কবি ও কথাশ্রমিক গোবিন্দ ধর মুখোমুখি :সঞ্জীব দে
কবি ও কথাশ্রমিক গোবিন্দ ধর মুখোমুখি :সঞ্জীব দে
কবিতায় কবিতায় সম্প্রতি আমরা কবি অশোকানন্দ রায়বর্ধন,গোপালচন্দ্র দাস, অভীককুমার দে,সহ আমি ও অক্ষরশ্রমিক কবি প্রকাশক সম্পাদক গোবিন্দ ধর উত্তরপূর্বাঞ্চল থেকে উত্তরবঙ্গ পরিক্রমা করি ১৬এপ্রিল থেকে ৩০এপ্রিল,২০১৮।আমাদের জার্নি ছিলো ট্রেনে।যাত্রাকালে তাঁকে কিছু প্রশ্ন কাছে পেয়ে করে নিই।তিনিও দীর্ঘ জার্নির ফাঁকে ফাঁকে আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দেন।এই প্রশ্নগুলো কখনো আসামের লামডিং যাত্রার সময় করি আবার কখনো ভূটানের ফুয়েন্টসলিং-এ করি।কখনো বা জয়গাঁয়।আবার কখনো শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, ইসলামপুর,আলুয়াবাড়ি কিংবা ভূটান সীমান্তের ক্যারনেও করি প্রশ্নগুলো।তিনিও চলতে চলতে উত্তরগুলো আমাদের হোয়াসডআপে দেন।এই প্রশ্নউত্তরগুলো সাজিয়ে এবারের শারদ,"বিজয়া"য় তুলে দিলাম ত্রিপুরার পাঠকের পাতে।
গোবিন্দ ধর শুধু কবি নন তিনি একাধারে গবেষকও।তাঁর অক্লান্ত সাহিত্য শ্রমই তাঁকে পরিচিতির আলোকে সারা বাংলাসাহিত্যের মূল স্রোতের পাঠক গ্রহণযোগ্যতা দিয়েছে।
আসুন পাঠ করি ভিন্নরকম এক সাহিত্য যাপন।
প্রশ্ন:১
কবি,আপনি কবি থেকে প্রকাশক নাকি প্রকাশক থেকে কবি?
গোবিন্দ :
আমি প্রথমত কবি।দ্বিতীয় কবি।তৃতীয়তও কবি।কবিতার পাশাপাশি প্রকাশনায় হাতেখড়ি।
কবিতার বই করবো এই ভাবনায় বিভিন্ন প্রকাশনার নিকট ঘুরেছি।প্রায় প্রত্যেকেই তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে বারণ করেছেন।তারা করতে পারবেন না অনামী এক মফস্বল গ্রাম রাতাছড়ার এক অখ্যাতজনের কবিতা সংকলন।
আবার কেউ কেউ টাকা চাইলেন।কেউ কেউ ২০০কপি বইয়ের টাকা অগ্রীম দিতে বললেন।আমার তখন নিজে ভাত পেতেই হিমসিম।সখ কে শিকয় তুলে কবি জন্মের প্রতি ধিক্কার জানিয়েছি।
কলকাতার প্রতিভাসকে বললাম একটি সংকলন করুণ। প্রকাশক টাকা ছাড়া বই করবেন না সাফ জানিয়ে দিলেন।অগত্যা আমার ভেতরের কবির আত্মপ্রকাশ ঘটুক চাইছিলো।তাই দিলাম পান্ডুলিপি।আমার সাথে পদ্মশ্রী মজুমদারও একটি পান্ডুলিপি দিলাম।আমার বইটি জলঘর।ওর বৃষ্টিকণা।হ্যাঁ টাকা দিয়েই আমার প্রথম বইটি কবিতা প্রতিমাসে থেকে প্রকাশিত।
তারপরই পুরোপুরিভাবে সিদ্ধান্ত নিলাম টাকাই যখন দেবো তাহলে নিজের বই নিজে প্রকাশ করবো।চলে এলাম প্রকাশনার মতো একটি শৈল্পিক রুচিশীল কাজে।অনেক বই প্রকাশ করলাম।প্রায় চারশত নতুন বই আমাদের এখন।শুধুমাত্র কোন প্রকাশক বইটি প্রকাশ করলে হয়তো প্রকাশনায় আসতে হতো না। এটা তাই আমার ব্যবসা নয় ভালোবাসা।নেশাও।আমাদের প্রকাশনা স্রোত।অনেক তরুণ তরুণীরা যেখানে ঠগতে হয় না।আমরা প্রথম থেকেই বলি স্রোত প্রকাশনা শুধু সুমিতা পাল ধরের নয়।সকল লেখক কবিদের।এটাই আমার ভালো লাগা।ভালোবাসি বলেই প্রকাশনা।আর কবিতা আমার আত্মজ আত্মজা গৌরব ও গৈরিকা।
প্রশ্ন:২
কবি হওয়ার বাসনা কি করে হলো?
