ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলা 
:একটি মন্তব্য ও নানা আলোচনা 




ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ায় শিল্পে অনন্যা আয়োজিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলা :২০২৩

সকাল সকাল আগরতলা বীর বিক্রম মানিক্য আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টে পৌছলাম। তখন সকাল ৭টা ১০ মিনিট।আমাদের বোর্ডিং ৮টা৩০ মিনিটে।কলকাতা পৌঁছলাম ১০টা ছুঁই ছুঁই। নেতাজী সুভাসচন্দ্র বোস আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট থেকে এসি বাসে করে  হাওড়া স্টেশনে এলাম প্রায় ১২টা তখন।দুপুরের খাওয়া শেষে দীর্ঘ সময় বসে আছি হাওড়া রেলস্টেশনে। আমাদের ট্রেন মিথিলা এক্সপ্রেস। ছাড়বে ৩টা ৫৯ মিনিট।জামতাড়ায় পৌঁছার কথা ৮:৫৯ মিনিটে।কিন্তু ট্রেন বরাবরই সময়ে গন্তব্যে পৌঁছার অভিজ্ঞতা নেই 
অবশেষে জামতাড়া ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলায় উপস্থিত হলাম।স্টেশনে ভোলা রাম সাকরা রিসিভ করে রাত ১০টায় নিয়ে এলেন অনুষ্ঠান মঞ্চে। বইগুলো রাখলাম। তারপর রাতের খাওয়া।রুটি রাইস তরকা ডাল সবজি মিস্টিমুখ শেষে হোটেলে এসছি।টটো করে এলাম।আমাদের রাতে থাকার জায়গা 
ডায়মন্ড merried হল বাস স্ট্যান্ডের আগে রুম নম্বর ৩।
স্টেশন থেকে গাড়ি করে নিয়ে এলেন।বিয়েবাড়িতে খাওয়ার আয়োজন।পাশেই অনুষ্ঠান মঞ্চ। তার নিকট মেলার টেবিল সেজে উঠেছে।
দীপককুমার সেনদা ও কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায়দা উষ্ণ অভ্যর্থনায় বরঙ করে নিলেন আমি গোবিন্দ ধর, সুমিতা পাল ধর ও গৌরব ধরকে।আগামীকাল সকাল সাতটায় প্রভাতফেরি। অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল ১০টা আগামী তিনদিন ব্যাপী।
রাতে অনুষ্ঠান হলের সামনেই দেখা হলো অরূপ কুমার মিত্র ও বাউলশিল্পী শাশ্বতী বানার্জীর সাথে।

২৭:০৭:২৯২৩
রাত:১১টা১৫মি।
জামতাড়া, ঝাড়খণ্ড।
 ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া বরাবর আতঙ্কের নাম হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছে ৷ সেই জামতাড়াতেই এবার প্রথম বইমেলার আয়োজন করলেন সেখানকার বাঙালিরা ৷

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন মেলায় বই প্রেমীদের ভিড় উপচে পড়ে                              

 ২৮ জুলাই ২০২৩:শুক্রবার জামতাড়া শহরের সেন্ট এন্থনী স্কুল চত্বরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন সহ গ্রন্থ মেলার উদঘাটন করেন আয়োজন সমিতির সভাপতি ড দীপক সেন ও ভারত জ্ঞান বিজ্ঞান সমিতির জাতীয় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড কাশীনাথ চ্যাটার্জি ।

উপস্থিত ছিলেন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা সমিতি ঝাড়খণ্ডের স্টেট সেক্রেটারি গৌতম চট্টোপাধ্যায় ,বিহার বাঙালি সমিতির রাজ্য সমিতির কর্ণধার বিদ্যুৎ পাল ,সুনির্মল দাস ,অধ্যাপক তন্ময় বীর ছাড়াও স্রোত সম্পাদক কবি গোবিন্দ ধর, ত্রিষ্ঠুপ সম্পাদক ও কবি ব্রজকুমার সরকার,আরিত্রিক সম্পাদক ও কবি দুর্গাদাস মিদ্যা।ছিলেন  বিহার বাঙালি সমিতির পূর্ণিয়া শাখার অজয় সান্যাল। বাংলাদেশের লেখক ,কবি ও সাহিত্যিক আইনজীবী  মুজিবুল হক ,মোহাম্মদ শরিফুল রহমান  ,সকিল মাসুদ , শ্যামালিমা পত্রিকার সম্পাদক ড ছায়া গুহ ,দুর্গাদাস ভাণ্ডারী ,ড কাঞ্চন গোপাল মণ্ডল ,নবারুণ মল্লিক  দিবাকর মাহাতো ।

মেলায় দুমকা ,ধনবান ,কোলকাতা , পশ্চিম বঙ্গের বিভিন্ন জেলার লেখক ও প্রকাশক দের স্টলে পাঠক দের ভিড় লক্ষণীয় ছিল ।  ড সেন উদঘাটন বক্তব্যে লিটল ম্যাগাজিন মেলার আয়োজন এর প্রাসঙ্গিকতার উপর আলোচনা করেন । ড কাশী নাথ , গৌতম ও চন্ডি দাস পুরী বক্তব্য রাখেন ।

কার্মাটাঁড়ে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

২৯ জুলাই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবস।আমার সৌভাগ্য তাঁর প্রয়াণ দিবসে কার্মাঢাঁড়ে উপস্থিত থাকতে পেরেছি।
কার্মাটাঁড়ে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বাড়িই ‘চেঞ্জারদের বাড়ি’। পারিবারিক নানা সমস্যা, সামাজিক নানা বিড়ম্বনা ও শারীরিক কারণে বিদ্যাসাগর পশ্চিমে নিভৃতে থাকার জন্য ঘর খুঁজেছিলেন। কার্মাটাঁড় স্টেশনের সামনে ৫০০ টাকায় এক ইংরেজ মহিলার কাছ থেকে এই বাগানবাড়ি কিনেছিলেন তিনি। নাম দিয়েছিলেন নন্দনকানন। তিনি এখানে ১৮৭৩ থেকে ১৮৯১ পর্যন্ত অবস্থান করেছিলেন। এখন স্টেশন চত্বর ঘিঞ্জি। বাগানবাড়িটার পরিবেশ ভালই আছে। কিন্তু বাগানে গাছের বড় অভাব। একটা বটগাছতলায় বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি আছে। প্রতিবছর এখানে ঝাড়খণ্ড (পূর্ব নাম বিহার) বাঙালি সমিতি বিদ্যাসাগরের জন্মদিবস পালন করে ও অন্যান্য অনুষ্ঠান করে। এখানে থাকার জন্য গেস্ট হাউস আছে। সাধারণের জ্ঞাতার্থে জানাই, ‘করমা’ সাঁওতালদের লৌকিক দেবতা, টাঁড় শব্দের অর্থ পতিত ডাঙা। এই দুয়ে মিলে কার্মাটাঁড়। কার্মাটাঁড়ে বিদ্যাসাগর নামাঙ্কিত একটি ভগ্ন লাইব্রেরি দেখলাম। স্টেশনের নাম কার্মাটাঁড় থেকে বিদ্যাসাগর হয় ১৯৭৮ সালে। স্টেশনে নাম বদলের ফলক লেগেছে ১৯৮৯ সালে। এখানে বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, উর্দু ভাষাতে বিদ্যাসাগর নাম লেখা আছে।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন।(২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১;১২ আশ্বিন, ১২২৭ – ১৩ শ্রাবণ ১২৯৭ বঙ্গাব্দ ) ঊনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার।সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তার। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।

মাত্র নয় বছরের কিশোর কলকতার রাস্তায় যেতে যেতে মাইলফলক দেখে শিখে নিলেন ইংরেজি অংক। কলকতার ইংরেজি স্কুলে ভর্তি নিচ্ছিলেন না শিক্ষক।  তার বাবার অনুরোধে শিক্ষক মহোদয় পরীক্ষা নিলেন । মুহূর্তের মধ্যেই অংকটি সমাধান করলেন। 
কিশোরটি সংস্কৃত শিক্ষায় পাণ্ডিত্য অর্জন করে বাংলা ভাষার জন্য তৈরি করলেন বর্ণমালা। 
সমাজের কুসংস্কার দূর করার জন্য কাজ শুরু করলেন। রাজা রামমোহন রায়ের অসম্পূর্ণ কাজকে পূর্ণতা দান করার জন্য শাস্ত্রসম্মত বিধবাবিবাহ আইন প্রবর্তন করলেন। 
নিজের দর্শন সমাজে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আপোষ করেননি নিজের সন্তান এবং পিতার সাথে। 
জীবনের শেষ আঠারো বছর তিনি মিশেছিলন সাঁওতালদের সাথে। স্বজনদের ছেঁড়ে থাকতেন সাঁওতাল পরগণার কারমাটার গ্রামের নন্দনকান বাংলোতে । 
তাঁর নাম পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। আজ বিদ্যাসাগরের ১৩২ তম প্রয়াণদিবস। শ্রদ্ধা জানাই। 
বিদ্যাসাগর সম্পর্কে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, 
'দয়া নহে বিদ্যা নহে, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের চরিত্রের প্রধান গৌরব- তাঁহার অজেয় পৌরুষ, তাঁহার অক্ষত মনুষ্যত্ব। '

এই পুণ্যভূমির কাছেই আসানসোল, চুরুলিয়া। যেখানে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের আবাসভূমি। 
উল্লেখ্য, আজ সকালে বিদ্যাসাগর লিটিলম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলা আয়োজকদের সাথে বিদ্যাসাগরের নন্দনকানন বাড়ি ভ্রমণসূত্রে জানা গেল যে, জামতাড়ার এই অঞ্চল দেশভাগের আগে অনেক বিত্তবান মুসলিম বাস করতেন। যারা ১৯৪৭ এর দেশভাগের সময় ভিটেমাটি ফেলে চলে যান বাংলাদেশে (পূর্ব পাকিস্তানে)। পরিত্যক্ত বাড়িগুলোর ধ্বংসাবশেষ এখনও বিদ্যমান।

