্যনতুন কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছেন।আর বাঁকে বাঁকে গজিয়ে উঠছে একটার পর একটা চেতুয়াংবৃক্ষ।কবিকে নিয়ে কবি অভীক কুমার দের  অনুভব এরকম-"সব ছুটন্ত মানুষ শব্দকে খুঁজে পায় না। যে পায় সে মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পারে। এমনই একজন মানুষ কবি ও গবেষক গোবিন্দ ধর। তিনি নিজের আত্মক্ষরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন। সেই ক্ষরণ থেকে একটি নদী, গোবিন্দ নদী; নদীটির স্রোত নদীকে বয়ে গেছে অনেক দূর---
একদিন এই নদীকে ছুঁয়ে দেখেছি। নদীর গতি প্রকৃতি বুঝতে চেষ্টা করেছি। ডুব দিয়েছি গভীরে। দেখেছি, গোবিন্দ নদী কোনও সাধারণ নদী নয়। তাঁর অনেক গভীরতা। অফুরন্ত জল। স্বচ্ছ আয়নার মতোই ভেতর দেখা যায়। ভেতরে অক্ষরেরা বসবাস করে। অক্ষরগুলো নেড়েচেড়ে দেখি আর অবাক হতে থাকি। তিনি কেমন? - - -  কোনকিছুই স্থিতিশীল থাকে না, তাই অপেক্ষা করছিলাম এই নদীর পরিশেষ দেখবো বলে। - -  না, যতদূর সাঁতরে গেছি গোবিন্দ নদী, অবাক হয়েছি---। "

আমিও সাঁতার কাটছি এই পারে উঠছি তো এইপার ভাঙছে। ওইপারে উঠছি তো ওইপার! ভাঙতে ভাঙতে আমিও যেন কুলহারা মাঝির মতো হারিয়ে যাচ্ছি গোবিন্দ নদীর ঘোরলাগা ডহরে।--"তিতাসের শরীর থেকে তুমি ফেনির অভীক/আমার কোন নদী নেই নদী নির্ভর আমি/
ছোটবেলা জুরীর বুকে সাঁতার শিখতে গিয়ে/ 
কেড়ে নিতে চেয়েছে  বেহুলার লখাই।/
মনুর উত্তাল স্রোত তেমন পারেনি কাবু করতে/
এখন দেওনদীসমগ্র বুকের কম্পাস।/মাঝে মাঝে তিতাস ডাকে/মাঝে মাঝে পদ্নার ইলিস লাফায় বুকের ভেতর।/ পাহাড়ি নদী ডাকে গারো রমণির পিঠের বাচ্চার মতো।/তুমি তো জানোই অভীক/কিছু মানুষ আপন হতে হতে পর হয়ে যায়/কিছু মানুষ মেঘবালিকা/কিছু মানুষ জয়দুল হোসেন/কিছু মানুষ দেবব্রত নিশ্চয়ই।/কিছু মানুষ ঝর্ণা মনি কিংবা সোয়েল সিদ্ধার্থ।/কিছু মানুষ সুফি কিংবা পুলক/কিছু মানুষ সারা জীবন মানিকই থাকেন বুকের ডহরে।/কিছু মানুষ যাদুঘরের মতো বুকের ভেতর/খলবল খলবল সারাক্ষণ এসে ঢেউ দেওয়া জল।/আবার লঙ্গাই/আবার ধলাই/আবার বিজয় গোমতীর জল হয়ে কলকল তারাও নদী।/নদীর জলের নিকট জল আয়না আমি।/নদী নির্ভর এই আমি শঙ্খলাগা দেও।"(দেওনদীসমগ্র)
শুভ জন্মদিন কবি। ভালো থাকবেন আপনি।🙏🙏🙏

0 Comments