গোবিন্দ :
কবি হওয়ার কোন বাসনা নেই।কবিতা আমাকে দিয়ে লিখিয়ে নেয়।আমি কবিতার কিছুই নয়।লেখি ভালো থাকবো বলে।পড়ি পিছিয়ে যেতে চাই না বলে।
কবিতা আমার জীবনের শ্বাস।বহু কিছু আমায় কবিতা দিয়েছে।আমি কবিতাকে কিছুই দিতে পারিনি।প্রতিদিন মনে হয় সেরাটা লিখবো। লেখি কিন্তু কবিতা হয় বলে আমি নিজেও শ্লাঘাবোধ করি না।কবি হওয়ার বাসনা নয় বরং কবিতা যাপনই আমাকে অনেক কিছু থেকে বিমুখ করেছে।কবিতা লিখবো বলে লিখি না।কবি হওয়ার জন্যও নয়।কবিতা আমার হৃদি চংপ্রেম।
প্রশ্নঃ৩
কবি পরিচয় না দিয়ে আপনি প্রায়ই নিজেকে অক্ষর শ্রমিক পরিচয় দিতে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন কিন্তু কেন?
গোবিন্দ :
যা লিখি তা শ্রমেরই বিষয়।কাজই মনে করি।জীবনটা মেন্ডিজ কাজ দিয়ে শুরু করি।
এখনো শ্রমই করতে চাই।শ্রম একাগ্রতা সব মিলেই হয়ে ওঠা লাগে।
কবিতা লেখতে চাই।মনে হয় হচ্ছে না।আবার লিখি।এরকম একই বিষয়ই বারবার লিখি।কত কবিতা নষ্ট করেছি।সাফল্য খুব কঠিন কঠোর শ্রমেরই অংশ।আমার শ্রমিক থেকে কবিতায় চলে আসাকে তাই মনে রাখতে চাই।নিজেকে বলি অক্ষরশ্রমিক।শব্দশ্রমিক।কবিতা আমার শ্রমের একটি অংশমাত্র।শ্রমের মাধ্যমে কবিতা খনন করি।কবিতা তো শ্রম দাবি করে।শুধু বইমেলা মঞ্চে হাসি হাসি মুখ করে অভিনয়ে কবিতা পাঠই কবিতা নয়।কবিতা লেখা সাধনার বিষয়।শ্রমের বিষয়।এমন ভাবনা থেকেই কবি বলার শব্দশ্রমিক ভাবতে ভালো লাগে।
প্রশ্নঃ৪
পঞ্চাশ বছর আগেও নারায়ণ চৌধুরী কে নবীন ও প্রবীন বিতর্ক সম্পর্কে কলম ধরতে দেখেছি, বর্তমান সময়ে এই নিয়ে আপনি কি বলবেন?
গোবিন্দ :
কবিরা চির তরুণ। অন্ততপক্ষে এরকমই আমার ভাবনা।যারা বিতর্ক ভালোবাসেন করতেই পারেন।
আমি তবুও নিজেকে টাটকা তরুণই ভাবি।নাররায়ণ চৌধুরীও তাই মনে করে কলম ধরেছেন।এখানে বয়সটা মুখ্য নয়।কবিতায় কতটুকু কবি তারুণ সেটাই কথা।
একজন কবি ততদিনই তরুণ যতদিন তার কলমে কন্ডম লাগেনি।
প্রশ্নঃ৫
বর্তমান সময়ে প্রকাশনা জগতেও গোষ্ঠি কোন্দল প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে, কী বলবেন?
গোবিন্দ :
আমি চাই ত্রিপুরায় আরো নতুন নতুন প্রকাশক আসুন।জন্ম নিক প্রকাশনা হাউস।
তাই নতুন কেউ প্রকাশনায় এলে সাধুবাদ জানাই।
কত বিষয় নিয়ে কাজ পড়ে আছে।
কেউ একজন তা সারা জীবন প্রকাশ করেও শেষ করতে পারবেন না।
আমি কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা চাই সুস্থ সংস্কৃতি।
কোন্দলে নেই আমি।আমি মনে করি সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এগিয়ে নিয়ে যাবে ত্রিপুরার সাহিত্য আকাশ।কারো সফলতায় আমি খুশি হই।কিছু করতে পারলে ভালো লাগে।যাদের সামনে বিষয় থাকে না উনারা কোন্দলে জড়িয়ে পড়েন।কপউ কেউ জড়াতে চান।আমার কাজ করতে করতে মনে হয় রাতদিন যদি ৪৮ঘন্টা হতো।তবুও ভাবনার সব কাজ শেষ করে যেতে পারবো না।
প্রশ্নঃ৬
ত্রিপুরার প্রকাশনা জগতে আপনি একটা আন্দোলন, উদ্যমশীল গতি আপনার, ত্রিপুরার বর্তমান লেখালেখি সম্পর্কে আপনার মতামত কী হবে?