বিদ্যাসাগরের মতো শ্রেষ্ঠ মানুষও পারিবারিক কারণে তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসে মানসিক শান্তি খুঁজে জীবনের অন্তিম দিনগুলো এক সাধারণ মানুষের মতো কাটিয়ে দিতে হয়েছে। 
বাংলা ভাষা যার হাত ধরে আজ আমাদের পরিচয় বহন করে চলেছে সেই মানুষটির জীবন কত অবহেলায় অতিবাহিত হয়েছিল জামতাড়া কার্মা
ঢাঁড়ে না এলে অজানাই থেকে যেতো আমার। 

২৯/০৭/২০২৩


দিনপঞ্জিকা:জামতাড়া:২৯:০৭:২০২৩

সকাল সকাল শৈলী লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক অমলেন্দু চক্রবর্তী মহোদয় দরজায় টোকা দিলেন চলুন গোবিন্দ চা খেতে। আমিও একপায়ে রাজী। সাথে সুতপা লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক রাজকুমার সরকার। দুজনই ধানবাদ থেকে শিল্পে অনন্যা আয়োজিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলা উপলক্ষে জামতাড়ায় এসছেন গতকাল। আমরা ডায়মন্ড ম্যারেজ হলে রাত্রিযাপন করেছিলাম।
জামতাড়া বাসস্ট্যান্ডে মাটির ভাঁড়ে চা নিলাম।জামতাড়ায় এখনো মাটির হাঁড়িতে চা বানানো হয়।এই প্রাপ্তিও জীবনকে ধন্য করেছে।আমার জীবনের নানা বাঁকে অনেক কষ্ট করে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হয়।গতকাল গৌরব প্রচণ্ড অসুস্থ। সারাদিন জ্বরে কাবু।রাতে তার মা সুমিতাও অসুস্থ হয়ে যায়। লিটল ম্যাগাজিন মেলায় আমার বা হাত কেটে গেলো।তারপর ইনজেকশন মেডিসিন নিলাম।এ এক ঘোর কুয়াশাময় জীবনচরিত আমাকে দিয়ে লিখিয়ে নিচ্ছে সময়।


পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কর্ম ভূমিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে উন্নিত করা হোক.বললেন ড: কাশীনাথ চ্যাটার্জি

৩১ জুলাই২০২৩:জামতাড়া শহরের সেন্ট অ্যান্থনী বিদ্যালয় চত্বরে তিন দিনের ঈশ্বরচন্দ্রবিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন মেলার সাফল্যের জন্য আয়োজন সমিতির পক্ষ থেকে ওই সমিতির সভাপতি ড দীপক কুমার সেন সাধারণ সম্পাদক দুর্গা দাস ভাণ্ডারী ,ড কাশীনাথ চ্যাটার্জি ,পার্থ বোস ,চঞ্চল রায়  ,ড কাঞ্চন গোপাল মণ্ডল ও মিডিয়া ইনচার্জ ধনেশ্বর সিংহ রায় জেলার আপামর জনগন এর সহযোগিতার ভূয়সী প্রসংশা করেছেন ।

৩১:০৭:২০২৩






চন্ডীদাস পুরী,সহ-সভাপতি, মেলা আয়োজন কমিটি:

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লিটিল ম্যাগাজিন সহ গ্রন্থমেলা জামতাড়ার আয়োজনে দেশ এবং বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যেসব বিভিন্ন সাহিত্যিক, শিল্পী, সম্পাদক এবং সংস্কৃতিমনস্ক সুধিগণ  উপস্থিত হয়েছিলেন তাদের জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি ।আপনাদের  সাহিত্যিক -সাংস্কৃতিক আলোচনা পর্যালোচনা এবং উপস্থাপনার জন্য আমাদের এই জামতারার মাটি নিজেকে ধন্য মনে করে। আমাদের এ ধরনের এত ব্যাপক আয়োজন করার কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকার জন্য অনেক ভুল ত্রুটি হয়তো হয়েছে এর জন্য হয়তো আপনাদের কিছু অসুবিধার সম্মুখীন ও হতে হয়েছে। এর জন্য আমাদের আয়োজন কমিটি ক্ষমাপ্রার্থী। আশা করছি আগামী দিনে এই ধরনের যদি আবার কোন অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারি আমাদের চেষ্টা থাকবে এই ভুল ত্রুটি গুলো  সংশোধন করে নেবার।

গোবিন্দ ধর :সম্পাদক :স্রোত :ত্রিপুরা :

সমভাবে সকল লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদকদের সম্মান প্রদর্শন করা যেতো।পাশাপাশি প্রথম মঞ্চে এরকম আদা আর কাঁচকলা একসাথে করার দরকার ছিলো না। উপস্থিত লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদক এবং গুণীজন থেকে পাঁচ সাতজনকে মঞ্চে ডাকা যেতো যাদের অভিজ্ঞতা তিরিশ থেকে পঞ্চাশ বছরের।
কারো কারো আন্তর্জাতিক লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের অভিজ্ঞতা ছিলো কিন্তু ব্রাত্য রয়েছেন অনেকেই। 
তবুও প্রথমবারের মতো এই লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলা আয়োজন হওয়ায় তা ত্রুটির পর্যায়ে নেওয়া ঠিক হবে না।বরং আরো শাণিত হবার আহ্বান রইলো।

এরকম গড়ে হরিবল করায় মঞ্চ লোভীর ভীড়ে প্রকৃত লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদকেরা আড়ালে অভিমানে দূরে ছিলেন তা লক্ষনীয়।

চন্ডীদাস পুরী,সহ-সভাপতি, মেলা আয়োজন কমিটি:

পুরী:মাননীয় গোবিন্দ ধরের সঙ্গে আমি সহমত।

গোবিন্দ ধর :সম্পাদক :স্রোত :ত্রিপুরা :

আয়োজনের উদারচিন্তার প্রতি কুর্ণিশ।
কিন্তু ত্রিপুরার নাম কোনো সংবাদমাধ্যমে আসেনি।
উপস্থিতির বিষয়টিও নয়।
ব্যক্তিগতভাবে লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলা ছিলো প্রাণবন্ত একথা বলতে কোনো দ্বিধা নেই।
প্রাণবন্ত উৎসবমুখর আয়োজন এতে কোনো দ্বিধা নেই।

দুর্গাদাস মিদ্যা:সম্পাদক :আরিত্রিক:

প্রথম চলায় পা নড়বড়ে থাকে। চলতে চলতে চলন শিখি আমরা সবাই। সত্যি কথা বলতে কি প্রথম মেলা হওয়ার কারণে আবেগ একটু বেশি পরিমাণেই ছিল, ছিল অজানা আশঙ্কা তাই কিছুটা দ্বিধান্বিত ভাব ছিল যা কিছু দোষের নয়। তবুও যা পাওয়া গেল তাও তো কম নয়। সেই উৎসাহ উদ্দীপনা পাথেয় করে এগিয়ে যাওয়াই যথার্থ শিক্ষার ভালো থাকবেন সবাই।।

গোবিন্দ ধর :প্রথম মঞ্চে দুর্গাদাস মিদ্যা,ব্রজকুমার সরকার বিহার বাঙালি সমিতি আয়োজকের সম্পাদক সভাপতি অমলেন্দু চক্রবর্তী বাংলাদেশের শতরঞ্জি সম্পাদক সাকিল মাসুদ মঞ্চে ডেকে প্রথম মঞ্চে বসানো যেতো।এতে আরো সমৃদ্ধ হতো আয়োজন।তাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আমরা জানতাম।

দীপংকর ভরত:

কম সময়ের মধ্যে এতজনকে নিয়ে বইমেলা আয়োজন করা, সহজ কাজ নয় । প্রথম বার আপনারা আয়োজন করেছেন, এবং প্রকৃতই ভালো ভাবে করতে পেরেছেন। প্রথমবারে একটু ভুল ভ্রান্তি হতেই পারে। সবাইকে নিয়ে চলতে হলে একটু মান - অভিমান হতেই পারে। এবারের অভিজ্ঞতা পরের বার আয়োজনে সাহায্য করবে। অভিজ্ঞতা না থাকলেও আপনাদের সফল আয়োজন করার দৃঢ়বদ্ধ্যতা আমাকে মুগ্ধ করেছে।  
অপেক্ষায় রইলাম পরের বারের জন্য। সবাই সাহিত্য - সংস্কৃতি ও ভাষার জন্য এগিয়ে এলে ক্ষুদ্র প্রয়াস ও মহৎ হয়ে ওঠে।

চঞ্চল ভাদুড়ী:
জামতাড়া থেকে প্রকাশিত ঝাড়খণ্ডের একটি দৈনিক পত্রিকা প্রভাত খবরে ত্রিপুরা থেকে আগত বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন সহ গ্রন্থ মেলায় তরুণ সাহিত্যিক অভীক কুমার দের একটি সাক্ষাৎকার ।

গৌতম চাটার্জী:

https://kutumbapp.page.link/nXsL2gG2LUCWY1zM9 পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কর্মভূমি নন্দন কাননে বিদ্যাসাগর মুক্ত বিশ্ব বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি গৌতম চট্টোপাধ্যায় দুমকা ০১ আগস্ট ২০২৩ জামতাড়া শহরে তিন দিনের ঈশ্বরচন্দ্রবিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন মেলার সাফল্যের পর আয়োজন সমিতির পক্ষ সমাজ সংস্কারক পণ্ডিত ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর এর কর্মভূমি নন্দন কানন কে জাতীয় স্মৃতিসৌধে  উন্নিত করার দাবি করেছে । কোলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয়ের পূর্ব রেজিস্টার ও বাংলা ভাষা মঞ্চ জাতীয় সংগঠনের কর্ণধার নীতিশ বিশ্বাস আয়োজন সমিতির ওই দাবির পূর্ন সমর্থ করে ওই দাবির সঙ্গে এখানে ইগনুর আদলে বিদ্যাসাগর বা... https://kutumbapp.page.link/nXsL2gG2LUCWY1zM9


