“বিশ্বজিৎ নন্দীর কবিতা পাঠকের নিকট হয়ে উঠবে আত্মক্ষরণের আরোগ্যনিকেতন”গোবিন্দ ধর
“বিশ্বজিৎ নন্দীর কবিতা পাঠকের নিকট হয়ে উঠবে আত্মক্ষরণের আরোগ্যনিকেতন”
গোবিন্দ ধর
গারো ভাষায় গানের একটা কথা আছে সেটা হলো- নাঙ্গ রেরে গসেরঙ... অর্থাৎ আহা কি সুন্দর কি ভালো.. কবি বিশ্বজিৎ নন্দীর কবিতা নিয়ে , বিশ্বজিৎ নন্দীর সাহিত্য জীবন সম্পর্কে এর চেয়ে বেশি কিছু বলার স্পর্ধা আদৌ আমার নেই। তবুও কবির : 'ডুরামা নন্দন' কবিতাটি এখানে পুনঃপাঠ করতে তুলে দিলাম-
ডুরামা নন্দন
আরবেলা পাহাড় তলে
মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে শব্দ বের করি
হুম তানা না-না হুম তানা না-নায়
শব্দ জুড়ে জুড়ে ওয়ানগ্লা"র গান
নাঙনি জিকপা দিনটাং
আঙনি জিকপা দিনটাং আর
মাদল বাদনে একমুঠো জঙ্গল-ঘ্রাণ
আমি ভালবাসা বিলিয়ে দিই
পাহাড়ের আনাচে কানাচে
জঙ্গল ফেরত উগ্রপন্থীদের
স্বাগত জানাতে
ঝোপের আড়ালে আবার ফিরে - আসে
গানের লাইন
ফিরে আসে রবীন্দ্রনাথ
ফিরে আসে নাঙ্গ রেরে গসেরঙ
দেখি এই পাহাড়ে পাহাড়ের প্রতিটি খোলিতে
জন্মান্তর ধরে শঙ্খার ঝঞ্চাবাত
মেঘালয়ের তুরায় কবির নিবাস। সে অঞ্চলের মানুষের ভাষা হিন্দি ইংরেজি বাংলা মিশেলে। সে এক অপূর্ব যাপন বলা যায় তুরাবাসী কবি বিশ্বজিৎ নন্দীর। তাঁর কবিতায় সে অঞ্চলের শব্দের বুননকৌশল তাঁকে বাংলাসাহিত্যে উত্তরপূর্বাঞ্চলে অন্যরকম ভাবে চিহ্নিত করে। তিনিই অকপটে তাই বলতে পারেন: কিছু কিছু ব্যাথা বেদনা মনে জেগে থাকে কিন্তু ভুলে থাকতে হয় নইলে কষ্ট পেতে হয়। আর একটা কথা যারা ক্ষত দেয় তারাও জীবনেও কোন না কোন সময় ক্ষত হবেই হবে এটা আমি বিশ্বাস করি।'
আমার বিশ্বাস কবির কবিতার সাথে আমার নাড়ির যোগ আছে। সেজন্যে তাঁকে শুধু নয় তাঁর কবিতাকেও ভালোবেসে ফেলেছি। আমি আমার আত্মক্ষরণ যে ভাষায় লিখি বিশ্বজিৎ নন্দী হয়তো গারোমিশেলে আত্মার সেই ক্ষরণই লিখেন। তাই তাঁর কবিতা বহু বহু কবিতা পাঠকের নিকট হয়ে উঠবে আত্মক্ষরণের আরোগ্যনিকেতন। কবিও সেই আশাবাদ জাগাতেই লেখেন-
'তবু ভাবনায় বাসা বাঁধি
বিষ মেশানো সময় সব
যাবে ধুয়ে মুছে
পৃথিবীর উঠোনে আবার বসবে মজলিস।'
0 Comments