গোবিন্দ :
ত্রিপুরার লেখালেখি একদিন বাংলাসাহিত্যের পথ প্রদর্শক হবে।এই মাটির সুবাতাস ছড়িয়ে পড়বে সব অঞ্চলে।এমন বিশ্বাস নিয়েই কাজ করি।
কতটুকু হলো পরিমাপ করি না।কাজ করি তাতেই আনন্দ আমার।
প্রশ্নঃ৭
বহু তরুন কবি আপনি আবিস্কার করেছেন, এর মধ্যে অনেকেই খুব ভালো লিখছেন, তাদের সম্পর্কে কিছু শুনতে চাই।
গোবিন্দ :
এরকম আমি ভাবি না।সলতে পাকালে ভালো লাগে।আবার কবিদেরকে আবিষ্কার করতে হয় না।ওরা নিজেরাই জানান দেন।
তবে ক্রমাগত উৎসাহিত করি।ভালো লাগে।
আমাদের সময় পিঠ চাপড়াবার কেউ ছিলেন না তো তাই।তখন নিজেই নিজের সাথে লড়ে এই কবি জীবনে প্রবেশ।
এখানে সূচাগ্র মেদিনীও কেউ কাউকে দিতে রাজী নয়।তার মাঝে কেউ কেউ এমন আছেন যারা অন্যরা সৃজনশীল হলে আনন্দিত হন।বলতে পারি আমারও এমন ভালোবাসা থেকে তরুণদের কাছে ডেকে নিই।আবার ওরাই আমাকে বয়কট করেন।তাতে তৃপ্তিও পাই।কবিরা চিরকাল একা।আমিও।তুমিও।সকল কবিই একা।একা হওয়ার সন্যাস তাদের সাধনা।সুতরাং আমি কিছু করেছি দাবি করি না।
কেউ একজন হয়ে উঠলে আমি তৃপ্তিতে থাকি।এটাই আমার ভালোবাসা।হয়তো কেউ কেউ হজম করতে পারেন না বলে শেষে আমাকেই বাদ দেন।তাতেও আমি আমার দর্শন থেকে সরি না।
আমি কারো নাম বলতে চাই না।তখন উনি আরো ক্ষেপে যাবেন।আমি কারো ক্ষেপা চাই না।কবি তো একজন সৈনিক।তার কলম হোক অস্ত্র।
প্রশ্নঃ৮
বিদ্যালয়, পরিবার, প্রকাশনা, লেখালেখি সব মিলিয়ে দারুন ব্যস্ততা, কিভাবে এতকিছুতে মনঃসংযোগ করেন? যদি বলেন?
গোবিন্দ :
যখন যে কাজটি করি তখন তাতে গভীরতম মনোযোগ দিই।মনোসংযোগই সাফল্যের চাবিকাঠি এমনই ভাবি।
আলাদা কোন প্ল্যান নয়।বরং স্কুলের কাজ যখন করি তখন কবিতা লিখি না।প্রকাশনার কাজ টখন প্রতিদিন একটু সময় দিতে হয়।
লেখালেখি করতে আলাদা সময় বের করি না।
চলতে চলতে লিখি।এখন খাতায় লেখা হয় না।মোবাইলে লিখি।একটা সুবিধেও পাই।বারবার এডিটিং। কোন কোন লেখা একবারই টানা লেখি।
লেখক বা কবি হবো বলে লপখি না।ভেতরের লাভা বের করে দিতেই কলম তুলি।মনেরাখা আগুন বেরিয়ে গেলে অনেক সময় ফিরেও তাকাই না।
এখন নিজের লেখার চেয়ে অন্যের একটি ভালো পান্ডুলিপি আবিষ্কার করতে রাতদিন এক করে দিতে পারি।এটা কোন নিয়মেই বাঁধি না।যখন যে রকম তখন সেরকমই আমার শ্রম ভাগ করি।
প্রশ্ন :৯
ত্রিপুরায় ভারতের আন্তর্জাতিক লিটল ম্যস্রোাগাজিন উৎসব:২০১৬ স্তোতই প্রথম করেছিল। ত্রিপুরায় বর্তমানে প্রচুর লিটল ম্যাগাজিন হচ্ছে গ্রাম থেকে শহরে, স্রোত কর্ণধার হিসাবে বর্তমান লিটল ম্যাগাজিনের কোন দিকটি আপনাকে আহত করে এবং লিটল ম্যাগাজিন সম্পর্কে নতুনদের উদ্দেশ্যে আপনার বার্তা কী হবে?