সমীর ভট্টাচার্য :সম্পাদক :শব্দপ্রতিমা:

পূর্ণ সহমত জানাচ্ছি।

জহর দেবনাথ :সম্পাদক :ধলাই প্রবাহ:

সুধী সন্মানিত জন,

প্রথমেই বলে নিই, আমি জহর দেবনাথ ভারত জ্ঞান বিজ্ঞান সমিতির একজন কর্মী, সেই সঙ্গে 
সাহিত্য জগতে - লেখালেখি এবং লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের ও একজন সৈনিক।আর সেই সুবাদেই ভারত জ্ঞান বিজ্ঞান সমিতির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ড: কাশীনাথ চ্যাটার্জী এবং ড: দীপক কুমার সেন মহাশয়ের সাথে আমার পরিচিতি এবং ঘনিষ্ঠতা।

এবারের প্রথম বারের মতো ঝাড়খণ্ডের জামতারায় যে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থ মেলা হয়ে গেল সেখানে ত্রিপুরা থেকে আমি ও ভারত জ্ঞান বিজ্ঞান সমিতির ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সম্পাদক ড: ব্রজগোপাল মজুমদার আমরা দুজন ও আমন্ত্রিত ছিলাম। সেই মতো আমাদের প্রস্তুতি ও চূড়ান্ত ছিল। কিন্তু শেষ সময়ে আচমকাই আমি অসুস্থ হয়ে পড়ায় সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হই।
কিন্তু বাড়িতে বসে বসে ও আমি সোস্যাল মিডিয়ার দৌলতে জামতারার অনুষ্ঠান দেখছিলাম আর উপভোগ করছিলাম। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় অনুষ্টানের খবরাখবর ও দেখছিলাম।

সবাই হয়তো জানেন বিভিন্ন কারণেই জামাতার জেলার সুনাম ততোটা গর্ব করার মতো নয়। সেখানে একসময় বাঙলা এবং বাঙালিরা বহু অবহেলার শিকার হয়েছেন।বহু চেষ্টা,বহু পরিকল্পনা এবং বহু শ্রমের বিনিময়ে এবারই প্রথমবারের মতো অনেক প্রতিকুলতার সঙ্গে লড়াই করে, বাংলা ও বাঙালি সাহিত্য সংস্কৃতি মেলার আয়োজন করা হয়েছে।এটা নিঃসন্দেহে একটি যাকে বলে চ্যালেঞ্জের কাজ ছিল।আর সেই কাজটাই বাস্তবায়িত করে দেখিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের কয়েকজন নমষ্য বাঙালি বাবুরা।যার অন্যতম পথিকৃৎ ড: দীপক কুমার সেন এবং ড: কাশীনাথ চ্যাটার্জী। অবশ্যই উনাদের সঙ্গে অরো অনেক অনেক সন্মানিত গুনী বাঙালি বাবুরা ও রয়েছেন।

এমন একটি জায়গায় হাজারো প্রতিকুলতা কে মুকাবেলা করে নির্বিঘ্নে সুন্দর ভাবে অনুষ্ঠান টি কে শেষ করা গেছে, আমন্ত্রিতরা সবাই সুখ স্মৃতি নিয়ে সুস্থ ভাবে বাড়ি ফিরে গেছেন,সেটাই তো বড় কথা! 
এখন অনুষ্টানের কর্মসূচি নিয়ে কয়েকজন অংশগ্রহণকারী সন্মানিত জন বিরূপ সমালোচনা মুলক মন্তব্য করছেন, তাও আবার গ্রুপে - এটা কি সঠিক হচ্ছে! যদি ও এই অনুষ্ঠানে আমি সশরীরে উপস্থিত ছিলাম না, কিন্তু দেখলাম তো সবাই অনুষ্ঠান এবং অনুষ্ঠানের বাইরে যে যার মতো করে আনন্দ নিয়েছেন, মার্কেটিং ও করার চেষ্টা করেছেন! তাহলে এখন গ্রুপে ঐসব সমালোচনা পোষ্ট করা মানে উদ্যোক্তাদের মনোবলে আঘাত করা নয় কী! একটু ভেবে দেখবেন সবাই।
এটা আমার কোনো উদ্যত নয়, এটা আমার কাজের অভিজ্ঞতা।কারন যারা অনুষ্টানের আয়োজন করেন একমাত্র তাঁরাই জানেন কতো রকমের সমস্যা মুকাবেলা করতে হয়।

কারোর কাছে খাপছাড়া মনে হলে কর্মকর্তা দের ব্যাক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ এ কথা বলার সুযোগ নিশ্চয়ই ছিল।তা না করে গ্রুপে কেন! কোন্ উদ্দেশ্য!
আমি একজন সাহিত্য জগতের সংগঠক হিসেবে এই সমালোচনা গুলো মেনে নিতে পারছি না।তাই এই প্রতিবাদ মুলক পোস্ট।

সবাই ভালো থাকবেন। আশাকরছি আগামী দিনে আবারো এমন কোন অনুষ্ঠানে আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে।


কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায় :সম্পাদক :ভারত জ্ঞান বিজ্ঞান পরিষদ:

ধন্যবাদ জহরবাবু ।সেপ্টেম্বর ত্রিপুরা তে দেখা হবে।আপনার আর ব্রজগোপাল মজুমদারদা আসলে ভালো হতো।

গোবিন্দ ধর :সম্পাদক :স্রোত :ত্রিপুরা :

প্রথমেই বলে নিই আমার কথাগুলো আলোচনা সমালোচনা নয়।তাই দয়া করে সমালোচনা হিসেবে অগ্রীম ভাবনায় পাঠ করবেন না।
আমার কথার পরিপ্রেক্ষিতে যদি এ পোস্ট হয় তাহলে আপনি মূল বক্তব্য সম্পর্কে আরো একবার পড়ে নিন।আমার বক্তব্যের কোথাও এই লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলাকে খোঁটো করা নয়।আমার বক্তব্যের মধ্যে পজিটিভ ভাবনা থেকে আলোকপাত। 
আন্তরিকতার কোথাও খামতি নেই। কিন্তু লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলা যেহেতু সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সুদক্ষ লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক ও প্রকাশকদের উদ্বোধনী পর্বে আমন্ত্রণ করার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
ত্রিপুরা থেকে আপনি জহরদা বিজন বোসদা,ড.ব্রজগোপাল মজুমদারদা,শাশ্বতী দাস,ড.অপর্ণা গাঙ্গুলী এবং স্রোত সম্পাদক গোবিন্দ ধরও আমন্ত্রিত ছিলেন।শেষ অব্দি আমি উপস্থিত ছিলাম।অন্যরা উপস্থিত হতে পারেননি।
আমি তারপরেও একবারও আমার বিষয়ে বলছি না।বলছি অনুষ্ঠানে অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণদের মধ্যে নির্বাচিত আরো কয়েকজনকে রাখা হলে আয়োজনটির আরো উজ্জ্বলতা বাড়তো।
এইটুকু বিরূপ সমালোচনা নয়।এগুলো আলোচনা আমাদের এই অনুষ্ঠানের গ্রুপে করা যায়। পরস্পর পরস্পরের আয়োজনের সমাপ্তি শেষে কোথায় দূর্বলতা আছে সেগুলো ব্যক্তিগত পর্যায়ে করা হয় কোনো সংস্থা আয়োজিত অনুষ্ঠানের বেলা।এক্ষেত্রেও করা যায়।
কিন্তু এই অনুষ্ঠানের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহন ও আয়োজনের উদারচিন্তার প্রতি পূর্ণ আস্থা বিশ্বাস ও পরিপূর্ণ পরিকল্পনাকে সাধুবাদ দুএকজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে কি লাভ।বরং আরো সমৃদ্ধির কথা আমরা আলোচনা সমালোচনার মাধ্যমে (অবশ্যই গঠনমূলক)  এগিয়ে গেলে লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলন সমৃদ্ধ হবে নিশ্চিত। 
আমাদের আয়োজনেও অসংখ্য ফাঁকফোকর ছিলো।আমাদের লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলায়ও যথেষ্ট দূর্বলতা ছিলো।এগুলো কাটিয়ে আমরা আরো সমৃদ্ধ হতে চাই। 
আরো গঠনমূলক আলোচনা সমালোচনায় সমৃদ্ধ করতে হবে দূর্বলগাগুলো।ফাঁকফোকরগুলো।আমন্ত্রণ করার পর অতিথিদের যথেষ্ট মর্যদা আমরা দিতে পারিনি।যথেষ্ট রকম আন্তরিক চেষ্টা থাকা স্বত্বেও অনেক দূর্বলতা ছিলো।আমি নিজেও আরো সময় দিতে পারিনি।অতিথিদেরকে সময় দিতে পারিনি।
জামতাড়ায় এই অসংগতি ছিল না।থাকাখাওয়ায় কিংবা অতিথি আপ্যায়ণের কোথাও দূর্বলতা ছিলো না।ড.দীপককুমার সে ও ড.কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায় মহোদয় আন্তরিক উষ্ণতায় সকলে ভরিয়ে দিয়েছেন। আয়োজক গোষ্ঠীর সকলেই অতিথিদের যথেষ্ট আন্তরিক ব্যাবহার ও আপ্যায়ণে সদা সর্তক ঋিলেন।এই অঞ্চলের সমস্ত বাংঙালি ও বাংলাভাষীদের সহযোগিতায় জামতাড়া যা করে দেখালো তিনদিন ব্যাপী তা আমাদের ত্রিপুরায় করতে রীতিমত গলদঘর্ম পোহাতে হবো বৈকী।
তবুও লিটল ম্যাগাজিন সম্মেলন দিকে দিকে জেলায় মহকুমায় ছড়ি পড়ুক এই শুভকামনা আমার ও আমাদের প্রত্যেক লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক ও কর্মীদেরকে উজ্জীবিত করুক এই তো চাই আমরাও।
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান আলোচনাকে ও আয়োজকদের সাধুবাদ রইলো।
আমরা পরস্পর পরস্পরের সাহিত্য আন্দোলনের সম্পূরক সৈনিক হিসেবে লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলা আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই আমিও অনেক সমস্যা বগলদাবা করে জামতাড়ায় উপস্থিত থাকার জন্য গিয়েছি।
প্রত্যক্ষ করেছি। অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি।আগামী দিনের জন্য উজ্জীবিত হয়েছি।
প্রতিটি আয়োজনই আমাকে শেখায়।আমি সমৃদ্ধ হই।এই অনুষ্ঠান থেকেও আমি আরো জেনেছি শিক্ষিত হয়েছি।

