আমার অনুভুতিতে কবি গোবিন্দ ধর || ভুলুকুমার দেববর্মা
আমার অনুভুতিতে কবি গোবিন্দ ধর
ভুলুকুমার দেববর্মা
আজ পঞ্চান্নে পদার্পণ করলেন কবি তথা স্রোত প্রকাশনার কর্ণধার গোবিন্দ ধর। কবির সাথে সহকর্মী হিসাবে পরিচয় ও তার সান্নিধ্যে থেকে সাহিত্যচর্চা করার সুযোগ্য বয়স খুবই স্বল্প সময়ে, মাত্র পাঁচ বছর। একেবারেই শিশু বলা যায়। এই সময়ে গোবিন্দ ধরকে কবি হিসাবে তার ভাবনা, এবং তার সৃষ্ট সাহিত্য জগতে কিয়দংশই পরিচিতি লাভ করতে সক্ষম হয়েছি।
আমার অনুভুতিতে তিনি তার বুকে সাহিত্য সংস্কৃতির একটা ভারী প্রস্তরের অদৃশ্য মোড়ক ঝুলিয়ে রাখেন। যার ভেতরে বিরাজমান কোমল হৃদয়ে সাহিত্য সৃষ্টির পাঠাগারের অট্টালিকা। সেখান থেকেই জম্ম স্রোত, বইবাড়ি, অন্যপাঠ, খুমতৈয়া, মনুতৈসা, স্বরচিহ্ন, পান্ডুলিপি এবং স্বরবর্ণের মত লিটল ম্যাগাজিন ও গ্রন্থ প্রকাশনা বৃক্ষ আর প্রকাশনা মঞ্চ নামক সংগঠন। যার প্রতিটি রোম রোম সাহিত্যের পঙক্তিমালায় সম্পৃক্ত। ক্লান্তিতেও বাষ্পমোচনে ক্ষরিত বিন্দু বিন্দু ঘর্ম সাহিত্যে নিজস্ব ভৌগোলিক সীমার দিকে সঞ্চারিত হয়। এ কারণেই হয়ত মনুনদী ও দেওনদীর সঙ্গমস্থলের সাথে সাথে ত্রিপুরার প্রায় সমস্ত নদী-ছড়ার বলা ভাষায় তিনি তার প্রকাশনার মাধ্যমে সাহিত্যে সমৃদ্ধ হতে পেরেছেন।
কখনও চৌমাথার অবহেলিত কোন মহান ব্যক্তির মর্মর মূর্তির অন্তরের ব্যথা বেদনার অনুভুতি তার কবিতায় স্থান পায়। পৃথিবীর প্রশান্ত মহাসাগরের দানবী বাড়মোড়া ট্রায়েঙ্গেল বা বইয়ের শত শত মূল্যবান পাতা বিনষ্টকারী শত্রুর নাম কবিতার পঙক্তি হিসাবে খুঁজে পান। এমনকি সহকর্মীর মত প্রিয়জনের শবদাহের দহন জ্বালা আর আর সমাজের গরিবের টানাপোড়েনের অনুভুতিকে কবিতা রূপে জন্ম দেন।
ছোটবেলার খেলা "গোল্লাছুট" এর ছবি তার ছড়ায় ফুটিয়ে তুলেন। খুমতৈয়ার মত তিপ্রাসাদের জনপ্রিয় ফুলের পাপড়ি হাতে ষ্পৰ্শ করেন আর তার সুমিষ্ট গন্ধ পথে পথে বিলিয়ে দিতে কার্পণ্য বোধ করেন না। সময়ে উতঙ্গ পাহাড়ের সুদৃশ্য জুমের ছবি আঁকেন। জুম পোড়ার ছাই শরীরে মাখেন।শুন্যে ভাসমান ছাইয়ের টুকরোগুরিকে ফিনিক্স পাখি রূপে দেখেন। তিনি এক কথায় দ্রোহবীজ দিয়ে প্রলেপ দেওয়া এক দর্পণ।
ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, পঞ্চান্নের কবি গোবিন্দ ধর আরও দীর্ঘ বছর সাহিত্যে তার নিজস্ব ভৌগোলিক সীমা আঁকার কর্মে সফল হউন।
0 Comments