গোবিন্দ :
আমি একা সেই সাফল্যের অংশিদার নয়।ত্রিপুরার সকল লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক আন্তরিক সহযোগিতায় ও সাহিত্য একাডেমীর সহযোগিতায় এই মহত্তরো উৎসব সমাপন হয়।বিশেষ করে তুমি,অভীক বিল্লাল,আব্দুল আলিম,অপাংশুসহ কবি রামেশ্বর ভট্টাচার্য কবি দিলীপ দাসসহ অসংখ্যজন এতে সহযোগিতা করেছিলেন।কবিতাঘর সম্পাদক পদ্মশ্রী মজুমদার,সন্ধ্যা ভৌমিক,দীপান্বিতা সেনগুপ্ত,রতন আচার্যও সহযোগিতায় দরাজ ছিলেন বলেই এরকম উৎসব সম্পূর্ণ হয়েছে।
এখন সম্পাদনা সহজ মনে করে অনেকেই সম্পাদনায় হাতেকড়ি দেন।বুদ্ধদেব বসুর কবিতা পত্রিকার কাছে অনেকেই যেতে পারেননি।আমাদের রাজ্যেও বিষয় ভিত্তিক গুছানো কাজ হচ্ছে।পূর্বমেঘ,মুখাবয়ব,উন্মেষ জলজসহ বেশ কিছু কাগজ ত্রিপুরার লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনেমাইল ফলক।স্রোত'ও এরকম কাজ করে থাকে।
এই সময় রাজ্যে দৈনিক কবিতার অন লাইন ভার্সন" দৈনিক বজ্রকণ্ঠ"সহ প্রায় ৫০এর অধিক কাগজ বের হয় নিয়মিত অনিয়মিত।
আমি চাই আরো কাগজ হোক।হচ্ছেও।যেমন মনুতট,সৃষ্টিলোক,সমতট,সমকাল,কুসুম,রূপান্তর,বিজয়া,কবিতাঘর,কবিতার খেয়া,কুসুমিতাসহ,অন্তক্ষরণ,পাখিসব করে রব,অনার্য, প্রজন্ম চত্বর,নীলকন্ঠ,বহ্নিশিখা, কির্ণকালসহ অনেকগুলো কাগজই কাজ করছে।এটা আশার কথা।পাশাপাশি নিরাশার কথা হলো ত্রিপুরায় একটি মাসিক সাহিত্য পত্রিকা এতোদিনেও নিয়মিত বের হলো না।যদিও, রাজধানী আগরতলা,একুশ শতক এক কালে কিছুদিন বেরিয়েছে।নতুনরা এগিয়ে এলে নিশ্চয়ই মাসিক কাগজ হতেই পারে।
তরুণরাই তো কাগজ করবে হইচই করবে।ক্ষ্যাপামি করবে।নতুন শব্দ নিয়ে আসবে।টানটান এক সাহিত্য পরিবেশ আসবে ত্রিপুরায় যেখানে নবীন প্রবীন এক হয়ে যাবে।চবার নিজের অস্তিত্বের জানান দেবে লিটল ম্যাগাজিনের পাতায়।সে অর্থে তেমন কিছু হইচই কই সঞ্জীব।এ আমার আক্ষেপও।
প্রশ্নঃ১০
জীবনের জন্য কবিতা, নাকি কবিতার জন্য জীবন?