আমার অজস্র শুভকামনা আজীবন থাকবে জামতাড়ার সকল বাংলাভাষীদের জন্য। জামতাড়া একদিন আবার বাংলাভাষীদের মুক্তাঞ্চল হবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পথেই আমরা এগিয়ে যাবো।
ধন্যনাদান্তে
গোবিন্দ ধর 
সম্পাদক 
স্রোত

দুর্গাদাস ভাণ্ডারী:সভাপতি :ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলা :আয়োজক কমিটি:

সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ  আলোচনা ও সমালোচনা  এক সঙ্গে বসে করলে ভালো হয়।

পথিক চৌধুরী :জামতাড়া:

একটি পূর্ণাঙ্গ কবি সম্মেলন করা যেতে পারতো। ২৭ তারিখে যেটা হয়েছে, সেটা সম্পূর্ণতা দাবি করা যায় না।
সম্পূর্ণ তিনদিন অনুষ্ঠান আতিথেয়তা তুলনা হয়না। কবি সম্মেলন ব্যাপারটা আমার অভিযোগ নয়, প্রস্তাব।


দুর্গাদাস ভাণ্ডারী:সভাপতি :আয়োজক কমিটি:

প্রস্তাবটা গ্রহণযোগ্য  ধন্যবাদ।

গোবিন্দ ধর :সম্পাদক :স্রোত :ত্রিপুরা :

এরকমই দুএকট বিষয় আমার আলোকপাতের বিষয়।আমার আলোচনা। প্রস্তাব যেভাবেই বকি।যেহেতু এত খরচা করে এরকম একটি আয়োজন করতে হয়।অনেককে একত্রিত করতে হয়।সময় অনেক পাওয়া গেলো তাই সে সময়ের মধ্যে আরো কি কি করা যেত এই-ই আমার আলোচনা।বিরূপ তো নয়ই বরং লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনকে বেগবান করাই উদ্দেশ্য। এতে আমি কাউকে হেয় বা বিরূপ সমালোচনায় বিদ্ধ করতে চাইনি।

চন্দন সরকার:জামতাড়া:

খুব জরুরী দাবি।পূর্ণ সমর্থন জানাই।


শর্মিষ্ঠা সেনগুপ্ত :জামতাড়া:

ईश्वर चंद्र विद्यासागर के प्रयान दिवस पर जामताड़ा के कायस्थ पाड़ा में संत अंथोनी स्कूल में तीन दिवसीय लिटिल मैगज़ीन तथा बंगला ग्रंथ मेला का आयोजन किया गया, जिसमें सुदूर त्रिपुरा से एक उभरते हुए साहित्यकार अपने साहित्य को लेकर पहुंचे । युवक तथा एक सृजनशील मुख कवि अभिक कुमार दे , भारत ज्ञान विज्ञान समिति के राज्य कार्यकारिणी तथा ग्रंथ मेला के सदस्य शर्मिष्ठा सेनगुप्ता से इनकी एक छोटी सी साक्षात्कार । 
१.. आप कहां से आए हो और आपके लेखन के उद्देश्य क्या है ? ..अभिक , मैं त्रिपुरा दक्षिण के एक छोटे से गांव चरकबाई से आया हूं । बचपन से ही गरीबी के साथ जूझते हुए भूखे पेट की गहराई से समाज के देखने का तथा समझने और सोचने के चिंतन से लिखना शुरू किया । सामाजिक रीति रिवाज पर अर्थ नैतिक व्यवस्था की चिरा चरित सत्य को करीब से देखा एवं मनुष्य के दुख दुर्दशा को देखते हुए मेरी कलम अपने तरीके से लिखना शुरू किया । मुख्य रूप से समाज व्यवस्था में लोगों की आर्थिक विडंबना से ही मेरी कविता उभर के आती है किताबों पर ।
२.. आप कब से लिखना शुरू किया और क्या क्या लिखते हो ?अभिक.... जब मैं आठवां क्लास में पढ़ता था तभी से मैं लिखना शुरू किया मुख्य रूप से मैं कविता के साथ-साथ साहित्य भी लिखता हूं ।
३ .. अभी तक आपकी प्रकाशित किताबों की संख्या क्या है?
अभिक .. अभी तक मेरे २२ ग्रंथ प्रकाशित हुए हैं ।
४ .. झारखंड मैं साहित्य के बारे में आप की उपलब्धियां ।
अभिक .. विद्यासागर लिटिल मैगजीन ग्रंथ मेला के 3 दिन के आयोजन में मैं पहली बार झारखंड के जामताड़ा कर्माटांड़ आया हूं  । मुझे यहां के साहित्य चर्चा बहुत ही प्रभावित किए यहां के लोग अपने साहित्य के अपनी भाषा के लिए बहुत ही संघर्षशील है यह देख कर मैं बहुत ज्यादा प्रेरणा लेकर यहां से जा रहा हूं,  क्योंकि त्रिपुरा भी अपनी भाषा, संस्कृति साहित्य को लेकर ऐसे ही लड़ाई लड़ रहे हैं । पर नवयुवक  अपनी भाषा की रक्षा के लिए थोड़ा सा और आगे बढ़ कर आए तो झारखंड की साहित्य और समृद्धि होगी । लोग अपनी भाषा को सिर्फ बोलते हैं और समझते हैं पर किताबों में साहित्य चर्चा में तथा पाठ्य पुस्तकों में इसकी श्रेय होना बहुत जरूरी है, तभी आगे की प्रजन्म  अपने साहित्य संस्कृति पर गौरव महसूस करेंगे
५... आपके लिखे हुए कुछ किताबों के नाम क्या है?
अभिक .. अभिक कुमार दे कि एक गुच्छा कविता । सिडि पथ, घुडि उड़े ना आकाशे,  कविता की भावनाएं ।

বাংলা অনুবাদ :গোগল:


গৌতম চাটার্জী:জামতাড়া:

কাদা ছোড়া বন্ধ হোক ।

বর্ণালী গুপ্ত :জামতাড়া:

যে যার নিজের বিজ্ঞাপনে ব্যস্ত।  অনেক রকম আলোচনা দেখছি।  তাই লিখতে বাধ্য হলাম।  সাঁওতাল পরগণার একটি ছোট্ট শহর,এই প্রথমবার এইধরনের  একটি আয়োজন করেছে।  তাকে  সবদিক থেকে সাধুবাদ জানাতে হয়।  তারপর এই রকম আয়োজন।  দূরদুরান্ত থেকে প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। যেভাবে তাঁরা ৪/৫ দিন ধরে সব সামলালেন।  অবশ্যই প্রশংসনীয়। 
আগামী দিনে এঁরা,বড় গ্রন্থ মেলা করে ফেলবেন আমি নিশ্চিত।  মেলা কমিটির প্রত্যেক সদস্যদের জন্যে রইল অগাধ শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও আগাম শুভকামনা।  

শুভম চক্রবর্তী :আপনার সঞ্চালনা খুব ভালো লাগলো।

চন্ডীদাস পুরী,সহ-সভাপতি, মেলা আয়োজন কমিটি:

আমাদের এই গ্রুপের যারা সদস্য তারা প্রত্যেকেই লেখালেখি করেন এবং দক্ষতার সাথেই করেন ।আমার ছোট্ট লেখার পর এভাবে যে লেখার বন্যা আসবে ভাবতে পারিনি ।আমি আমার লেখার মাধ্যমে এটুকুই প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম যে আমরা আরো ভালোভাবে আপনাদের সম্মান করতে চেয়েছিলাম যা পারিনি তাই দুঃখ প্রকাশ করেছি, এবং অনুষ্ঠান থেকে আগামী দিনের পথ চলার শিক্ষা অর্জন করেছি ।আশা করি আপনারা আমার লেখার মধ্য দিয়ে যদি কোন আন্তরিক আঘাত পেয়ে থাকেন তার জন্য আমি সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেব। কিন্তু আপনারা যেভাবে আমাদেরকে উজ্জীবিত করে গেছেন এক কথায় অতুলনীয়। আমরা ভাবতেও পারিনি এত লোকের এত বিদ্দজনদের সমাবেশ এখানে হবে ।সত্যিই আমাদের এই ধরনের অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতার অভাব ছিল ।যাই হোক আমরা আমাদের ত্রুটি বিচ্যুতিগুলো সরিয়ে রেখে আমাদের যে মূল আন্দোলন সে আন্দোলনটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই প্রত্যেকের সহযোগিতার সাথে ।এই আশাটুকু কামনা করি।

বর্ণালী গুপ্ত :জামতাড়া:

আমরা সবসময়  পাশে রইলাম/আছি। বিপুল আয়োজনে ছোটখাটো  ভুলত্রুটি কোনো ব্যাপারই নয়।  আর এটা সকলের মেলা,তাই  সকলকে নিজের মত করে নিতে হয়।  এত মানুষের সমাগম,জামতাড়াকে একটি অন্য স্থানে নিয়ে গিয়ে  দাঁড় করালো।  আপনারা ইতিহাস রচনা করলেন।  অবশ্যই আমরাও সেই ইতিহাসের সাক্ষী  হয়ে,শরিক হয়ে রইলাম। ধন্য এবং প্রাণিত।  আগামী দিনের অপেক্ষায় রইলাম। 