গোবিন্দ :
কবিতার কোন দায় বদ্ধতা নাই।জীবন ও কবিতা একে অন্যের পরিপুরক।আবার কবিতা কবিতাই।জীবন জীবনই।জীবনেরও কবিতা আছে।কবিতায়ও জীবন আসে।
কবিতা সমাজ বদলের হাতিয়ার হতে পারে।আবার নাও হতে পারে।কবিতা সুন্দরের নির্মাণ করে।প্রতিবাদ সাম্যবাদ কবিতার বিষয় হতে পারে।কবিতা রাজনৈতিক হতে পারে।আবার অরাজনৈতিকও হতে পারে।কবি তো সমাজেরই একজন প্রতিনিধি। সুতরাং সমাজেরই ভাষা তার যাপনেরই শব্দ।সমাজ বাদ দিয়ে কবিতা নয়।কবিতাকে বাদ দিয়েও সমাজ নয়।যদিও কবিতা অর্থকড়ি রাজগারের মাধ্যম নয়।অনেকটা ত্রিপুরায় নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো।হয়তো কোন কোন কবিতা অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণেও অংশ নিতে পারে।আমাদের রাজ্যে কবিতা কোন অর্থনীতি বদলের কাজ করে না।এটা অনেকের কাছেই কিছুটা বিলাসিতা আবার কিছুটা হলেও না লেখে পারি না বলে লেখা।হয়তো কবিতাই পারে যুদ্ধে সৈনিকের মনোবল বাড়ানোর টনিকের কাজ করতে।
প্রশ্নঃ১১
অনেক কবি বলেন ,,,আমি নিরপেক্ষ, আসলে কেউ কি নিরপেক্ষ হতে পারে?কবি, কবিতা ও নিরপেক্ষতা এই তিনটি শব্দের যোগসুত্রতা সম্পর্কে আপনার মত জানতে চাই।
গোবিন্দ :
নিরপেক্ষ বলে কিছু নেই।সকল বিষয়ের সাথেই পক্ষপাত থাকে।কবি কবিতা ও নিরপেক্ষতা কারো সাথে কারো যোগ নেই।কবি কবির জমিন ধরে কবিতায় থাকেন।কবিতা লিখতে নিরপেক্ষতার দরকার নেই।একজন মানুষ হয়ে উঠতে নানাহ সিঁড়ি বেঁয়ে উঠতে হয়।নিরপেক্ষতা নিয়ে একজন মাও হয়তো তার শিশুকে দুধ দেন না।আমার মনে হয় সকল কাজেই একপক্ষ অবলম্বন করা মানুষের চিরন্তন অভিব্যক্তি।কবিও মানুষ।সুতরাং কবি রক্ত মাংসের অনুভূতি নিয়েই এই সমাজের আলো হাওয়া রৌদ্র নিয়ে এগিয়ে যান।কবিও সকল সময় নিরপেক্ষ থাকেন কোথায়?কেউ কেউ তো এরকম পক্ষপাত করেন তা টের পাওয়াও যায়।হয়তো পক্ষপাতের মাঝে ভালোবাসা থাকে।আবার হিংসাও থাকে না তাও নয়।সুতরাং নিরপেক্ষতা আসলে আপেক্ষিক বিষয়।আমার যা নিরপেক্ষতা তোমার তা পক্ষপাত বলে মনে হতে পারে।
প্রশ্নঃ১২
আপনার ভালবাসা?
গোবিন্দ :
শিশু,ফুল আর কাজ।
প্রশ্ন:১৩
আপনার ঘৃনা?
গোবিন্দ :
পাকামিকে ঘৃণা করি।ইচ্ছে করে হেনস্থা করা জটিল মানুষকে, প্রতারণাকে ঘৃণা করি।
প্রশ্ন:১৪
আপনার প্রিয় গান?
গোবিন্দ :
অসংখ্য গান দুঃখে, হেরে গেলে শুনি।
রবি ঠাকুরের গান ভালোবাসায় শ্রদ্ধায় নত করে।
নজরুলও শুনি।বাংলা গান, গণসংগীত আমার পথ চলতে প্রেরণা।
গানের কলিগুলোও দেবো।
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলরে:রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলরে:রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
প্রশ্নঃ১৫
দিন দিন আমরা চরম অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছি -- কি সাহিত্যে কি সমাজে,, এই বিষয়ে আপনি কী ভাবছেন ?
গোবিন্দ :
আমাদের ছোটবেলা ছিলো সরল জীবন যাপন।ছিলো যৌথ পরিবার।চাহিদার চেয়ে তখন যোগানের সল্পতা ও ছিলো।কত স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেছে।চাইলেও তখন পেতাম না। খেলার সামগ্রী বলতে তেতুল বীচি,করবীর গোটা,কিৎ কিৎ খেলায় ভাঙ্গা কলসীর টুকরো,কাবাডি, গোল্লাছুট, মইন,জলডুব মঙ্গলকাঁটাকাঁটি,সাত গর্ত ওপেন টু বাইস কুট এসব বিনি পয়সার খেলায় আমরা কত আনন্দিত হতাম।এখন শিশুরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে ওঠে।মা বাবাও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠতে সহযোগিতা করেন।ইংলিশ স্কুলে ছেলে মেয়েকে পাঠিয়ে গেটে দাঁড়িয়ে থাকেন।অথচ আমরা স্কুলে একা একা যেতাম।এখন গাড়ির বেপরুয়া চলন।
একটি শিশুর শৈশব থেকেই সে হয়ে উঠে মা বাবার আলালের ঘরের দুলাল।টিপিনের শেয়ার না করতে মা শিখিয়ে দেন।
এই শিশু বড় হয়ে বুঝে তার কোন ভাগ করার কথা নয়।মা বাবাকেও বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিব্বি সে স্ত্রী পুত্র নিয়ে সংসারী। সমাজ এরকম ধীরে ধীরে সহিষ্ণুতা হারিয়ে ফেলেছে।আমরা হয়ে উঠছি অসহিষ্ণু।তার প্রভাব গল্প কবিতায়ও আসছে।এটাই স্বাভাবিক।
প্রশ্নঃ১৬
আপনার এযাবত লেখা কবিতার মধ্য কোন কবিতাটি আপনার চোখে শ্রেষ্ঠ বলে মনে হয়? কবিতাটি যদি শুনাতেন
গোবিন্দ :নিজের লেখা থেকে নিজের শ্রেষ্ঠ বাছাই কঠিন বিষয়।তবুও মনে হয় অর্জুন কবিতাটি একটু অন্যরকম।
অর্জুন
লক্ষ্যস্থির রাখো পাখির চোখ হোক দিল্লি।
দ্রোণাচার্য:সামনে কি দেখছো অর্জুন?
অর্জুণ:শুধু চোখেরমণি আর কিছু না।
দ্রোণাচার্য :তাহলে গুণ টান টান করো।
অর্জুন:হ্যাঁ গুরুদেব।
দ্রোণাচার্য :সময় কম।আমাদের অনেক কাজ তৃতীয় পান্ডব।
অর্জুন :আপনার শিক্ষা,আপনার আদর্শ আর আদেশ শিরোধার্য গুরুদেব।আপনি আদেশ করুন।
দ্রোণাচার্য :জয় হোক পার্থ।
অর্জুন :যথা আজ্ঞা গুরুদেব।
স্থির লক্ষ্যে অর্জুন ধনুর্বাণ নিক্ষেপ করার আগেও পাখিটির চোখের ভেতর এক সাগর জল ছিলো।ছিলো জীবন।দানাপানি আর স্বপ্ন।পাখিটিও স্বপ্ন দেখতো নিজের ছানা। স্ত্রী।একটি নিবিড় নীড়।তার বুকেও ওম।সেও অর্জুনের মতো স্থির লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছিলো।
পাখিটির চোখের গভীর থেকে স্বপ্ন বেরিয়ে ডানা ঝাপটে উড়বে ঠিক সেই সময় তীর নিক্ষেপ হলো।পাখির চোখ থেকে মণি ফালা ফালা হয়ে রক্ত শুধু রক্ত গড়িয়ে যাচ্ছে।
ঠিক তখন:অর্জুনের মানুষ মন থেকে এক দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে গুরুদেবের শরীরের উপর পড়লো।গুরুদেব বিচিলিত নয়।
বললেন :লক্ষ্য স্থির রাখো শিষ্য।আমাদের এছাড়া কোন পথ নেই।কান্না মন বিবেক এসব এখন বড় বিষয় নয়।আমাদের সামনে পা ফেলতেই হবে।পায়ে পায়ে এগিয়ে যাবে সত্য।সত্য সুন্দর।তার কোন বিকল্প নেই।স্থির বিশ্বাসে এগিয়ে যাও।পাখিটির নির্বাণ অনিবার্য বৎস।
১২:০৩:২০১৮
বেলা:০১:৩০মি
দিল্লির আকাশ
(মাঝ আকাশ)
প্রশ্নঃ ১৭
গোবিন্দ ধর থেকে কবি প্রকাশক গোবিন্দ ধর হওয়ার পেছনে কার অবদান সব চেয়ে বেশি বলে মনে করেন?
গোবিন্দ :
আমি কবি না প্রকাশক এরকম ভাবি না।কবিতা লেখি নিজের আত্মাজলের অক্ষরে।আমার আত্মার অক্ষর কবিতা।আমার লেখালেখি।প্রকাশনা কিছুটা দায়বদ্ধতা থেকে করি।দায়বদ্ধতা আর নিজস্বতা আলাদা বিষয়।দুটো বিষয়েই কবি সাহিত্যিক ও আমার প্রিয়জনদের অবদান আছে।বাবা মা পদ্মশ্রী গৌরব গৈরিকা সুমিতা আমার ঘরের সকলেরই সহযোগিতা ত্যাগের রেজাল্ট। সব চেয়ে বেশি কষ্ট যে দেয় তাকে প্রেরণা বা অবদান হিসেবেই নিই।কাজ করলে সমালোচনা হয়।সমালোচনা থেকে শিখি।শিখতে শিখতে চলি।চলতে চলতে শিখি।
অবদান হিসেবে নিই।এই যে তুমি অভীক অশোকানন্দ তোমাদেরও অবদান আছে আমার হয়ে উঠায়।বাদ নয় বিশালগড়ের অপাংশু আলিম গোপেশ পঙ্কজ বিল্লাল বিদুৎ এমন কি সারা বাংলা সাহিত্যের সকলেই আমার হয়ে উঠায় অবদান রাখেন।
প্রশ্নঃ১৮
ত্রিপুরায় বই প্রকাশের ক্ষেত্রে নির্ভূল বই প্রকাশ করার কি কি অন্তরায় আছে বলে মনে করেন?