গোবিন্দ ধর :সম্পাদক :স্রোত :ত্রিপুরা :

আমি স্বতঃস্ফূর্তভাবেই আপনাদের আন্দোলনের একজন সৈনিক হিসেবে থাকতে পারলে কৃতজ্ঞ থাকবো। আপনাদেরকে হার্দিক অভিনন্দন ও অশেষ কৃতজ্ঞতা রইলো।

আপনি একদম সঠিক বলেছেন।অশেষ কৃতজ্ঞতা রইলো।
তা থাকবে।তারপরেও অনুষ্ঠান যথেষ্ট আন্তরিক ও সুসম্পাদিত ছিলো।

পথিক চৌধুরী :জামতাড়া:

জামতাড়া জেলা অর্থনৈতিক দিক থেকে একটি অনুন্নত জেলা। সেইখানে বসে এরকম একটি অনুষ্ঠান করা বুকের পাটা দরকার। প্রথম প্রয়াস হিসেবে এভাবে বিশাল কর্মযজ্ঞকে সাফল্যে রূপান্তর করা সহজ ছিল না। সেটা ত্রুটিমুক্ত ও সুআপ্যায়িত করে দেখিয়েছেন, এজন্য যে কোনও প্রশংসাই কম।

চন্ডীদাস পুরী,সহ-সভাপতি, মেলা আয়োজন কমিটি:

মাননীয় ডাঃ দীপক কুমার সেন মহাশয়ের প্রশংসনীয় উদ্যোগ, ডাঃ কাশীনাথ চ্যাটার্জির অসামান্য সাংগঠনিক দক্ষতা, সম্পাদক দুর্গাদাস ভান্ডারীর অকুণ্ঠ সহযোগিতা এবং মেলা আয়োজন কমিটির সক্রিয় সদস্যদের নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমাদের এই মেলাকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি ।আগত অনেকেই আমাদের কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার জন্য  প্রশংসাও করেছেন তাদের সকলকেই সাধুবাদ জানাই।

দুর্গাদাস ভরত:সভাপতি, মেলা আয়োজন কমিটি:


ভুল ত্রুটি ক্ষমা করে আসুন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা কে কি করে আরো প্রভাবশালী ভাবে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে পারি,  তা নিয়ে আলোচনা করে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করি।

পত্রিকা বের করে কোনো লাভ নেই যদি না পাঠক তৈরি হয়। 
আসুন, সবাই মিলে বাংলা ভাষা চর্চা ও প্রচারের শক্ত জমি তৈরি করি।

চন্ডীদাস পুরী,সহ-সভাপতি, মেলা আয়োজন কমিটি:

এই উদ্যোগটা আমাদের প্রত্যেককে নিজের বাড়ি থেকে নিতে হবে ,কেননা দেখা যাচ্ছে আমরা বাংলাভাষা নিয়ে বড় বড় কথা বলি অথচ অনেকের বাড়ির ছেলেমেয়েরা বাংলা ভাষা না লিখতে পারে না পড়তে পারে। এটা আমাদের জন্য চরম লজ্জার।

ধনেশ্বর সিং, প্রেস:
https://kutumbapp.page.link/RHV6WKyxHjr689R1A লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থ মেলায় পত্রিকার উন্মোচন হল 

গৌতম চট্টোপাধ্যায় দুমকা:
১ আগষ্ট ২০২৩  সম্প্রতি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থ মেলায় ওই মেলার আয়োজন সমিতির মিডিয়া ইনচার্জ ধনেশ্বর সিংহ রায় এর লেখা মহান সমাজ সংস্কারক পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর কবিতার বই এর উন্মোচন করা হল ।  জামতাড়া জেলার ফতেহপুর ব্লকের  বস্তি পালাজুড়ি গ্রামের ধনেশ্বর বাবু একজন হিন্দি সংবাদ পত্রের সাংবাদিক ।  কবিতার বই টি লিখেছেন হিন্দি তে । হিন্দি ভাষীদের মধ্যে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বিশাল কর্ম কাণ্ড কে তুলে ধরার একটি সফল প্রচেষ্টা ।   To see more... https://kutumbapp.page.link/RHV6WKyxHjr689R1A

গোবিন্দ ধর :সম্পাদক :স্রোত :ত্রিপুরা :
সুন্দর আলোকপাত। ধন্যবাদ জানালাম। 

সমীর ভট্টাচার্য,:সম্পাদক :শব্দপ্রতিমা:

পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবসে জামতাড়া কায়স্থ পড়ায় সন্ত অ্যান্থনি স্কুলে তিন দিবসীয় লিটিল ম্যাগাজিন তথা গ্রন্থমেলায় বিভিন্ন কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, সংস্কৃতিমনস্ক প্রজ্ঞাবান গুণীজনদের মাঝে উপস্থিত থাকতে পারে, ঝারখান্ড পুত্র হিসাবে যেমন গর্ববোধ করছি, নিজেকে ধন্য মনে করছি; তেমনি বিভিন্ন গুণীজন এর মত-অভিমত, আলোচনা-পর্যালোচনায় ঋদ্ধ হয়েছি। শিখেছি অনেক কিছু। যেহেতু ঝাড়খন্ড আমার জন্ম মাটি। স্বভাবতই ঝাড়খন্ড সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল তাই কাউকে আঘাত আঘাত করে বা কারো মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমি কিছু বলতে চাই না। আমি আমার একান্ত ব্যক্তিগত কিছু মন্তব্য উপস্থাপন করতে চাই। যদি কারো আমার ধৃষ্টতা মনে হয়, তবে নতমস্তকে ক্ষমা চাইছি।
             প্রথমেই বলি, ঝাড়খণ্ডের একটি পিছিরি এবং অনুন্নত এলাকা জামতাড়া। অনাদিকাল কাল থেকে আজও বাঙলা এবং বাঙালিরা এখানে অবহেলার শিকার। যে বাঙালি সমিতি রয়েছে, এক্ষেত্রে তাদের সহযোগ থেকেও প্রায় বঞ্চিত হয়েই হাজার প্রতিকুলতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অনেক চেষ্টা, নানান পরিকল্পনা তথা বহু পরিশ্রমের বিনিময়ে; প্রথমবার 'ভারত জ্ঞান বিজ্ঞান সমিতি' যে সাহিত্য ভাবনা নিয়ে পূর্ব কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই এত কম সময়ের মধ্যে অগনিত জনের লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলার আয়োজন করেছেন- এটা নিঃসন্দেহে কোন সহজ কাজ নয়।
যেভাবে সকলের সমস্ত কিছু ধ্যানে রেখে, সুন্দর সুষ্ঠভাবে ভাবে নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানটি সাফল্যতা অর্জন করেছে নিঃসন্দেহে তা প্রশংসার।
           উল্লেখ্য : এটি কোন কবি বা সাহিত্য সম্মেলনের আয়োজন ছিল না। অনুষ্ঠানের নামকরণ এবং প্রতিদিনের আলোচ্য বিষয় সূচি এবং আলোচকদের নামের তালিকা অনেক আগেই সমিতি প্রকাশ করেছিলেন। এমন অনুষ্ঠান পরিচালনার পূর্ব অভিজ্ঞতা শূন্য জ্ঞান বিজ্ঞান সমিতির দ্বিধান্বিত ভাব ছিল, তবে যদি মেলায় উপস্থিত সমস্ত সুদক্ষ লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক প্রকাশকরা একত্রিত হয়ে আলোচনা করে; লিটিল ম্যাগাজিনের তরফ থেকে কেউ প্রতিনিধিত্ব করত এবং  মেলা সমিতির কাছে উপস্থিত অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সুদক্ষ গুণীজনদের নাম প্রস্তাব দেওয়া যেত, তবে হয়তো তাঁরা বঞ্চিত হতেন না বলে বিশ্বাস (যদিও একাধিক বক্তাকে বিষয়বস্তু থেকে সরে গিয়ে বক্তব্য রাখতে দেখেছি।) এ ও দেখেছি অধিকাংশ নিটিল ম্যাগাজিন সম্পাদক - সাহিত্য সেবী জন লিটল ম্যাগাজিনের টেবিল চত্বরই ঘুরে ফিরছেন। নিজেদের মধ্যেই আলাপচারিতায় ব্যস্ত থেকেছেন  বা নিজেদের সাহিত্য টেবিলেই বসে থেকেছেন। তবে ভারত জ্ঞান বিজ্ঞান সমিতির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ড: কাশীনাথ চ্যাটার্জী এবং ড: দীপক কুমার সেন মহাশয়কে একাধিকবার মঞ্চে দাঁড়িয়ে সমস্ত লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক এবং উপস্থিত সমস্ত গুণীজনের প্রতি সম্মান জ্ঞাপন করতে এবং আভার ব্যক্ত করতে শুনেছি। করতে দেখেছি। 
সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন শুভেচ্ছা এবং শ্রদ্ধা।
সকলে ভালো থাকবেন। সুস্বাস্থ্য থাকুন সবসময়।

গোবিন্দ ধর :সম্পাদক :স্রোত :ত্রিপুরা :

জামতাড়ার নন্দনকানন কর্মাটাঁরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কর্মভূমিতে তাঁর প্রয়াণ দিবসে আমাদের উপস্থিতি ছিলো আনন্দ ও সৌভাগ্যের বিষয় 

জামতাড়ার নন্দনকানন কর্মাটাঁরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কর্মভূমিতে তাঁর প্রয়াণ দিবসে আমাদের উপস্থিতি ছিলো লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থমেলায়।
গত ২৭/২৮/২৯ জুলাই ২০২৩ অনুষ্ঠিত হলো ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন মেলা ও গ্রন্থমেলা। স্রোত সাহিত্য পত্রিকা ও প্রকাশনা  এই মেলায় অংশ গ্রহণ করেছিল। 
২৯ শে জুলাই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবস, সেদিন সকালে আমরা হাজির হয়েছিলাম কর্মাটাঁরে অবস্থিত ঈশ্বরচন্দ্রের বাসভবন নন্দনকাননে।ইতিহাস এরকমই  ৫০০টাকায় তিনি এ বাড়িটি কিনেছিলেন এবং সাঁওতাল পরগনার এই স্থানে জীবনের শেষ ভাগের বেশ কিছুদিন বসবাস করেছেন। এই পুন্যভূমিতে বিশেষ দিনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত থাকতে পেরে আমরা গর্বিত বোধ করেছি ।

এই সৌভাগ্যের অংশীদার হতে পেরে কৃতজ্ঞ স্রোত প্রকাশনা ও সাহিত্য পত্রিকা।


সুকুমার পাল:জামতাড়া:

বিদ্যাসাগর লিটিল ম্যাগাজিন সহ গ্রন্থমেলা আয়োজক কমিটিকে অভিনন্দন। যারা বাংলা ভাষার প্রতিকুলতাকে পাশে ফেলে নবজাগরণের বাওা' দিয়ে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। অনুষ্ঠান পরিচালনা, আয়োজন, আগ্রহ ও আতিথেয়তা আকষ'নীয়। সুন্দর প্রচেষ্টা। এগিয়ে চলুন। অভিনন্দন আপনাদেরকে।


সমীর ভট্টাচার্য,:সম্পাদক :শব্দপ্রতিমার মন্তব্য প্রসঙ্গে দেবাশীষ মিশ্র :

অনাদি কাল থেকে বাঙালিরা অবহেলিত , কথাটা ঠিক নয় , বাংলা ভাষা ও উপেক্ষিত ছিল না , পরিবর্তিত পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে !

গোবিন্দ ধর :সম্পাদক :স্রোত :ত্রিপুরা :

বাংলা ভাষাকে পরিকল্পিতভাবে ইংরেজ ও পরবর্তী সময় দেশের শাসকশ্রেণিই বঞ্চিত করে উপেক্ষার স্তরে পৌঁছে দিয়েছে। এসব চক্রান্তের ফলাফল দিকে দিকে আজ বাংলা ভাষা দেওয়ালে পিঠ ঠেলে লড়াই করে টিকে থাকতে হচ্ছে।

গৌতম চট্টোপাধ্যায় :দুমকা:

একশত শতাংশ সঠিক 

শাস্বতী ব্যানার্জী:বাউল ও লোক সংগীত শিল্পী:

জামতাড়া  ঝাড়খন্ডের  একটি ছোট্ট শহর, নাম শুনলে ই ভয়ে পকেট  চেপে  ধরে মানুষ, এই বুঝি সহায় সম্বল  টুকু গেল । এমন  বদনামের  জায়গা থেকে  আমরা উপচে  পরা  ভালোবাসা  নিয়ে ফিরে এলাম। এমন  ভয়োঙ্কর জায়গায় প্রোগ্রাম করতে  যাবো স্বপ্নেও ভাবিনি, কেন  এলাম এখানে তার পিছনে  একটা সুন্দর ঘটনা  আছে, যেটা না বললে ই নয়। গত  ২৬..২৭ মে, ত্রিপুরার আগরতলায়  অনুষ্ঠিত  হয়েছিল  প্রকাশনা  মঞ্চ  আয়োজিত লিটল  ম্যাগাজিন মেলা, সেখানে  আমি বাউল ও লোকসংগীত  শিল্পী হিসাবে উপস্থিত  ছিলাম। সেখানেই  উপস্থিত  ছিলেন  জামতাড়ার বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন মেলার অন্যতম দুই কর্ণধার, আমার প্রিয় স্যার প্রফেসর দীপক কুমার সেন ও স্যার কাশীনাথ  চ্যাটার্জী মহাশয়। মঞ্চ  থেকে  নামার পরেই আমাকে মৌখিক  আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন জামতাড়া লিটল  ম্যাগাজিন মেলার। আমি বললাম  দেখছি, ওনাদের তো বলতে পারলাম না ওই জায়গার সম্বন্ধে  কত  কিছু  শুনেছি। দিন এগিয়ে আসতে লাগলো, মনে হলো ওনারা যদি  আর ফোন না করেন  তো ভালো হয়। বাড়ির ও বন্ধু দের বলতে ই ওরা কত গল্প  শোনালো, সে কথা  আর না বলাই  ভালো। তবে  আমার হাসব্যান্ড বললেন, তোমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শ্রদ্ধেয় দুই ব্যক্তিত্ব, তাঁরা নিশ্চয়  ভালো বুঝেছেন তাই তোমাকে আমন্ত্রিত করেছেন, ওনারা তোমার কোনো অসুবিধা হতে দেবেন না। তাই সাহস করে  হ্যাঁ বলে  দিলাম ও প্রস্তুতি শুরু করে দিলাম। চলে  এলো ২৭ সে জুলাই।
সকাল  ৮.৩০মিঃ নাগাদ আমি, আমার স্বামী সুবীর কুমার ব্যানার্জী, দোতারা বাদক  ও শিল্পী উত্তম দাস, ঢোল বাদক শরানোন  দাস একটা গাড়ী তে রওনা দিলাম জামতাড়ার উদ্দেশ্যে। আমার স্বামী আমাদের পৌঁছে দিয়ে ফিরে আসবেন বোলপুর। সিউড়ি  রাজনগড়  হয়ে  আমাদের গাড়ী ছুটছে। মাঝে মাঝে আমার অভিভাবক  সম কর্মকর্তা দের ফোন, কতদূরে, কোথায়, কোনো অসুবিধা হচ্ছে  কিনা। শুরু হয়ে  গেছে  তাঁদের আতিথেয়তার পালা।
রাস্তার দুপাশে বিস্তৃণ সবুজ ভূমি,  দূর দিগন্তে পাহাড়ে ও আকাশের  কোলাকুলি। যাওয়ার সময় আবহওয়া  ছিল  খুব  সুন্দর। আকাশে মেঘ ও রোদের লুকোচুরি। খুব  ভালো লাগছিলো। শান্ত নিরিবিলি রাস্তা, কটা গাড়ির সাথে  আমাদের দেখা হয়েছিল গুনে বলা যাবে। দূরে দূরে আদিবাসী দের বিক্ষিপ্ত ঘর। কিছু  গরু  বাছুর, রাখাল বালক, ও কিছু  বাইক ছাড়া  আর কিছুই  খুব  একটা চোখে  পড়লো না। দুচোখ  ভোরে প্রকৃতির রূপ মাধুর্য  দেখতে দেখতে যাচ্ছি। ভাবতে অবাক লাগছিলো কুখ্যাত  জায়গার চারপাশ  এতো শান্ত।
১২টার সময়  পৌঁছালাম জামতাড়া বাসস্ট্যান্ড এ, এখান থেকে  ১০মিঃ গেলেই কায়স্থ পাড়া সেন্ট এন্থনী স্কুল, আমাদের গন্তব্য।
স্কুলে ঢুকতেই দেখাগেলো বিদ্যাসাগর মহাশয়ের  ছবি দেওয়া বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন মেলার সুন্দর তোরণ। আমাদের গাড়ী স্কুলের সামনে দাঁড়াতে ই ভোলা জী আমাদের নিয়ে গেলেন স্কুলের  মধ্যে, যেখানে বসেছিলেন আমার প্রিয় স্যার ডি কে সেন ও অন্যান্য কর্ম কর্তারা। তাঁদের উষ্ণ অভ্যর্থনায় আমরা আপ্লুত। মনে ই হলোনা  আমি তাঁদের প্রথম বার দেখলাম। যেন কত  পরিচিত,  কত আপন। আমার স্বামী ওনাদের অনুরোধে মধ্যাহ্ন ভোজন  করে  বোলপুর রওনা দিলেন। আমরা ও ফ্রেশ হয়ে  খাওয়া দাওয়া সেরে নিলাম। ওনাদের প্রতিনিধি ও গাড়ী আমাদের নিয়ে গেল আমাদের জন্য  নির্ধারিত থাকার  জায়গায়।
আমার থাকার  জায়গা ছিল  জামতাড়া স্টেশন এর সামনে কনক  হোটেল। আমার মিউজিশিয়ান ভাই দের ব্যবস্থা ছিল আশ্রয় গৃহ। আমাদের কি বোর্ড এ সাহায্য করেছিলেন সুব্রত চক্রবর্তী দাদা, অমায়িক, ও খুব  মজার লোক, আমাদের অভিভাবক, এসে পৌছালেন  ৫.৩০মি এ ট্রেন এবর্ধমান থেকে। গল্প গানবাজনার মহড়া সেরে খেয়ে শুয়ে পড়লাম  সবাই।
[04/08, 20:44] D D BHANDARI দুর্গাদাস ভাণ্ডারী: ২৮তারিখ প্রভাত ফেরী দিয়ে শুরু মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। সকাল বেলায় তৈরী হয়ে আমরাও স্কুলপ্রাঙ্গনে, সেন্ট এন্থনী স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা স্কুল ইউনিফর্ম পড়ে কি আনন্দ উদ্দীপনায় ভরপুর হয়ে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এ তল্লাটে এমন  বই মেলা আগে কখনো  হয় নি। একটি ছাত্র দের মিউজিক গ্রুপ, তাদের সমস্ত ইনস্ট্রুমেন্ট নিয়ে সাদা পোশাকে সজ্জিত হয়েছে। বিভিন্ন প্রদেশের সাজে সজ্জিত হয়েছে  ছাত্রী দের দল। আমার মনটাও চলে গেল ওদের মতো স্কুল জীবনে,কিছুক্ষনের  জন্য কত স্মৃতি মনে এলো। বাইরে ঝমঝম  করে  বৃষ্টি। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা গণ দায়িত্ব সহকারে বাচ্চাদের লাইন করিয়ে রেডি, বৃষ্টি থামলেই শুরু হবে  যাত্রা। এই শোভা যাত্রা শহরের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থিত মনীষী দের মূর্তি তে মাল্য দান করে ফিরে আসবে আবার স্কুল প্রাঙ্গনে। ছাত্র, ছাত্রী, মেলায় অংশগ্রহণ কারী সকল কবি সাহিত্যিক ও শহরবাসী গণ  যোগ দিয়েছিলেন এই পদ যাত্রা ই। এতো বড়ো পদযাত্রা যেখানে ভারতের  বিভিন্ন রাজ্য, বাংলাদেশ থেকে  প্রচুর  প্রতিনিধি গণ  অংশ নিয়ে ছিলেন। হাঁটতে হাঁটতে জামতাড়া শহরটাকে কিছুটা  চিনলাম। খুব একটা বড়ো শহর নয়, তবে  বেশ লাগলো। জমজমাট  বাজারে দেখতে পেলাম এখানকার  মানুষের হাতে তৈরী ঝাঁটা, ঝুড়ি, গ্রামের মানুষ গুলো তাদের গ্রাম থেকে  আনা পসরা সাজিয়ে বসেছে। সন্ধ্যায় আমাদের গান দরিয়ার অনুষ্ঠান, প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত। দুর্ঘটনার কারণে প্রেমা দা, ও মৌসুমী আসতে পারলোনা। তবলার কাজ না হয়  ঢোলে  চালিয়ে  নিলাম কিন্তু পারকারসন কে বাজাবে। হয়তো  ওটা ছাড়াই  গাইতে হবে, কিন্তু মন  চাইছিলো না। প্রস্তুতি পর্বে হঠাৎ দেখি অনুষ্ঠানের একজন  কর্মকর্তা বাপী দা মনযোগ দিয়ে গান শুনছেন আর তালে তালে মাথা  নাড়ছেন। আমি ঘুঙুর এর গোছা  টা এগিয়ে দিতে ই আনন্দ  সহকারে সঙ্গত  করলেন। হয়ে  গেলেন আমাদের একজন, মিলে গেল জামতাড়া ও বোলপুর, বাউল শিল্পী ও কর্মকর্তা। এটা আমার কাছে  চরমতম পাওনা। এটাই জামতাড়া ও সেখানকার সহজ সরল  মানুষ।
সন্ধ্যায় আমাদের অনুষ্ঠান খুবই সুন্দর হলো। গান কেমন হলো সে কথা  তো বলবে  দর্শক। সুন্দর ব্যবস্থা ও দর্শক দের সহযোগিতা আন্তরিকতা ই আমরা আপ্লুত। আমাদের অনুষ্ঠানের  মধ্যে দিয়েই শেষ হলো প্রথম  দিনের অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি।