গোবিন্দ :
নিশ্চয়ই আছে।ডিটিপি প্রুফ সেটিং করে পাঠানো হয় ছাপতে।সেখানে যিনি বইটি ছাপেন আর প
প্রকাশক যেমন ভাবেন তাতে একটা বুঝার বিষয় থাকে।যদি বুঝাতে কোন রকম ঘাটতি হয় তো বইটিও ছাপতে ভুল হয়।
একবার একটা মলাটে লেখকের স্বাক্ষর ছিলো।লেটারিং করে লেখকের নাম লেখা ছিলো।ফোনে বলেছি লেখকের স্বাক্ষর মুছে কভার ছাপা করতে।কিন্তু মেশিনম্যান লেখকের স্বাক্ষর ও লেটারিং দুটোই তুলে দেন।এতে বইটির নান্দনিকতা নষ্ট হয়।
ত্রিপুরায় এরকম অজস্র অন্তরায় আছে।তবুও প্রতি নিয়ত চাই সকলেই চাই বইটি হোক নির্ভুল।
প্রশ্নঃ১৯
নামি অনামী অনেক লেখক কে দেখেছি নিজের টাকায় বই করতে আবার অনেক প্রকাশককে ফ্রীতেও বই করে দিতে দেখেছি কিন্তু দেখা যায় তার খরচটাই উঠলোনা? অথবা রাজ্যে রাজকীয় মাসিক সাম্মানিক দেওয়ার রীতিও নেই, একজন প্রকাশক হিসাবে আপনি কিভাবে দেখছেন বিষয়টা?
গোবিন্দ
একজন লেখকের প্রথম বই পাঠকের সাথে পরিচিতি ঘটায়।এভাবেই ধীরে ধীরে একজন লেখক পাঠকের প্রিয় লেখক হয়ে উঠেন।লেখকের আঁতুর ঘর আসলেই লিটল ম্যাগাজন।লিটল ম্যাগাজিনে লিখেই লেখক হয়ে ওঠেন।মস্ক করেন হাত।তখন তার পরিচিতি হয়।তারপর বই।সব মিলে একজন লেখকের পাঠক তৈরী হয়।আমাদের ত্রিপুরায় সাকুল্যে মাত্র কয়েকজন পাঠক।একটি বই সবগুলো বিক্রি হতে চাই পাঠকের সাথে লেখকের কতটুকু পরিচিতি আছে তার উপর।পাশাপাশি এখানে ব্যক্তিগত করিসমাও কম বিষয় নয়।সব মিলেও বই বিক্রি দিয়ে একটি বইয়ের খরচা এক বছর নয় কয়েক বছরেও অধরা থেকে যায়।সুতরাং দুই রকমই করতে হয়।প্রতি বছর গাঁটের কড়িতে আর ক'খানা বই প্রকাশ সম্ভব।তাই লেখক প্রকাশক যৌথ সহযোগিতায়ই চলছে ত্রিপুরার প্রকাশনা।সকলেই আশায় আছেন হয়তো সাহিত্যের বই এক সময় প্রচুর বিক্রি হবে।তার উপর কোন অর্থ মূল্যের সম্মাননা খুব কম।
এখানে এক মাত্র সরকারী পৃষ্ট পোষকতা ছাড়া লেখক প্রকাশকের বই বিক্রি বলো বা সম্মানিক বলো খুব একটা সুযোগ নেই।যাও চলছে তাও সীমিত।আরো আরো এগিয়ে আসা লাগে বড় বড় প্রকাশনা।না হয় স্বপ্ন অধরাই থাকবে।সুতরাং তোমার প্রশ্নের উত্তর হলো কিনা জানি না তবে কিছু হলেও সাফল্য আসছে না তাও ঠিক নয়।প্রকাশকরা তো প্রকাশনায় লগ্নি করছেন।সম্মাননা বা সাম্মানিক দেওয়া তাও রাজকীয় এখনো ত্রিপুরায় অকল্পনীয়।হয়তো একদিন সুদিন আসবে।তখন অনেক স্বপ্ন পূরণ হবে এমন প্রত্যাশা অমূলক নয়।
প্রশ্নঃ২০
নবীন কবিদের তুলে আনতে আপনার উৎসাহের খামতি নেই, নবীন কবিদের নিয়ে আপনার অনেক স্বপ্ন, নবীনদের উদ্দেশ্য কিছু শুনতে চাই?