দ্বিতীয় দিন ২৯তারিখ, এই দিনটি পরম পূজ্য শ্রদ্ধেয় বিদ্যাসাগর মহাশয় এর প্রয়াণ দিবস। স্কুলে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের  ছবিতে মাল্য দান করে আমরা রওনা দিলাম বিদ্যাসাগর মহাশয়ের  কর্ম স্থল কর্মাটাঁড় এর দিকে। যেখানে জীবনের  শেষ ১৮টা বছর কাটিয়ে ছিলেন অসহায়, অনুন্নত  আদিবাসী  মানুষ গুলোর সাথে, নিজের পরিবার  পরিজনের  থেকে  বিচ্ছিন্ন হয়ে। তাদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন।এই অনাড়ম্বর ঐতিহ্য বাহী মাটি তে পা দিয়েই গা কাঁটা দিলো, শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে গেল, নিজেকে বড়ো ভাগ্যবতী মনে হচ্ছিলো। আমার জন্ম লাভপুর (বীরভূম ), সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর জন্মস্থান, আমার বিয়ে হয়েছে  ভুবন ডাঙ্গা (শান্তিনিকেতন )রবীন্দ্র পুন্য ভূমি তে। তারাশঙ্কর এর মেয়ে, রবীন্দ্রনাথ এর বৌমা ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর এর দ্বারে উপস্থিত হতে পেরেছি। পুন্য ভূমির  মৃত্তিকা মাথায় নিয়ে ঘুরে দেখতে লাগলাম, অনুভব করার  চেষ্টা করছিলাম সেদিন কি অসাধ্য সাধন তিনি করেছিলেন। এই জায়গাটি নন্দন কানন নামে পরিচিত। প্রথমেই ওনার মূর্তিতে মাল্য দান করলেন আমাদের সঙ্গে  আসা সকল গুণী জন। আমার ও ডাক পড়লো মাল্য দান করার  জন্য। এই মহান ব্যাক্তি র গলায় মালা দেওয়ার যোগ্যতা আমার নেই, তবু  সকলের  অনুরোধে মনে মনে ওনার চরণে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে মাল্য দান করলাম, প্রার্থনা করলাম, হে ঈশ্বর  আমায় ক্ষমতা, সাহস দিও যা নিয়ে আমি সমাজের কাজে মানুষের পাশে থাকতে  পারি। মন চলে গেল সেদিনগুলিতে, চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম হাঁটুর ওপর ধুতি পরা মানুষটি চিকিৎসায় রত আদিবাসী মানুষদের, কখনো মনেহচ্ছিল একটা চালায় হারিকেন জ্বালিয়ে নৈশ বিদ্যালয় এ শিক্ষিত করার চেষ্টা করছেন অসহায় আদিবাসী মানুষ গুলোকে। আজ তিনি নেই তবু অনুভবে ছিলেন। ঢুকলাম তাঁর শয়ন কক্ষে, তাঁর ব্যবহৃত খাট, বিড়সিংহ গ্রামের মৃত্তিকা রাখা আছে সযতনে, কর্মাটাঁড় কমিটি র তত্বাবধানে। এখানে খুব সস্তায় থাকা খওয়ার ব্যবস্থা আছে। অনেক শান্তি প্রিয় মানুষ ও ভক্তেরা এখানে এসে থাকেন মাঝে মাঝে। শুনলাম বিদ্যাসাগর মহাশয়ের  মৃত্যুর পরে তাঁর ছেলে এই জায়গাটি বিক্রি করে দেন। একজন ধনী ব্যক্তি এই পুন্য ভূমি কে কিনে নিয়ে যেমন ছিল তেমন ই রাখার  ব্যাবস্থা করেন, নিজেকে বিদ্যাসাগরের  চরণাশ্রিত দাস বলে পরিচয় দেন। শ্রদ্ধা ও ধন্যবাদ জানাই ওই মানুষ টি কে, না হলে  হয় তো জায়গাটার কোনো অস্তিত্ব থাকতো কি না কি জানি। এর পর একটু জলযোগ  করে আমরা বিদ্যাসাগর একাডেমির বাচ্চাদের সাথে দেখা করলাম, ওদের সাথে কিছুটা সময় কাটিয়ে আবার ফিরে এলাম সেন্ট এ্যন্হনি স্কুলে। দুপুরের খাওয়া দাওয়ার পরে আবার ৫টা থেকে শুরু  অনুষ্ঠান, স্থানীয় ও ছাত্র ছাত্রী দের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পর প্রফেসর রাহুলদেব ও প্রফেসর অনুসূয়া মন্ডলের ভারত নাট্যম ছিল মনোমুগ্ধকর। তার পরেই ছিল আমাদের গান দরিয়ার উপস্থাপনা। অনুষ্ঠান চললো অনেকরাত পর্যন্ত। জামতাড়ার মানুষ ও উপস্থিত সকলের উপচে পরা ভালোবাসায় আমরা গান দরিয়ার শিল্পী রা প্লাবিত হলাম মন ভোরে গেল। আমরা সম্মানিত হলাম মেলা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক।
পরদিন মেলার শেষ দিন,সকাল বেলায় বেরিয়ে পড়লাম নিজের মতো একা একা, এতো দিন যত বার বেরিয়েছি কর্তৃপক্ষ্যের গাড়ী আমাদের জন্য  রেডি  ছিল  সবসময়। কাউকে না বলেই বেরিয়ে পড়লাম, হোটেলের  ঠিক  সামনেই স্টেশন, শান্ত নিরিবিলি। স্টেশন  এ গুটি কতক যাত্রী বসে আছে ট্রেন এর অপেক্ষায়।শান্ত স্টেশনের শান্তি ভঙ্গ করে মাঝে মাঝে হুস হুস শব্দে ছুটে যাচ্ছে ট্রেন গুলি, কোনো কোনো ট্রেন দাঁড়াচ্ছে, স্টেশন এর প্রতিক্ষারত মানুষ গুলো ট্রেন এ উঠে  যাত্রা করলো গন্তব্যের পথে, যারা নামলো সারি বদ্ধ হয়ে বেড়িয়ে গেল  স্টেশন  থেকে। আমি ও বেড়িয়ে পড়লাম হাঁটছি, হঠাৎ একটা সুন্দর গন্ধ পেলাম, দেখলাম রাস্তার ধারে চায়ের দোকানে মাটির হাঁড়িতে চা  ফুটছে, অপূর্ব লোভনীয় গন্ধ, যদিও  দুধ চা আমি খাই না তবু ও গন্ধে  আকর্ষিত হয়ে গেলাম। মাটির ভাঁড়ে মাটির হাঁড়ির চা সত্যি অপূর্ব, সকাল টা অন্যরকম  হয়ে গেল। কিছু ফুলের চারা, একটি জাম গাছ কিনে নিলাম। জামতাড়া নামের সাথে  মিল তাই জাম গাছ টা নিলাম।
বিদ্যাসাগর মহাশয়, লিটল ম্যাগাজিন, বাংলা ভাষা,স্থানীয় ভাষা, নিয়ে আলোচনা, স্মৃতি পুরস্কার প্রদান,বই প্রকাশ,ও গুণী জনদের আলোচনায় ঋদ্ধ  হলাম। আমাদের সেদিন ফেরার পালা তাই সমাপ্তি অনুষ্ঠানে থাকতে পারিনি।দুপুর ১.১৫ নাগাদ আমার ছেলে  শুভদ্বীপ গাড়ী নিয়ে পৌঁছে গেল আমাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য।
মন ভারাক্রান্ত, তিনটে দিন একসাথে কাটালাম ছেড়ে যেতে তো কষ্ট  হবে ই। এ যেন  এক আত্মিক বন্ধন। ছোটো খাটো  ত্রুটি  ভাষিয়ে  নিয়ে গেল  আন্তরিকতার  প্লাবনে। অসংখ্য  ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই কমিটির সকল  সদস্য দের, অশোক কুমার মন্ডল, অরূপ কুমার মৈত্র, বাপী পাত্র, ড : চঞ্চল দাদা, পার্থ কুমার বোস, কাঞ্চন গোপাল মন্ডল, চঞ্চল রায়, লেরেব খান, বিশ্বনাথ সিংহ, ভোলারাম দাদা এবং  সেন্ট এ্যন্হনি স্কুলের সকল  শিক্ষিকা, শিক্ষক দের, দূর্গা দাস ভান্ডারী দাদাকে সপরিবারে জানাই কৃতজ্ঞতা। ওনাদের দেখে  মনে হচ্ছিল  ওনার বাড়ির মেয়ের বিয়ে, আমরা সবাই যেন বর যাত্রী, আমাদের খুঁটিনাটি বিশয় ও নজর, মেলায় আগত  কারো কোনো অসুবিধা  হলেই কর্মকর্তারা হাজির, কারো যেন  কোনো কষ্ট  না হয়, সেদিকে সবার  নজর। ভগবানের  কাছে  প্রার্থনা করি আপনারা আনন্দে থাকুন, সকল  প্রতিবন্ধকতা জয় করুন, নিজেদের লক্ষ্যে অবিচল থাকুন। আমরা আপনাদের পাশে আছি , ডাক দিলেই চলে  আসবো, আবার দেখা  হবে, জামতাড়া কুখ্যাত নাম ভাসিয়ে ইতিহাস রচনা  করবে  এই বিদ্যাসাগর লিটল ম্যাগাজিন সহ গ্রন্হমেলা।  হয়তো  সবার  নাম লিখতে ভুল হতে  পারে ক্ষমা প্রার্থী। প্রণাম জানাই স্যার দীপক কুমার সেন ও স্যার কাশীনাথ চ্যাটার্জী মহাশয়কে এতো সুন্দর জায়গায় এতো ভালো মনের  মানুষ দের সঙ্গে  পরিচয় করানোর জন্য।
গান দরিয়ার পক্ষ্যে
               শাস্বতী ব্যানার্জী: বাউল ও লোক সংগীত শিল্পী:মুঠো ফোন,,৭০০১৪৬৯০৭২


বর্ণালী গুপ্ত :জামতাড়া:
জামতাড়া ডায়েরি 
গত ২৭,২৮,২৯,৩০ জুলাই সাঁওতাল  পরগণা  জেলার জামতাড়ায় সেন্ট এন্থনী স্কুলের প্রাঙ্গনে পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর  লিটল ম্যাগাজিন সহ গ্রন্থমেলা সাড়ম্বরে  অনুষ্ঠিত হোল। মেলাকমিটির অক্লান্ত পরিশ্রম, উৎসাহ তা সত্যিই উৎসবে পরিণত  করেছিল।  
২৭তারিখ সন্ধে থেকেই সাজো সাজো রব, মুখরিত  ছিল প্রাঙ্গন।  প্রায় ৭০জন প্রতিনিধি, দেশের বিভিন্ন  প্রান্ত থেকে উপস্থিত ছিলেন।  কানপুর,লক্ষ্ণৌ আগরতলা,ত্রিপুরা,কলকাতা,পুর্নিয়া,ভাগলপুর,পাটনা,আসানসোল,রাঁচি, ধানবাদ,বিরভুম ছাড়াও পাশ্ববর্তী  দেশ বাংলাদেশের মোট ৬জন প্রতিনিধি এই সম্মেলনে  যোগদান করেন এবং প্রতিটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন।  
২৮তারিখ সকাল বেলায় একটি বর্ণাঢ্য প্রভাত ফেরির আয়োজন করা হয়।   এন্থনি স্কুলের প্রায় ৫০০ ছাত্র ছাত্রী বিভিন্ন রাজ্যের বেশভূষায় সজ্জিত  ছিল। তাছাড়া আরও প্রায় ২০০জন মানুষ স্থানীয় ও প্রতিনিধি সহ  ব্যান্ড বাদ্যের সাথে   নানা মনিষীর ছবি দেওয়া ট্যাবলো সাজিয়ে  সারা শহর পরিক্রমা করা হয়।  শহরের প্রতিটি মনিষীর  প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করা হয়।  সিধু,কানু,কুঁউর সিংহ, বিরসা মুন্ডা, নেতাজী,আম্বেদকর,গাঁধীজী, প্রভৃতি।  সারা শহরের মানুষ অবাক, বিস্ময়ে এই র‍্যালি দেখে  অভিভূত হয়ে যায়। 
 মেলার উব্দোধন কমিটির অধ্যক্ষ ড:দীপক কুমার সেন সহ এন্থনি স্কুলের অধ্যক্ষ দুর্গাদাস  ভান্ডারি, মেলা কমিটির উপদেষ্টা ড:কাশীনাথ চ্যাটার্জি, বাংলাদেশের প্রতিনিধিগণ ও আরও অনেকে প্রদীপ জ্বালিয়ে স্বাগত ভাষণে সকলকে অভ্যর্থনা জানান। নানান কর্মসূচি  এবং খুবই রুচিসম্পন্ন  নৃত্যানুষ্ঠানের  মাধমে মেলার শুভ সূচনা হয়ে যায়।  
২৯জুলাই অর্থাৎ  ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর  মহাশয়ের ১৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী  উপলক্ষে জামতাড়া থেকে কর্মাটাঁড়ের উদ্দেশ্যে  প্রায় ১৫০জন  যাত্রা করেন।  বিদ্যাসাগরের টানা,১৭বছরের কর্মভূমি  কর্মাটাঁড়ের নন্দনকানন তাঁর অতি প্রিয় বাসস্থানের পরিদর্শন ও আবক্ষমূর্তিতে মাল্যদান সেরে সকলে অপার আনন্দ লাভ করে।  জামতাড়া মেলায়  আসা যেন সত্যিই সার্থক হয়।  
ওনার ব্যবহৃত পালঙ্কখানি সযত্নে রাখা আছে।  বিহার বাঙালি  সমিতি ও স্থানীয়  মানুষজনের   সহযোগিতায় আজ নন্দনকানন সুরক্ষিত।  ভাবলেই শিহরণ  জাগে একসময় এই জঙ্গল, অনুন্নত, আদিবাসী অধ্যুষিত  এলাকার মানুষকে তিনি প্রতিদিন সন্ধে বেলায় পড়াতেন।  হয়ত ভারতের প্রথম নৈশ বিদ্যালয় ছিল সেটি।  
প্রত্যেকের একবার অধুনা বিদ্যাসাগর নামক স্টেশনটিতে নেমে পড়া,উচিত।সকলের  প্রাত:রাশের ব্যবস্থা করেন মেলা কমিটি নন্দনকাননেই।  
জামতাড়া ফিরে এসে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন সেদিন চড়ুই ভাতির মত খিচুড়ি, লাবড়া, আমড়ার চাটনি সহযোগে এক আলাদাই আনন্দ ছিল। বিকেল থেকে বিদ্যাসাগর মহাশয়কে নিয়ে নানান আলোচনা, এবং কলকাতা থেকে আগত রাহুল দেব মন্ডল ও অনসূয়া মন্ডলের মনোরম ভারতনাট্যম নৃত্যানুষ্ঠান  সকলকে মোহিত করে দেয়।  
তারপর বীরভূমের শাশ্বতী  ব্যানার্জির বাউল গানে সকলেই তাল মেলান।  
৩০জুলাই  সমগ্র আঞ্চলিক ভাষার প্রতিনিধিরা এসে উপস্থিত হন।  যা কিনা মেলার মূখ্য উদ্দেশ্য  ছিল।  কুরুক,মালটো,সাঁওতালি, হিন্দি,উর্দু,প্রতিটি ভাষার আলোচনা, সমস্যা তুলে ধরেন।  কমিটির পক্ষ থেকে একটি নি:শুল্ক চিকিৎসা সেবার ও,আয়োজন করা হয়।  
সব মিলিয়ে মেলা কমিটি সবরকম ভাবে এই সমারোহকে সাফল্যমণ্ডিত  করার সসম্পূর্ণ  প্রচেষ্টা করেন।  
সকল প্রতিনিধি ও অতিথিদের  উত্তরীয়,স্মারক, নানা সামগ্রী  দিয়ে সম্মানিত করা হয়। 
সন্ধেটি জমজমাট হয় স্থানীয়  শিল্পী ও পার্শ্ববর্তী  শহর মিহিজাম থেকে আগত শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর উপস্থাপনায়।  
এককথায় লিটল ম্যাগাজিন  মেলা 'লিটল' নয় বৃহদাকারে সম্পন্ন হয়।  সঙ্গে ছিল হস্ত শিল্প মেলা। সব মিলিয়ে একেবারে  জমজমাট। 

মেলা কমিটি সহ সমগ্র ভান্ডারি পরিবারের আন্তরিকতা,আতিথেয়তা  অবশ্যই প্রশংসনীয়। সকলকে এমন আপন করে নিয়েছিলেন যে আজও তার রেশ রয়ে গেছে। সাঁওতাল  পরগণার ছোট্ট শহর জামতাড়া ইতিহাস রচনা  করল।  সকলেই আপ্লুত,মুগ্ধ। 

সকলের নাম দিতে না পারায় দু:খিত।  ক্ষমাপ্রার্থী। আগামী দিনে আপনারা যে অনেক বড় করে এবং আরও সুন্দর করে গ্রন্থ মেলা করবেন আমি নিশ্চিত।


০১:০৮:২০২৩

0 Comments