গোবিন্দ :
মূলত কেউ কাউকেই কবি করতে পারে না।প্রকৃত পক্ষে কেউ কবি হলে সে একদিন প্রচারে আসবেই।আমি একা নয় ত্রিপুরায় অনেকেই নতুনদের তুলে আনতে চেষ্টা করেন।আমিও হয়তো তোমার দৃষ্টিতে এমন তুলে আনার দায়িত্ব পালন করি মনে করো।সে তুমি আমায় ভালোবাসো বলেই আমার সব কাজকেই সৎ ও সুন্দর ভাবো।প্রকৃতপক্ষে নতুনরা লেখালেখিতে না এলে শূন্যতা সৃষ্টি হয়।ত্রিপুরায় বারবার গুটি কয়েক লেখকরাই লেখালেখি করছেন এক সময়।তা প্রায় নব্বই দশক অব্দিই এমন এক ত্রিপুরা আমরা পাই।তারপর শূন্য দশক থেকে ত্রিপুরায় কবি লেখক হু হু করে বাড়ছেন।তার কারণ উপযুক্ত বিচরণ ভূমি।সে নিশ্চয়ই লিটল ম্যাগাজিনের প্রকাশের কারণ।সর্বপরি সাহস ও এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণার যোগান দেওয়া।নিশ্চয়ই এরকম জমি ত্রিপুরায় তৈরী হয়েছে বলেই নবীনদের উঠে আসতে সুবিধে হচ্ছে।এটা একক কোন ক্রেডিট নয়।আমারও একার এই চাওয়া নয়।আরো অনেকেই এরকম চান বলেই ত্রিপুরায় নবীন লেখক কবিরা তাদের বিচরণভূমি পান।আমিও চাই নিশ্চয়ই চাই ত্রিপুরায় নবীনরা আরো আসুন কবিতায়।গল্পে।সাহিত্যের সকল শাখায়।এতে ত্রিপুরার সাহিত্যই সমৃদ্ধ হবে।আগামী হবে সমৃদ্ধতরো।
প্রশ্ন :২১
আজ কাল কবিতা কোন দিকে যাবে বা কবিতার বিষয় কি হওয়া উচিত --কেউ কেউ তার দিক নির্দেশ করার চেষ্টা করছেন --- সব জায়গায় গোচরে -অগোচরে রাজনীতি ঢুকে পড়ছে --- সব মিলিয়ে এই সম্পর্কে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাই কবি?
গোবিন্দ :
কবিতার নির্দিষ্ট কোন বিষয় হয় নাকি?কবিতা কোন বিষয়েই দাঁড়িয়ে থাকে না।কবিতার কাছে কোন বিষয় অচ্ছুৎ নয়।কবিতা কৃষ্ণাবয়ব।কৃষ্ণগহ্বর।কবিতা সব গিলে খায়।কবিতা সর্বভুক।
তার পরেও কবিতাকে কেউ দিক নির্দেশ বাৎলে দিলে তা ছেলে মানুষী ছাড়া কিছু নয়।
কবিতায় রাজনীতি অরাজনীতি প্রতিবাদ প্রেম সবই আসবে।
কবিতা বিভিন্ন ভাবধারার হয়।যার যেমন রাজনৈতিক ভাবনা তেমন তার কবিতাও।কবিতা কবির জীবন দর্শনের এক ভিন্নমাত্রিক পাঠ।
হ্যাঁ আজকের সময়ে কবির প্রতিও আকারে প্রকারে নিজের মত চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা আছে বৈকি।
একজন কবি তার স্বতঃস্ফূর্ত উচ্চারণেই লিখবেন এমনই হওয়ার কথা।কথা বলতে যেমন চাই স্বাধীনতা তেমনি কবিকেও তার লেখালেখির স্বাধীনতা দিতে হবে।সমাজ রাষ্ট্র থেকে ভয় মুছে দিতে হবে।সন্ত্রাস দমন করতে হবে। উগ্রবাদ দমন করতে হবে।
রাষ্ট্র হবে সকল নাগরিকের নিরাপদ ঘর।কবিরা তখন তার কবিতায় তুলে আনবে জীবনের গান।বাঁচার সুবাতাস।সবুজ। সকলেই সমান তালে অক্সিজেন নেবে।এমন হলে আর কোন বৈষম্য থাকবে না বলেই বিশ্বাস করি।কবিতাও হবে দিগন্তে উড়ানের সাক্ষী। এমন এক ভোর আসুক সকল কবিরাই হয়তো মনে প্রাণে চান।আমিও তার ব্যতিক্রম নয়।
0 Comments